০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`


আফগানিস্তানে নির্বাচন ও ভোটরঙ্গ

-

চলতি বছর আফগানিস্তানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ও সংসদ নির্বাচনের কারণে, উত্তপ্ত এক বছর অতিবাহিত হচ্ছে। সে সাথে শান্তি আলোচনা, সে আলোচনা স্থগিত রাখা ও ফের আলোচনা এশিয়ার রাজনৈতিক বলয়কে সরগরম করে রেখেছে। তালেবানরা হামলা চালু রাখায় এবং শান্তি আলোচনা চলাকালে তাদের হামলায় দু’জন আমেরিকান সেনা নিহত হওয়ায় ট্রাম্প ক্ষুব্ধ হয়ে বৈঠকে বসার ও চুক্তি করার কর্মসূচি চূড়ান্তভাবে বাতিল করে দিয়েছেন। সে আলোচনার কারণেই নির্বাচন পিছিয়ে সেপ্টেম্বরে আনা হয়েছিল, আর সেপ্টেম্বর ২০১৯ সালে শান্তি চুক্তি হওয়ার কর্মসূচিও স্থির করা হয়। শান্তি চুক্তির আগে তালেবানরা কোনো নির্বাচন চায়নি এবং বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও তারা আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গণির সাথে বৈঠকে বসতে চায়নি। আশরাফ গণিকে তারা বশংবদ মনে করে। গণি সরকার বলেছে, তালেবানরা চাইলে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে। উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ১৮ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করছেন। ধারণা করা হচ্ছে আশরাফ গণির সাথে লড়াই হবে আবদুল্লাহ আবদুল্লাহর সাথে।

তালেবানরা অংশ না নেয়ায় তাদের ছাড়াই নির্বাচন হয়েছে। আগেও হয়েছিল আশরাফ গণি তালেবানদের তোয়াক্কা করেন না, তালেবানরাও গণিকে ‘দু’পয়সার মূল্য’ দেয় না। তালেবানরা গত নির্বাচনে বিভিন্ন জায়গায় বাধা দিয়েছে, গোলাগুলি হয়েছে, কোথাও কোথাও ভোট হতে পারেনি। এখন অবস্থা কিছুটা ভিন্ন মনে করা হচ্ছে; তালেবানরা আলোচনায় অংশ নিলে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে। তালেবানরা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন প্রতিনিয়ত তারা সরকারি বাহিনী ও সরকারি লোকজনের ওপর হামলা করছে। সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তারা অহরহ তালেবানদের গোলাগুলির শিকার। দিন দিন তালেবানদের আক্রমণ কঠিনতর হচ্ছে। এই কলামে লিখেছিলাম, শান্তি চুক্তির ধরন যে রকমই হোক, যুক্তরাষ্ট্র তাদের কিছু সৈন্য কাবুলে রাখবে। তাদের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শুরু থেকে এ কথা বলে আসছেন। তালেবান এবং তাদের সাথীরা হয়তো মনে করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, সব সৈন্য সেপ্টেম্বরের মধ্যেই প্রত্যাহার করবে। তালেবান য্ক্তুরাষ্ট্র আলোচনা বাতিল হওয়ার পর কিছু সময় না নিয়েই, কোনো প্রস্তুতি না নিয়েই তালেবান নেতারা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের কাছে চলে যান, চীনের সাথেও আলোচনা চালিয়েছেন। পশ্চিম থেকে মুখ ঘুরিয়ে সোজা পূর্বে। আমেরিকার সাথে বিরোধ হলেই যে চীন-রাশিয়া সাহায্য নিয়ে ছুটে আসবে এমন নয়। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বড় শক্তিগুলো অনেক নিয়মকানুন মেনে চলে। এখন চীন যুদ্ধের ময়দানে অবতীর্ণ হচ্ছে না, আবার রাশিয়া- যারা একসময় তালেবানদের সাথে যুদ্ধ করেছিল সাবধানে ঘুঁটি চালাচ্ছে। কিছু ছাড় দিলে হয়তো এতদিনে শান্তি চুক্তি হয়ে যেত। ৮০ শতাংশ সাফল্য সত্ত্বেও তালেবানরা সুযোগ হাতছাড়া করলেন বলে অনেকে মনে করেন। শান্তি চুক্তির খসড়া লেখা শেষ, এরপরই ক্যাম্প ডেভিডে ট্রাম্পের সামনে উভয় পক্ষ স্বাক্ষর করার কথা। কিন্তু তালেবান আক্রমণে তা পণ্ড হয়ে গেল। পুতিনের কাছে আশ্রয় নেয়ায় আমেরিকার আবার ফিরে আসার সম্ভাবনাও বন্ধ হয়ে গেল। আফগান নির্বাচনে যখন দেখা গেল, ভোটকেন্দ্রে লোকজন নেই, তখন যুক্তরাষ্ট্র আবারো ধরে নিলো আশরাফ গণি, আবদুল্লাহ, কারজাই, হেকমতিয়ার কারোরই কাম্য জনসমর্থন নেই। কাবুলের রাজনীতি ও ক্ষমতা ধরে রাখতে হলে এখন তালেবানরাই একমাত্র শক্তি। তাই যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে ব্যবহার করে ‘মৃত’ শান্তি আলোচনাকে আবার শুরু করাতে চাচ্ছে।

আফগান জনগণ ও প্রার্থীরা ভেবেছিল ধার্য করা তারিখে এবার আদৌ ভোট হবে কি না। প্রার্থী হানিফ আতমার ও ইব্রাহিম আলোকজাই তাদের সব প্রচারণা বন্ধ করে নিজেদের লোকজনকে ঘরে বসে থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তালেবানরাও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে এটি এক প্রতারণা, পশ্চিমা ফন্দি। সরকারকেও আগের মতো হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে। তালেবানরা সাধারণ লোকজনকে নির্বাচন বর্জন করতে বলেছিল। দূরবর্তী অনেক পোলিং স্টেশনে প্রাণের ভয়ে লোকজন যায়নি। আর যেসব এলাকা তালেবানদের দখলে ও নিয়ন্ত্রণে আছে সেখানে নির্বাচন করার প্রশ্নই আসে না।

সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণে দেখা গেছে, কাবুল সরকার নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়নি। প্রার্থীরা এলাকায় গিয়ে নিরাপত্তাজনিত কারণে তাদের চিন্তাভাবনা ও পরিকল্পনা জনগণের কাছে পৌঁছাতে পারেননি। প্রার্থীদের জন্য সরকার নিরাপত্তারক্ষীসহ সাঁজোয়া যান পাঠানোর চেষ্টা করেছিল। তবে তা নির্দিষ্ট কিছু প্রার্থীর জন্য মাত্র। অনেক প্রার্থী জানালেন, এরকম কোনো সহায়তা তারা পাননি। তালেবানরা সরকারের সমকক্ষ এক শক্তি- এটাই আফগানিস্তানের বর্তমান বাস্তবতা।

নির্বাচনে স্বচ্ছতা নিয়েও মানুষের অনেক প্রশ্ন। সরকার পক্ষ সমর্থন আদায়ে বড় বড় কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে। প্রার্থী শাহাব হাকিমী অভিযোগ করেছেন সরকার নির্বাচনে প্রাদেশিক কমিশনার নিয়োগ দিয়েছেন যারা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করবেন। এসব লোক সরকারের পক্ষে কাজ করবে- এমনই ধারণা প্রার্থীদের। আগের নির্বাচনে বাজে ব্যবস্থাপনা ও প্রতারণার কারণে অনেকে এখনো আতঙ্কিত ও অসন্তুষ্ট। নির্বাচন কমিশন প্রতারণা করেছে এমন অভিযোগ আগেও ছিল। খোদ প্রেসিডেন্ট আশরাফ গণিও আগের নির্বাচন নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না বলে জানা যায়। আগের ওইসব দুর্ভাবনা এবার সাধারণ ও মধ্যপন্থীদের মধ্যে বিরূপ প্রভাব ফেলে। নির্বাচন কমিশনের অদক্ষতাকে আশরাফ গণিও সমালোচনা করেছেন। অনেকে শঙ্কিত গত ২০১৪ সালের নির্বাচনের মতো এবারের নির্বাচনও একই পথে হেঁটেছে। সরকার বা নির্বাচন কমিশন অভিজ্ঞতা থেকে কিছু শেখার চেষ্টা করেনি। গতবার মারামারির কারণে মার্কিন সেক্রেটারি অব স্টেট জন কেরির মধ্যস্থতায় সরকার গঠিত হয়েছিল, এবার মাইক পম্পেও তা করবেন কি না বোঝা যাচ্ছে না। এসবের সাথে যোগ হয়েছে বায়োমেট্রিক ডিভাইস যথাসময়ে কাজ না করা, যথাসময়ে মালামাল না পৌঁছা, কেন্দ্রে ভোটার তালিকার সঙ্কট, কর্মকর্তাদের অদক্ষতা ইত্যাদি। এ অবস্থায় আফগানস্তানে গণতন্ত্রে উত্তরণে অনেক বাধার সম্মুখীন, যা সহজে দূর করা সম্ভব নয়।

আফগানিস্তান রাজনৈতিক রিসোর্সগুলো সঠিকভাবে বণ্টিত হয়নি। আয়, সম্পদ, স্ট্যাটাস, সামরিক শক্তি ব্যবস্থাপনা নিয়ে নেতাদের মধ্যে অনেক অসন্তোষ। গণতন্ত্রের জন্য বিষয়গুলো খুব প্রয়োজন। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের হিসাব মতে গত দশকের চেয়ে দারিদ্র্য উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে যা ৫৫ শতাংশ, জনসংখ্যার অনুপাতে। এত মানুষ জাতীয় দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করছে। চাকরিরত আফগানদের ৮০ শতাংশ জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে। তরুণ আফগানদের ৪২ শতাংশেরই চাকরি নেই, শিক্ষা নেই; কাজকর্ম করার কোনো প্রশিক্ষণ নেই। অন্যান্য সমস্যার মধ্যে সুশাসন একটি বড় সমস্যা।

পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা তালেবান ও হক্কানি নেটওয়ার্ককে সামরিক ও গোয়েন্দা তথ্য দিয়ে সহায়তা করছে বলে অভিযোগ আছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পাকিস্তানের সহায়তা ছাড়া, এত দীর্ঘ সময় ধরে যুদ্ধ করে তালেবানদের টিকে থাকার কথা নয়। প্রায় ক্ষেত্রে আফগান সরকারের গোয়েন্দা বিভাগ সঠিকভাবে ও দক্ষতার সাথে গোয়েন্দা তৎপরতা চালাতে পারেনি। সরকারের মধ্যে দুর্নীতি চরমে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল আফগানিস্তানকে সূচকের তলানিতে ফেলেছে, ২০১৭ সালের ইনডেক্সে যা দেখা যায়। গণতন্ত্র এখন মৃত্যুশয্যায়। সরকার পরিবর্তনের ধাপগুলো যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনামাফিক হয়েছে; আফগানিস্তানের ভেতর থেকে কিছু সৃষ্টি হয়নি। ২০০১ সাল থেকে আমেরিকান পলিসিমেকাররাই ঠিক করে দিয়েছেন কে প্রেসিডেন্ট হবেন। জনগণের ভোটের চেয়ে পলিসিমেকারদের খুশি করার প্রতিযোগিতা প্রশাসনে ও নেতাদের মধ্যে বেশি লক্ষণীয়।

কোনো কোনো প্রাদেশিক গভর্নরকে কোনো নির্দিষ্ট প্রার্থীর পক্ষে ‘ইঞ্জিনিয়ারিং’ করার নির্দেশ দেয়া হয়। নাঈম আইয়ুবজাদা, টিফার (TEFA) প্রধান মিডিয়ায় বলেন, ‘পাকতিয়া প্রদেশের গভর্নরকে এক প্রার্থীর পক্ষে ৩৫০টি বেশি ভোট কাস্ট করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। সংসদ নির্বাচনে পুল-ই-আলম এলাকার কেন্দ্রে এক হাজার ১১৮টি ভোট পড়েছিল, এবারে ১৩ হাজার ৬০০ ব্যালট পেপার প্রেরণ করা হয়েছে সেখানে।

সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই এপিকে বলেছেন, এভাবে নির্বাচনে দেশ আরো অন্ধকারে পতিত হবে। কার্যত এটাই হয়েছে। তিনি বলেন ‘শান্তি চুক্তি’ দরকার, নির্বাচন নয়।’ তিনিও একসময় মার্কিনিদের প্রিয়পাত্র ছিলেন। পরে অনির্দিষ্টকাল মার্কিন সেনা রাখার কাগজে সই না করায় তাকে বিদায় নিতে হয় এবং আশরাফ গণি উঠে আসেন প্রেসিডেন্ট পদে। কারজাই বলেন আশরাফ গণির কারণে শান্তি চুক্তিও হবে না, সুষ্ঠু নির্বাচনও হবে না।

২৮ সেপ্টেম্বর যথারীতি ভোট হয়েছে মর্মে বিবিসি জানায়। আগের রাতেও কোনো কোনো ভোটকেন্দ্রে সরঞ্জাম পৌঁছায়নি। দেশব্যাপী প্রায় পাঁচ হাজার ভোটকেন্দ্রে এ ভোট গ্রহণ শুরু হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৭২ হাজার সৈন্য মোতায়েন করা হয়েছে।

নির্বাচনে আশরাফ গণি ও আবদুল্লাহ আবদুল্লাহর মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে। আবদুল্লাহ বলেন, দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার দরকার নেই। গণির রানিং মেট আমরুল্লাহ সালেহ ঘোষণা দিয়েছেন ৬০-৭০ শতাংশ ভোটার তাদের ভোট দিয়েছে। ৭ নভেম্বরের আগে পরিপূর্ণ ফলাফল পাওয়া যাবে না। আবদুল্লাহ ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি শুধু বায়োমেট্রিক ভোটই হিসেবে নেবেন। এ পদ্ধতিতে ভোটার ভেরিফিকেশনের বিধান আছে।

৯০ লাখ ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন মাত্র ১০ লাখ। ১৫ জনের মতো নির্বাচনী কর্মকর্তাকে কথা না শোনার দরুণ তালেবানরা অপহরণ করেছে এবং ১১ জনকে পিটিয়ে আধামরা করে ফেলে। তালেবানরা বলে, ‘বিদেশ থেকে আমদানি করা নিয়ম দিয়ে নির্বাচন হবে না।’ বিবিসি সূত্রে জানা গেছে, আফগানিস্তানে গড়ে প্রতিদিন ৭৪ জন নিহত হচ্ছেন।

প্রতিপক্ষের কাছে হেকমতিয়ার যিনি ‘কাবুলের কসাই’ নামে, পরিচিত, তিনিও নির্বাচনে সরগরম। তিনি ক্ষমতাসীন আশরাফ গণি-আবদুল্লাহ টিমকে ‘বাজে’ বলে মন্তব্য করেছেন। ভোটার না থাকায় আসলে এই নির্বাচন অর্থহীন। গুলবুদিন হেকমতিয়ার কাবুলের ১৫টি জিহাদি সংগঠনের শক্তিশালী জোট হিজব-ই-ইসলামীর নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। কেন্দ্রে ভোটার না আসাকে তিনি ‘লজ্জাজনক’ বলে অভিহিত করেছেন। এবার কম ভোটারের উপস্থিতি আবার জানান দিয়ে গেল তালেবানরা কত শক্তিশালী। তাই যুক্তরাষ্ট্রকে পরিত্যক্ত শান্তি আলোচনাকে আবার চালু করার উদ্যোগ নিতে হয়েছে।

তালেবানরা বলেছে, কোনো ‘ভায়োলেন্স’ করবে না; তবে তারা নির্বাচন বর্জন করতেও ডাক দিয়েছিল তাদের মতে, নির্বাচনটা যুক্তরাষ্ট্রের একটি কৌশল যাতে পুতুল সরকার ক্ষমতায় থেকে তাদের সহায়তা করতে পারে; সোজা কথায়, আমেরিকার স্বার্থ রক্ষার কাজে নিজেকে নিয়োজিত করতে পারে।

নির্বাচনের দুই দিন পরেও আফগানিস্তানের ‘ইনডিপেন্ডেন্ট ইলেকশন কমিশন’ নিশ্চিত করতে পারেনি যে, নির্বাচনের দিনে আসলে কতগুলো ভোটকেন্দ্র খোলা ছিল এবং কতজন ভোটার ভোট দিয়েছেন। এর সাথে রেকর্ডসংখ্যক কম ভোটারের ভোট দেয়ার বাস্তবতা তো রয়েছেই।

প্রার্থীরা, বিশেষ করে গণি ও আবদুল্লাহ এরই মধ্যে নিজেদের বিজয়ী বলে দাবি করছেন। এতেই বোঝা যায়, নির্বাচন ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর অদক্ষতা কত বেশি প্রকট। নির্বাচনের মাত্র কিছু দিন আগে, আফগানিস্তানের রাজনৈতিক বিরোধী পক্ষ কাবুলে জড়ো হয়েছিল এবং তারা এবারের নির্বাচন বাতিল করে শান্তি প্রক্রিয়ার ওপর মনোযোগ দেয়ার জন্য সরকারকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন। এই জমায়েতে শুধু সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই-ই ছিলেন না, সাবেক মুজাহিদিন ও সাবেক তালেবান নেতারাও হাজির ছিলেন। বিবৃতিতে তারা বলেছেন, এ রকম একটা পরিস্থিতিতে নির্বাচন হলে সেটা দেশকে আরো গভীর রাজনৈতিক ও সামাজিক সঙ্কটের দিকে ঠেলে দেবে। তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র-তালেবান আলোচনার প্রক্রিয়া যত দ্রুত সম্ভব আবার শুরু করা উচিত এবং আফগানিস্তানের শান্তির ব্যাপারে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ঐকমত্যও সৃষ্টি হওয়া দরকার। প্রহসনের নির্বাচন নিয়ে সময় ক্ষেপণ করা উচিত নয়।’

লেখক : অবসরপ্রাপ্ত যুগ্মসচিব ও গ্রন্থকার


আরো সংবাদ



premium cement