০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ভিক্ষাবৃত্তি রোধে এনজিওর কর্মতৎপরতা নেই কেন?

ভিক্ষাবৃত্তি রোধে এনজিওর কর্মতৎপরতা নেই কেন? - ছবি : সংগ্রহ

ভিক্ষাবৃত্তি একটি মারাত্মক সামাজিক সমস্যা। যেকোনো সামাজিক সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব সমাজের পাশাপাশি সরকারের ওপর বর্তায়। আমাদের দেশে ভিক্ষাবৃত্তি কিছু লোকের পেশায় পরিণত হয়েছে। বর্তমানে এ পেশাটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। সিন্ডিকেটের কর্তৃত্বে রয়েছে প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তি। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিকলাঙ্গ, শিশু-কিশোরসহ হতদরিদ্র ও বয়োবৃদ্ধ নারী-পুরুষ রাজধানীতে এনে ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত করেছে কয়েকটি সিন্ডিকেট। এসব সিন্ডিকেটের সদস্য না হয়ে কেউ ভিক্ষা করতে পারে না। এরা অবুঝ শিশু ও শারীরিক প্রতিন্ধীদের কাজে লাগিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে বিপুল পরিমাণ টাকা। এমনকি সুস্থ মানুষকেও কৃত্রিম উপায়ে প্রতিবন্ধিত্বের কবলে ফেলে ভিক্ষাবাণিজ্য করছে চক্রটি। রাজধানীর অভিজাত এলাকাসহ ব্যস্ততম প্রধান সড়ক ও অলিগলিতে সরকারি হিসেবে ভিক্ষুকের সংখ্যা ৫০ হাজার বলা হলেও বিভিন্ন গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, ভিক্ষুকের সংখ্যা তিন লক্ষাধিক। সমাজকল্যাণ অধিদফতরের মতে, সমগ্র দেশে ভিক্ষুক রয়েছে সাত লাখেরও অধিক। অনুসন্ধান থেকে আরো জানা যায়, রাজধানীতে প্রতিদিন প্রায় ২০ কোটি টাকার ভিক্ষাবাণিজ্য হয়ে থাকে। এ হিসাব মতে, প্রতি মাসে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ৬০০ কোটি টাকা। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও এলাকাভিত্তিক প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় ভিক্ষুক সিন্ডিকেটের সংগঠিত চক্রটি ভিক্ষাবাণিজ্যের কার্যক্রম পরিচালনা করে।

ঢাকা শহরের ব্যস্ততম কিছু সড়ক ও অভিজাত এলাকা ‘ভিক্ষুকমুক্ত’ মর্মে কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে ঘোষণা দিয়ে লিখিত বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হলেও পরবর্তী সময়ে দেখা গেছে, ভিক্ষুকেরা আগের মতো ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত। বিভিন্ন সড়কের ব্যস্ততম মোড়ে দেখা যায়, তারা নির্বিঘ্নে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের সামনেই ভিক্ষাবৃত্তির চালিয়ে যাচ্ছে। এসব পথ ধরে যারা নিয়মিত গাড়িতে চলাচল করেন, তাদের মধ্যে এমন একজনও পাওয়া যাবে না যিনি গাড়ির দরজার গ্লাসে ভিক্ষুকের টোকা দেয়ার শব্দ শুনেননি। ঢাকা শহরে ভিক্ষা করে, এমন ভিক্ষুকদের অধিকাংশই ভিক্ষালব্ধ আয়ের বড় অংশ বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় অথবা সঞ্চয় করে। এ অর্থের পরিমাণ মাসে ২৫-৩০ হাজার টাকার কম নয়। ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত ও কর্মক্ষম- এমন অনেককে বাসায় গৃহস্থালি কাজে পাঁচ থেকে আট হাজার টাকা বেতনের প্রস্তাব দেয়া হলে তারা সে প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে বলে, ভিক্ষাবৃত্তিতে কম খাটুনিতে তাদের উপার্জন অনেক বেশি। ইসলাম ধর্মে কর্মক্ষম ব্যক্তিদের ভিক্ষা দেয়ায় নিরুৎসাহিত করে ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত সবার পুনর্বাসনের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে।

বিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হজরত মুহাম্মদ সা: ভিক্ষাবৃত্তিকে চরমভাবে নিরুৎসাহিত করেছেন। রাসূল সা: বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো রুজিরোজগারের জন্য শ্রমের পরিবর্তে ভিক্ষাবৃত্তি অবলম্বন করে, সে কিয়ামতের দিন এমন অবস্থায় উত্থিত হবে যে, তার চেহারায় এক টুকরো গোশতও থাকবে না’ (বুখারি)। নবীজীর কাছে একদিন একব্যক্তি ভিক্ষা চাইতে এলে তিনি তাকে কাজ করে খেতে উপদেশ দিয়েছেন। তিনি তার শেষ সম্বল কম্বলটা বিক্রি করে সে অর্থের অর্ধেক দিয়ে সেদিনের খাবার এবং বাকি অর্ধেক দিয়ে কুঠার কিনে কাঠ কেটে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতে উপদেশ দেন। ভিক্ষাবৃত্তি ইসলামে মোটেও সমর্থিত নয়- এ কারণেই তিনি তাকে ভিক্ষা না দিয়ে তার শেষ সম্বল দিয়ে হলেও কেনা খাবার ও স্বনির্ভর হওয়ার ব্যবস্থা করেন।

শারীরিকভাবে সম্পূর্ণরূপে অক্ষম- এমন ব্যক্তি ব্যতীত অপর কারো ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত হওয়া সঙ্গত নয়। ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থায় এবং কল্যাণমূলক রাষ্ট্রে এ ধরনের ব্যক্তিদের পুনর্বাসন ও ভরণপোষণের দায়িত্ব মূলত রাষ্ট্র ও সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠানের। আমাদের দেশে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঘিরে ভিক্ষাবৃত্তির ব্যবসা রমরমা। ধর্মীয় অনুষ্ঠান উপলক্ষে কোনো ব্যক্তি নিজ গৃহে ভিক্ষুকদের জন্য খাবারের আয়োজন করলে তাদের সংগঠনের মাধ্যমে যোগাযোগ করে অগ্রিম যাতায়াতের ভাড়া না দিলে উপস্থিতি আশাব্যঞ্জক হয় না। এতেই বোঝা যায়, ভিক্ষুকদের একটা শ্রেণী পেশাটিকে কিভাবে বাণিজ্যিকীকরণ করেছে।

আমাদের দেশের শহরে ও গ্রামে বসবাসরত জনমানুষের প্রায় সবাই এনজিও শব্দটির সাথে পরিচিত। ‘এনজিও’ একটি ইংরেজি সংক্ষিপ্ত শব্দ। শব্দটি বাংলায় ব্যাপক ব্যবহারের কারণে এর বাংলা প্রতিশব্দের ব্যবহার দেখা যায় না। এনজিও শব্দটির পূর্ণরূপ হলো ‘নন-গভর্নমেন্টাল অর্গানাইজেশন’। শব্দগুলোর বাংলা অর্থ বেসরকারি সংস্থা হলেও অনেকে এনজিওকে ‘বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী উন্নয়ন সংস্থা’ নামে অভিহিত করে থাকেন। দেশে এনজিও ব্যুরোর সাথে নিবন্ধিত এনজিওর সংখ্যা দুই হাজার ৭০০-এর কাছাকাছি। এর মধ্যে দেশীয় এনজিওর সংখ্যা ২৪ শতাধিক এবং বিদেশী এনজিও আড়াই শতাধিক। বিদেশী দাতাসংস্থা এনজিও বলতে সরকারের এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর নিবন্ধিত সংস্থাগুলোকে বুঝায়। এর বাইরে অনেক এনজিও সমাজসেবা অধিদফতর, মহিলাবিষয়ক অধিদফতর, সমবায় অধিদফতর, জয়েন্ট স্টক কোম্পানি, সাব-রেজিস্ট্রার, যুব উন্নয়ন অধিদফতর, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতর, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ইত্যাদি থেকে নিবন্ধন নিয়ে এনজিও হিসেবে কাজ করে চলছে। আবার এমন অনেক এনজিও রয়েছে যেগুলো নিবন্ধন ছাড়াই কাজ করছে।

আমাদের দেশে বর্তমানে এনজিও কার্যক্রমের যে বিকাশ, তা ভারতবর্ষে একদা মুসলমানদের জন্য ওয়াকফ্ আইন এবং হিন্দুদের জন্য দেবোত্তর আইনে যে প্রাতিষ্ঠানিক স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রম চালু ছিল, তারই ধারাবাহিকতায় ক্রম অগ্রসরমান।
এনজিওগুলোর স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রমের পরিধির মধ্যে সচরাচর যেসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকে, তা হলো- অলাভজনক সামাজিক, ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষামূলক কার্যক্রম, স্বাস্থ্যসেবা, সুপেয় পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন, ত্রাণ ও পুনর্বাসন, কৃষি ও কৃষি উন্নয়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন, জনসচেতনতা, দারিদ্র্য বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন, গণতন্ত্র ও সুশাসন, মানবাধিকার, প্রান্তিক ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের ক্ষমতায়ন ও অধিকার রক্ষা, শিশু ও কিশোর-কিশোরী এবং প্রবীণ ও প্রতিবন্ধীদের অধিকার রক্ষা, পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক সম্পদ, দক্ষতা উন্নয়ন, ভূমি অধিকার রক্ষা ও উন্নয়ন, বৃত্তিমূলক, সমাজকল্যাণ ও গবেষণামূলক কাজ প্রভৃতি।

আমাদের দেশে এনজিও হিসেবে যেগুলো পথিকৃৎ, সেগুলোর কাজ ত্রাণ ও পুনর্বাসনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও পরে দেখা গেছে, অবকাঠামো উন্নয়ন ও কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পয়ঃনিষ্কাশন, নারীর ক্ষমতায়ন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার দিকে তাদের কাজের বিস্তৃতি ঘটেছে। এরই ধারাবাহিকতায় উন্নয়ন চাহিদা অনুযায়ী, এনজিওর কার্যক্রমের মধ্যে আরো অন্তর্ভুক্ত হয় জামানতবিহীন ক্ষুদ্র ঋণের মাধ্যমে গ্রামীণ জনসাধারণের- বিশেষ করে নারীদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী, নিরক্ষরতামুক্ত বাংলাদেশ গড়তে বিভিন্ন উদ্ভাবনী কর্মসূচি গ্রহণ, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাসে সাধারণ মানুষকে সচেতন, ডায়রিয়াজনিত শিশুমৃত্যুর হার হ্রাস, বস্তিবাসীদের উন্নয়ন ও তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা, আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা, ন্যায়বিচার প্রাপ্তির লক্ষ্যে কাজ করা, নারী নির্যাতন ও যৌন হয়রানি রোধে কাজ করা, বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ প্রভৃতি।
আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত সরকার বা এনজিওগুলোর পক্ষ থেকে ভিক্ষাবৃত্তির অবসানে ফলপ্রসূ কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হয়নি। সরকারের পক্ষ থেকে ভিক্ষুকদের পুনর্বাসনের কথা বারবার উচ্চারিত হলেও তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়। ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধ করতে নিবন্ধিত-অনিবন্ধিত এনজিওগুলো এগিয়ে এলে এ সামাজিক সমস্যাটির চিরস্থায়ী সমাধান অসম্ভব নয়।

বাংলাদেশের রাজধানীসহ বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা শহরে এবং গ্রামগঞ্জে যারা ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত এদের তালিকা করে বড়-ছোট ও নিবন্ধিত-অনিবন্ধিত নির্বিশেষে প্রতিটি এনজিও ভিক্ষাবৃত্তি রোধকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে হবে। সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনার ভিত্তিতে ৩-৫ বছরের মধ্যে এর অবসানে লক্ষ্যে কাজ করলে এ অভিশাপের দায় হতে সমাজ যে মুক্ত হবে, তা অনেকটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখ ও পরিতাপের সাথে লক্ষ করা যাচ্ছে, বিভিন্ন এনজিওর কাজে প্রতিনিয়ত নিত্যনতুন কর্মসূচি অন্তর্ভুক্ত হলেও ভিক্ষাবৃত্তি নিরসনের কর্মসূচি লক্ষণীয় নয়।
ভিক্ষাবৃত্তির মাধ্যমে এদেশে ভিক্ষুকরা প্রতিদিন যে পরিমাণ অর্থ উপার্জন করে তা দিয়েই ওদের পুনর্বাসন সম্ভব। এ বিষয়ে প্রয়োজন বিশদ পরিকল্পনা। এ পরিকল্পনা প্রণয়নে সরকারের পাশাপাশি এনজিওরও ভূমিকা রয়েছে।

আমাদের দেশের বিভিন্ন এনজিও দীর্ঘ দিন ধরে দেশের বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা নিয়ে কাজ করে এলেও কোনোটির সফলভাবে সমাধানে তাদের অবদান আশাব্যঞ্জক নয়। অথচ দারিদ্র্য বিমোচনসহ কয়েকটি সামাজিক সমস্যা সমাধানে এনজিওগুলো আমাদের সরকার এবং বিভিন্ন দাতা দেশ ও সংস্থা থেকে যে পরিমাণ অনুদান হিসেবে অর্থ পেয়ে আসছে, এর সঠিক ব্যবহার করা হলে ভিক্ষাবৃত্তিসহ সব সামাজিক সমস্যারই সমাধান হয়ে যাওয়ার কথা। প্রায়ই অভিযোগ শোনা যায়, এনজিওগুলোর ব্যয়িত অর্থের একটি বড় অংশ দিয়ে নিজেদের বেতন, ভাতা ও সুযোগসুবিধা, বিদেশ ভ্রমণ এবং স্থাপনা রক্ষার জোগান দেয়া হয়। দেশবাসী আশা করে, এনজিওগুলোর সার্বিক ব্যর্থতার মাঝে তারা অন্তত ভিক্ষাবৃত্তি নিরসনে অগ্রণী ভূমিকা রেখে এর অভিশাপ থেকে দেশ ও সমাজকে রক্ষা করবে।

লেখক : সাবেক জজ, সংবিধান, রাজনীতি ও অর্থনীতি বিশ্লেষক
E-mail : iktederahmed@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement
নয়া দিগন্তের শৈলকুপা সংবাদাতার ওপর দুর্বৃত্তদের হামলা ডিএমপির অভিযানে গ্রেফতার ৩৯ সুন্দরবনে জ্বলছে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৫ ইউনিট শায়েস্তাগঞ্জে সাবেক সেনা সদস্য ট্রাকচাপায় নিহত ইসরাইল-গাজা যুদ্ধবিরতি আলোচনা নিয়ে কায়রোতে জোরদার প্রচেষ্টা ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২৫ ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারী আটক গাজীপুরে তুলার গুদামে আগুন স্টপেজের দাবিতে ফরিদপুরে প্রথম দিনই ট্রেনের গতিরোধ সন্দেশখালির ধর্ষণের অভিযোগ সাজানো, বিজেপি নেতার ভিডিওতে তোলপাড় খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় বজ্রপাতে মা-ছেলের মৃত্যু গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় পূর্ব আফ্রিকায় মানবিক সঙ্কটের অবনতির হুমকি স্বরূপ

সকল