০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`


এখন ‘ইসরাইলি বসন্ত’!

এখন ‘ইসরাইলি বসন্ত’! - ছবি : সংগৃহীত

ইসরাইলি ক্রীড়া ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী মেরী রেজেভ বলেছেন, ‘আমরা এখন ইসরাইলি বসন্ত অতিবাহিত করছি।’ মনে হচ্ছে, তিনি ঠিকই বলেছেন, কেননা ইসরাইল সাম্প্রতিক সময়ে এত কিছু অর্জন করেছে, যা তারা চিন্তাও করেনি। অবাক করা ঘটনা হলো- ইসরাইলের চলার পথকে আরব আমিরাত গোলাপ ফুলের পাপড়ি দিয়ে পুষ্পমণ্ডিত করেছে।

ইসরাইলি মন্ত্রীকে দেখানো হয়েছে বুর্জ খলিফা, নিয়ে যাওয়া হয়েছে প্রিন্স জায়েদ মসজিদে। তবে তাকে তখন মনে করিয়ে দেয়া হয়নি যে, বায়তুল মুকাদ্দাস বা আল আকসা মসজিদের গুরুত্ব মুসলমানদের কাছে কত মর্যাদাপূর্ণ। আমিরাতিদের তখন হয়তো খেয়াল ছিল না যে, ইনিই সেই মহিলা, যিনি কান ফিল্ম উৎসবে যে পোশাক পরিধান করেছিলেন, সে পোশাকে মসজিদের ছাপ ছিল। কান উৎসবে এ জন্য তিনি সমালোচিতও হয়েছিলেন। ধর্ম ও সংস্কৃতির প্রতি মানুষের অনুরাগ থাকতে পারে, সে ক্ষেত্রে তিনি সিনাই পর্বত বা কোনো সিনাগগের ছাপযুক্ত বাহারি পোশাক পরতে পারতেন। কিন্তু তা না করে তিনি কেন মসজিদের ছাপযুক্ত পোশাক গায়ে জড়ালেন? ইসলামের প্রতি অবমাননাকর এই পোশাক বিশ্বব্যাপী নিন্দিত। আমিরাতে তার চলার পথকে ফুলের পাপড়ি ও হেনার সুবাস দিয়ে মোহময় করা হয়েছিল। শ্রদ্ধা ও সম্মানের পতাকাতলে আসীন করা হয়েছে তাকে।

মন্ত্রী মেরী ভালো আরবি জানলেও হিব্রু ভাষায় দক্ষ কর্মকর্তাদের নিয়োগ করা হয়েছিল তার সাথে কথা বলার জন্য। উচ্চস্বরে বাজানো হয়েছে ইসরাইলি জাতীয় সঙ্গীত, ওড়ানো হয়েছে ইসরাইলি জাতীয় পতাকা। দীর্ঘক্ষণ ধরে বাজানো হয়েছে আরবি মোহময় সঙ্গীত। মনে হয়েছে সঙ্গীতের সুর লহরীর অবগাহন যেন এ যাত্রায় শেষ হবে না। এমন পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে যেন চারদিকে ইসরাইলি বসন্তের উৎসব আমেজ ছড়িয়ে পড়ছে। এমন সুখপ্রদ সময়েও ফিলিস্তিনি আরবরা অবরোধ করায় ইসরাইলি সৈন্যরা তাদের ঠাণ্ডা মাথায় ডাণ্ডাপেটা করছিল। সন্তানদের জন্য অসহায় ফিলিস্তিনি মায়েরা করছিলেন ক্রন্দন। এসব নেতনিয়াহুর নিত্যদিনের রুটিন করা কাজ। তিনি তখন ওমান সফরে ছিলেন। তার বিমান ওমানের রাজধানী মাসকটে নামল আর প্রচণ্ড ভূমিকম্প হলো। অনেকে মনে করলেন, এটা কেয়ামতের পূর্বাভাস। নেতনিয়াহুর বিমান সৌদি আরব, বাহরাইন, কাতার ও আমিরাতের আকাশসীমা দিয়ে ওমানে যায়। এসব দেশ কেন বাধা দিতে পারেনি তাদের আকাশসীমা ব্যবহার না করার। ফিলিস্তিনি আরবদের প্রতিদিন যেভাবে মারা হচ্ছে সেটি যেমন কেউ বাধা দিতে পারছে না, তেমনি আকাশ পথেও। বরং মনে হচ্ছে, আরবদের আগে কে নেতানিয়াহু ও ইসরাইলকে তোষণ করবে তার প্রতিযোগিতা চলছে যেন।

নেতানিয়াহু ও তার মন্ত্রীর এবারের সফরে আরো একটি উদ্দেশ্য রয়েছে, সব আরব দেশের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক পাকাপোক্ত করা। অথচ সফর শেষ করেই গাজায় বোমাবর্ষণ করার নির্দেশ দেন নেতানিয়াহু। এই হলো ইসরাইলের শান্তি ও কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের চেহারা। ফিলিস্তিনের পরই যে অন্য আরব দেশগুলোকে ইসরাইল ধরবে তারা তা বুঝতে পারছে না কেন? আরবদের কি ইসরাইলি গোয়েন্দাদের পাঠ্যবই দ্য প্রটোকলের কথা জানা নেই? সেখানে পরিষ্কার লেখা আছে, তারা আরব দেশগুলোকে কী করবে, ইসরাইলকে কতটুকু সম্প্রসারণ করবে, তাদের কী করতে দেবে, কী করতে দেবে না প্রভৃতি। তার পরও আরব দেশগুলোর বোধোদয় হচ্ছে না কেন, তা বোধগম্য নয়।

বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী খালিদ বিন আহমদ নেতানিয়াহুর আরব দেশ সফরের সময় তাকে ‘মহান নেতা’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন, তিনি ‘আঞ্চলিক শান্তি ও স্থায়িত্বের’ জন্য পরিশ্রম করছেন। ওই বক্তৃতায় ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর নির্যাতনের ব্যাপারে কোনো বক্তব্য তিনি দেননি। ইসরাইল এমন করে এগোচ্ছে যাতে আরব দেশগুলো তাকে শত্রু না মনে করে এবং তার বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ না হয়। এ দিকে ইসরাইল আপাতত গাজা, পুরো ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড, সম্পূর্ণ জেরুসালেম এবং পশ্চিম তীরের বেশির ভাগ দখল করে ইসরাইলকে প্রসারিত করছে। আপাতত এই লক্ষ্য সামনে রেখেই নেতানিয়াহুর বিচরণ। এই পদক্ষেপে গোলযোগ বাধলে বা পর্যায়টি শেষ হলে ইরানের বিরুদ্ধে সম্মুখযুদ্ধ হতে পারে। সে যুদ্ধে অনেক আরব দেশ ইসরাইলকে সর্বোচ্চ সহায়তা দেয়া অসম্ভব নয়। তখন এটি হবে ইসরাইলি বসন্তের যৌবন কাল।

ইসরাইলি বসন্তের বাতাসকে সুবাসিত করছে উপসাগরীয় দেশগুলোর অর্থায়নে পরিচালিত কিছু মিডিয়া। অনেক আগ থেকেই ‘লিবারেল আরব’ গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্র, যার প্রকৃষ্ট উদাহরণ, সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মুহাম্মদ বিন সালমান বা এমবিএস এবং আমিরাতের শেখ মুহাম্মদ বিন জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ান বা এমবিজেড এবং তাদের সাথে আছে অসংখ্য ধনাঢ্য পরিবার। উপসাগরীয় দেশগুলোর অর্থায়নেই আমেরিকার রিসার্চ সেন্টারে, জায়োনিস্ট-আমেরিকান ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি এই লক্ষ্য সামনে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। এই অর্থায়নকারীদের আমেরিকার পণ্ডিতরা ‘পেট্রোডলার ভদ্রলোক’ বলে ডাকেন। এরাই বন্দুকের নলকে ইরান, হামাস ও তুরস্কের দিকে ঘুরিয়ে তাক করছে।

কথিত এই ভদ্রলোকেরা ইসরাইলি দখলদারিত্বের বিষয়ে মাথা না ঘামিয়ে রাজনৈতিকভাবে ‘স্বাভাবিক অবস্থা’ বিরাজ করার উপায় বের করছেন। সেটি হলো সোজা জিনিস, আরো কিছু মার খাওয়া। টিভিতে এমনও দেখা গেছে, গাজায় বোমাবর্ষণের জন্য মিসরীয় উপস্থাপক নেতানিয়াহুকে ‘স্যালুট’ করছেন। আসলে ‘দালাল’ ও ‘তাবেদার’ সবখানে সক্রিয় হলেও তা মনে হয়, আরব দেশে বেশি। ইসরাইল ও আরব দেশগুলো ঐতিহাসিকভাবে পরস্পরের শত্রু হলেও এখন আরবরা চাইছে, ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখার জন্য।

হোসনি মোবারকের শাসনের সময় জানুয়ারি ২০১১ সালের বিপ্লবে ৮০০-এর বেশি মিসরীয় খুন হয়েছে। ২০১৩ সালের জুনে সেনাসহিংসতায় আরো তিন হাজার শহীদ হয়েছে। এই হিসাবের মধ্যে নেই আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি যে হাজার হাজার মানুষকে জেলে পুরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে। হাজার হাজার মানুষকে বসতভিটা থেকে উৎখাত করা হয়েছে তারও পরিসংখ্যান সঠিকভাবে মিডিয়ায় আসেনি।

আনোয়ার সাদাত ইসরাইলি নেসেটে ৪১ বছর আগে ভাষণ দিয়েছিলেন, গত নভেম্বরে ইসরাইলিরা নেসেটে ঘটনার ৪১তম বার্ষিকী উদযাপন করেছে। মিসরের কোনো রাষ্ট্রপ্রধান এর আগে নেসেটে যাননি সে দিন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ভাষণে বলেন, সমস্যা হলো আরব রাস্তাগুলোতে জনগণের বিক্ষোভ। এ থেকেই বোঝা যায়, তারা কী পরিমাণ ভয় করে আরব জাগরণকে। আরব জাগরণ যেন না হয়, সে জন্যই আরবদের বুক চিরে ইসরাইলের সৃষ্টি। একই উদ্দেশ্য নিয়েই ইসরাইল মিসরকে তোষণ করছে। জেনারেল সিসি ইসরাইলি ব্লু প্রিন্ট অনুসারে নিজ জনগণের ওপর দলন-পীড়ন চালিয়ে যাচ্ছেন। একইভাবে ইয়েমেন ও লিবিয়ায় জনগণের শক্তিকে নিঃশেষ করে দেয়ার কর্মসূচিও প্রতিপালিত হচ্ছে। তখন হয়তো, আরব ও আফ্রিকার মুসলিম দেশগুলোতে রাস্তায় রাস্তায় আর বিক্ষোভ হবে না। কেউ কোনো বসন্তের সমাবেশে যাবে না। এ সুযোগে ‘ইসরাইলি বসন্ত’ পরিপূর্ণতা লাভ করবে। এই বসন্ত তো আরব শেখদের অনেকে সৃষ্টি করেছেন তাদের জনগণের রক্তের বিনিময়ে। হত্যা, গুম, খুন, দেশান্তর, উৎপীড়ন, সীমান্তে নির্যাতন; এসব করে তারা ইসরাইলের দরবারে গিয়ে শান্তি ও নিরাপত্তা চাইছেন। এখন এটিই মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় কর্মকাণ্ড।

আরব শাসকেরা ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে স্বাভাবিক সম্পর্ক রাখতে চান। কেননা আরব বসন্ত কয়েকজন শাসকের চরম পরিণতি ডেকে এনেছে। নিজেদের ক্ষমতা ও স্বার্থরক্ষার জন্য এসব শাসক দেশে তৃতীয় পক্ষ খুঁজছে। এই সুযোগে ইসরাইলিরা এই শাসকদের কাছাকাছি চলে এসেছে। বিশ্বব্যাপী আইএস, ব্রাদারহুড, বোকো হারাম, হামাস, আলকায়েদা, আল শাবাব এদের বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগের লবিং করে অনেক ক্ষেত্রে সফলতা লাভ করেছে। অন্যান্য দেশেও আরব বসন্ত বিজয়ী হতো যদি না আরব আমিরাতের অপারেশন অফিসে জায়োনিস্ট-আমেরিকান ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি মাঠে না নামত। মিসরে ২০১১ সালের ২৫ জানুয়ারির পর বিপ্লবে তরুণ মিসরীয়রা কায়রোর ইসরাইলি দূতাবাস ঘেরাও করে, ওদের পতাকা নামিয়ে পুড়িয়ে ফেলে, দূতাবাস বন্ধ করে দেয় এবং তাদের লোকজনকে দেশত্যাগে বাধ্য করে। হাজার হাজার জনতা তাদের হাততালি দিয়ে সমর্থন দেয় এটাকে। এটিই ছিল আরবদের হৃদয়ের কথা।

সিরিয়ায় চার লাখ শহীদ হয়েছে এবং লাখ লাখ দেশান্তরিত ও সরকারি জেলখানায় আবদ্ধ অগণিত। সিরিয়া এখন মৃত্যুপুরী। যে ক’জন বোমার আঘাত থেকে নিজকে বাঁচাতে পেরেছে তারা এখন পানি, বিদ্যুৎ, খাবার পাচ্ছে না। এদের মধ্যে শিশু ও মহিলা বেশি। সিরিয়ার জনগণ গণতন্ত্র, সুবিচার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলে যেন বিপদ ডেকে এনেছে। লিবিয়া চলছে ‘জোর যার মুল্লুক তার’ নীতিতে। সরকার বলতে কিছু নেই, বন্দুকের নল দিয়ে যে যা পারে লুটছে। জেনারেল খলিফা হাফতারকে সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না; বরং হাফতারের ভয়ে সরকারের ত্রাহি মধুসূদন অবস্থা।

কোনো এক সময়কে চিহ্নিত করে যদি হিসাব করে দেখা হয়, ইসরাইলিরা কতজন ফিলিস্তিনি মেরেছে আর আরব শাসকরা কতজন তার নিজের দেশের লোক মেরেছে তাহলে বিস্মিত হয়ে যাবেন স্বদেশের মানুষের ওপর নির্যাতনের মাত্রা দেখে। ইসরাইল ধীরে-সুস্থে ঠাণ্ডা মাথায়, দেখে দেখে, বেছে বেছে আরবদের মারছে। দিন দিন ফিলিস্তিনিরা এক দুর্বিষহ জীবনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। সিরিয়ায় মাত্র কয়েক বছরে সব শেষ। মানুষ, সভ্যতা, পানি, বিদ্যুৎ, কৃষিজমি, অবকাঠামো, হাসপাতাল, স্কুল আজ বিধ্বস্ত। এর পরও ছবিতে দেখা যায়, প্রেসিডেন্ট আসাদ দুই আঙুল উঁচু করে ভি চিহ্ন দেখাচ্ছেন। এখন আর আমেরিকানরা বলছে না, ‘আসাদ মাস্ট গো।’ আসলে ইসরাইলি ইচ্ছার কাছে সবাই এখন নতজানু। আরব বসন্তের বিপ্লবী ঢেউ ইসরাইলেও আছাড় খেয়ে পড়ে সব ভাসিয়ে নিতে পারত। কিন্তু আরব নেতারা ‘আরব বসন্ত’কে হত্যা করেছেন। এই সুযোগে ইসরাইলি বসন্তের আমেজে আরব নেতারা সুখানুভব করছেন। আরব বসন্ত প্রস্ফুটিত হয়েছিল জনরোষে, সাধারণ জনগণ এতে সম্পৃক্ত। এর অনেক শাখা-প্রশাখা ও সময় নির্দিষ্ট করা, আছে অনেক বিকল্প পন্থা। সমস্যা সৃষ্টি করাই এই বসন্তের লক্ষ্য।

খাশোগি হত্যাকাণ্ডের পর প্রিন্স মোহাম্মদ নেতানিয়াহুর দ্বারস্থ হয়ে সমস্যা উত্তরণের অনুরোধ জানান। পত্রপত্রিকায় দেখা যায় নেতানিয়াহু এ বিষয়ে সালমানের পক্ষ নিয়েছেন। ফলে এখনো বিন সালমানকে সিআইএ বা অন্য কেউ স্পর্শ করতে পারেনি। এক মাস পর তিনি বুলগেরিয়ায় বলেছেন, ‘ইস্তাম্বুলে কী হয়েছে তা সঠিকভাবে দেখা উচিত। তা ছাড়া আঞ্চলিক সৌদি নিরাপত্তা যাতে বিঘিœত না হয়, তাও গুরুত্বপূর্ণ।’ তিনি আরো বলেন, ‘এসবের পেছনে আছে ইরান। ইউরোপে ইরান এখন যা করছে তাতে সবার সজাগ হওয়া উচিত।’ সৌদি নেতারা কয়েক দশক আগে যা গোপনে করতেন এখন বিন সালমান ও অন্যরা তা প্রকাশ্যেই করছেন। বিভিন্ন আরব দেশের শীর্ষ ব্যক্তিরা প্রকাশ্যেই ইসরাইল সফর করছেন।

চলতি জানুয়ারি মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আন-নাহিয়ান দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা তাহনুন বিন জায়েদকে নিয়ে তেল আবিবে গেছেন। তারা তেল আবিবের রিজ কার্লটন লাক্সারি হোটেলে অবস্থান করেন। সৌদিরা ঈদের কেনাকাটার জন্য আমিরাত সফর করেন; এখন আমিরাতের শীর্ষ কর্তারা ইসরাইলের অ্যারেনা বিপণিকেন্দ্রে কেনাকাটা করছেন!
ইসরাইলিরা বলে, ‘তোমরা আরবদের আধুনিক জ্ঞানবিজ্ঞান শিখাও। তাহলে তারা এসবের পেছনে পড়বে। তখন তারা না থাকবে মুসলমান, না হবে বিজ্ঞানী।’ প্রটোকলে এই কথাটি লেখা আছে। দ্য প্রটোকল বইটি হিব্রু ভাষায় লিখিত। এটি ইসরাইলি গোয়েন্দা বাহিনীর পাঠ্য। কিন্তু কেজিবি বইটি সংগ্রহ করে রাশিয়ান ভাষায় প্রকাশ করে, এর এক মাস পর বইটি ইংরেজিতে লন্ডন থেকে প্রকাশিত হয়। বইটি আরব বিশ্বে না পড়ার কথা নয়। তার পরও আরব বিশ্ব ইসরাইলের পেছনে ছুটছে! পবিত্র কুরআনের সূরা ফাতেহা নামাজে পাঠ না করলে নামাজ হয় না। একজন মুসলমান দিনে অনেকবার এই সূরা পাঠ করে থাকেন। সূরা ফাতেহার ৭ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘তাদের পথে নয়, যাদের প্রতি তোমার গজব নাজিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।’ অনেক তাফসিরে ‘পথভ্রষ্ট’ শব্দের ব্যাখায় ‘ইহুদি ও নাসারার’ কথা বলা হয়েছে। আমরা অহরহ এই আয়াত পাঠ করছি এবং কর্মক্ষেত্রে এর উল্টো পথেই চলছি!
লেখক : অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব, বাংলাদেশ সরকার ও গ্রন্থকার


আরো সংবাদ



premium cement