২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

প্রার্থিতালিকা ঘোষণার পরবর্তী প্রতিকার

প্রার্থিতালিকা ঘোষণার পরবর্তী প্রতিকার - ছবি : সংগৃহীত

একজন ব্যক্তিকে জাতীয় সংসদের সদস্য পদে নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হতে হলে তাকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হয় এবং তার বয়স ৩৫ বছর পূর্ণ হতে হয়। একজন ব্যক্তি সংসদ সদস্য পদে নির্বাচনের জন্য যোগ্য হন না যদি (ক) কোনো উপয্ক্তু আদালত তাকে অপ্রকৃতস্থ বলে ঘোষণা করেন; (খ) ব্যক্তিটি দেউলিয়া ঘোষিত হওয়ার পর দায় হতে অব্যাহতি লাভ না করে থাকে; (গ) ব্যক্তিটি কোনো বিদেশী রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করে কিংবা কোনো বিদেশী রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা বা স্বীকার করে; তবে বিদেশী রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ত্যাগ করলে অথবা পুনরায় বাংলাদেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করলে তার ক্ষেত্রে এ বিধান কার্যকর হয় না; (ঘ) ব্যক্তিটি নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অন্যূন দুই বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং তার মুক্তি লাভের পর পাঁচ বছর কাল অতিবাহিত না হয়ে থাকে; (ঙ) ব্যক্তিটি ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ যোগসাজশকারী (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল) আদেশের অধীন কোনো অপরাধের জন্য দণ্ডিত হয়ে থাকেন; (চ) আইনের দ্বারা পদধারীকে অযোগ্য ঘোষণা করছে না এমন পদ ব্যতীত ব্যক্তিটি প্রজাতন্ত্রের কর্মে কোনো লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত থাকেন; তবে এ বিধানটি রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয় না এবং (ছ) ব্যক্তিটি কোনো আইনের দ্বারা বা অধীন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য অযোগ্য হন।

জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচন বা যেকোনো শূন্য আসনের নির্বাচনের ক্ষেত্রে রিটার্নিং অফিসারের বরাবর মনোনয়নপত্র দাখিল করতে হয় এবং রিটার্নিং অফিসার প্রার্থী বা তার প্রতিনিধির উপস্থিতিতে মনোনয়নপত্র বাছাইপূর্বক তা গ্রহণ বা বাতিল করেন। রিটার্নিং অফিসারের সিদ্ধান্তে কোনো ব্যক্তি বা কোনো কর্তৃপক্ষ সংক্ষুব্ধ হলে তিনি কমিশন বরাবর আপিল দায়ের করতে পারেন এবং আপিলের ওপর কমিশনের আদেশ চূড়ান্ত মর্মে গণ্য হয়। বাংলাদেশ অভ্যুদয় পরবর্তী এ যাবৎকাল পর্যন্ত জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডারের জেলা প্রশাসক পদমর্যাদার কর্মকর্তারা রিটার্নিং অফিসার পদে নিয়োগ লাভ করে আসছেন যদিও সংসদের শূন্য আসনের নির্বাচনের ক্ষেত্রে মাঝে মাঝে কমিশনে কর্মরত কর্মকর্তাদের রিটার্নিং অফিসার পদে নিয়োগ লাভ করতে দেখা যায়।

প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পরবর্তী দিন রিটার্নিং অফিসার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের তালিকা প্রস্তুত করেন। এ তালিকা প্রস্তুত-পরবর্তী একজন বৈধ মনোনীত প্রার্থী মৃত্যুবরণ করলে অথবা তার প্রার্থিতা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯১ঙ অনুচ্ছেদের দফা (২) এর বিধান মতে কমিশন কর্তৃক বাতিল হলে রিটার্নিং অফিসার গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ওই নির্বাচন বিষয়ে কার্যধারার অবসান ঘটান। একজন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তার প্রতিনিধি বা তার পক্ষে অপর কোনো ব্যক্তি তার আদেশ অথবা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্মতিতে গুরুতর অবৈধ কাজ অথবা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের কোনো বিধানের লঙ্ঘন বা আচরণবিধির লঙ্ঘন করলে কমিশন তদন্ত পরবর্তী অভিযোগ বস্তুনিষ্ঠ প্রমাণিত হলে ওই প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করতে পারে। যে ক্ষেত্রে কোনো আসনের নির্বাচনের কার্যধারার অবসান ঘটানো হয় সে ক্ষেত্রে ওই আসনের জন্য নতুনভাবে তফসিল ঘোষণা করতে হয়।
নির্বাচনী আইন ও নির্বাচনের বৈধতা বিষয়ে সংবিধানের অনুচ্ছেদ নং ১২৫ এ বলা হয়েছে- এ সংবিধানে যা বলা হয়েছে তা সত্ত্বেও (ক) সংবিধানের ১২৪ অনুচ্ছেদের অধীন প্রণীত বা প্রণীত বলে বিবেচিত নির্বাচনী এলাকার সীমা নির্ধারণ, কিংবা অনুরূপ নির্বাচনী এলাকার জন্য আসন বণ্টন সম্পর্কিত যেকোনো আইনের বৈধতা সম্পর্কে কোনো আদালতে প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না; (খ) সংসদ কর্তৃক প্রণীত কোনো আইনের দ্বারা বা অধীন বিধান অনুযায়ী কর্তৃপক্ষের কাছে এবং অনুরূপভাবে নির্ধারিত প্রণালীতে নির্বাচনী দরখাস্ত ব্যতীত রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচন বা সংসদের কোনো নির্বাচন সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না; (গ) কোনো আদালতে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে এরূপ কোনো নির্বাচনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে যুক্তিসঙ্গত নোটিশ ও শুনানির সুযোগ না দিয়ে অন্তর্বর্র্তী বা অন্য কোনোরূপে কোনো আদেশ বা নির্দেশ দেবে না।

১৯৯৬ সালের ৫ জুন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সর্বসম্মতভাবে ৪১ ডিএলআর এ বর্ণিত এ এফ এম শাহআলম বনাম মুজিবুল হক এবং অন্যান্য মামলার বরাদ দিয়ে বলেছিলেনÑ কোনো নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর রিটের মাধ্যমে আর কোনো বিরোধের ফয়সালা হবে না। যা হওয়ার নির্বাচনের পরে হবে। আর তা-ও রিটে নয় নির্বাচনী বিরোধ হিসেবে সুরাহা হবে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে। এ মামলাটিতে আপিল বিভাগ অত্যন্ত সুস্পষ্ট ভাষায় এ নীতি নিশ্চিত করেছে যে, হাইকোর্ট বিভাগের অধীনে সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদের আওতায় কোনো একটি নির্বাচনী প্রক্রিয়া চলাকালে কোনো পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না, শুধু দু’টি ব্যতিক্রম ছাড়া। এর একটি হলো, দেখাতে হবে যে সিদ্ধান্ত নির্বাচন প্রক্রিয়ায় রিটার্নিং কর্মকর্তা বা নির্বাচন কমিশন নিয়েছে, সে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে তাদের যথাযথ এখতিয়ার ছিল না এবং দেখাতে হবে, রিটার্নিং অফিসার বা ইসি নিয়োগ বৈধ ছিল না। একে বলে কোরাম নন-জুডিস। দ্বিতীয়ত, যেটি দেখাতে হবে সেটি হলো মেলিস ইন ল’ অর্থাৎ যে আইনের আওতায় সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে, সে আইনটি বিদ্বেষপূর্ণভাবে প্রণীত হয়েছিল। এ দু’টি শর্তের বাইরে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় রিটের মাধ্যমে কোনো বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা যাবে না।

আপিল বিভাগের ওই রায়টি অবলোকনে দেখা যায় জেনারেল এরশাদ তিনটি আলাদা মামলায় দণ্ডিত ছিলেন এবং দণ্ডের বিরুদ্ধে তিনি আপিল করেছিলেন; কিন্তু কোনো দণ্ডই আদালত কর্তৃক স্থগিত করা ছিল না। তদুপুরি রিটার্নিং অফিসার এরশাদের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন। তখন ওই আদেশের বিরুদ্ধে রিট করেছিলেন বিএনপির সাবেক মন্ত্রী এ কে এম মাইদুল ইসলাম। কিন্তু‘ হাইকোর্ট বিভাগ ও আপিলে তিনি পরাস্ত হন। সে রায়ে সর্বোচ্চ আদালত সুস্পষ্টভাবে বলেছিলেনÑ নির্বাচন প্রক্রিয়া চলমান থাকাবস্থায় এতদবিষয়ে কোনো বিরোধ রিটে সুরাহা হবে না। জেনারেল এরশাদ দণ্ড মাথায় নিয়ে তা স্থগিত হওয়া ছাড়াই কারাগারে থেকে নির্বাচন করেছিলেন।

আমাদের ফৌজদারি বিচারের ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বীমূলক ব্যবস্থা অনুসৃত হয়। এ ব্যবস্থায় বিচারক অথবা ম্যাজিস্ট্রেটের ভূমিকা অনেকটা ক্রিকেট খেলার আম্পায়ারের মতো। উভয়পক্ষের বাদানুবাদ থেকে যে সত্য বেরিয়ে আসে, তা অবলোকনে বিচারক সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার ক্ষেত্রে সচেষ্ট থাকেন। আমাদের ফৌজদারি বিচারব্যবস্থা যে মৌলনীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত সেটিকে বলা হয় নির্দোষতার প্রগলভতা। এর অর্থ যতক্ষণ পর্যন্ত উপস্থাপিত সাক্ষ্য দিয়ে আদালতে প্রমাণিত না হবে একজন অভিযুক্ত ব্যক্তি দোষী, ততক্ষণ পর্যন্ত আদালত তাকে নির্দোষী হিসেবে গণ্য করবে। আর এ কারণেই একজন বিচারক বা ম্যাজিস্ট্রেটকে কোনো মামলা সংশ্লেষে একজন অভিযুক্ত ব্যক্তিকে দণ্ড দিলে দণ্ডাদেশের অব্যবহিত পূর্বের দফায় তাকে লিখতে হয় রাষ্ট্রপক্ষ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণে সক্ষম হয়েছে। প্রমাণের ক্ষেত্রে ন্যূনতম সন্দেহ থাকলে এর সুবিধা অভিযুক্ত ব্যক্তি ভোগ করে থাকে।
বিচারিক আদালতের দেয়া দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের হলে এ বিষয়ে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত যে নিয়ম তা হলো- আপিল বিচারের চলমান প্রক্রিয়া এবং এ নীতির আলোকে আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নির্দোষতার প্রগলভতা নীতিটি অনুসৃত হয়। এখানে দণ্ড স্থগিত করা হয়েছে কী হয়নি, এ বিষয়টি অপ্রাসঙ্গিক।

যেকোনো নির্বাচনের কার্যক্রম তফসিল ঘোষণা-পরবর্তী শুরু হয়ে নির্বাচনের ফলাফল গেজেট বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয়। নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিল, বাছাই এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহার বিষয়ক যে বিধানাবলি রয়েছে তা অবলোকনে প্রতীয়মান হয় মনোনয়নপত্র গ্রহণ ও বাতিল উভয় ক্ষেত্রে রিটার্নিং অফিসার যে সিদ্ধান্ত দেন, তাতে কোনো পক্ষ সংক্ষুব্ধ হলে তিনি কমিশন বরাবর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আপিল দায়ের করতে পারেন এবং এ বিষয়ে আপিলে কমিশনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত মর্মে গণ্য হয়।
প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় অতিক্রান্ত হওয়া পরবর্তী একজন প্রার্থীর মৃত্যু ঘটলে অথবা গুরুতর অবৈধ কাজ বা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের বিধানের লঙ্ঘন বা আচরণবিধি লঙ্ঘনজনিত অভিযোগের কারণে কমিশনের তদন্তের বস্তুনিষ্ঠতা বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া-পরবর্তী প্রার্থিতা বাতিল করা হলে নির্বাচনের কার্যক্রমের অবসান ঘটে এবং এরূপ অবসানের ক্ষেত্রে কমিশনের নতুন করে নির্বাচনের কার্যক্রম শুরু করতে হয়। অনুরূপ বা অন্য কোনো কারণে নির্বাচন কমিশন ছাড়া অপর কোনো কর্তৃপক্ষের প্রার্থিতা প্রত্যাহার-পরবর্তী এবং নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়া অবধি একজন প্রার্থীর নির্বাচনে অংশ নেয়া স্থগিত বা বাতিল করার ক্ষমতা আছে কি না তা নিরসন জরুরি।

নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হওয়া এবং নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ একজন ব্যক্তির মৌলিক অধিকার। হাইকোর্ট বিভাগে রিটের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে বারিত করা হলে তা একজন ব্যক্তির মৌলিক অধিকার সংরক্ষণের পরিবর্তে হরণের উপক্রম হয়। এ ধরনের মৌলিক অধিকারের হরণ হলে হাইকোর্ট বিভাগে রিট দায়েরের মাধ্যমে তা সংরক্ষণ করা হয়। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ এবং সংবিধানের নির্বাচনবিষয়ক বিধানাবলি পর্যালোচনায় দেখা যায় নির্বাচনী দরখাস্তের মাধ্যমে যেসব বিষয়ে প্রতিকারের কথা বলা হয়েছে তার অন্যথা কাক্সিক্ষত বা প্রত্যাশিত নয় এবং এ বিষয়ে আমাদের সর্বোচ্চ আদালত ২২ বছর আগে যে সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিল তা আজো অক্ষুণœ থাকায় এর ব্যত্যয়ে ভিন্নতর সিদ্ধান্ত অহেতুক বিতর্কের জন্ম দেয়।
লেখক : সাবেক জজ, সংবিধান, রাজনীতি ও অর্থনীতি বিশ্লেষক
E-mail: iktederahmed@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement
দক্ষিণ ভারতে কেন কাজ করেনি বিজেপির হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের নতুন আংশিক কমিটি বাংলাদেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসায় বিনিয়োগ সম্ভাবনা অন্বেষণে থাইল্যান্ডের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান ট্রাম্পের বিচার নিয়ে বিভক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট চুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত, ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত আমদানি ব্যয় কমাতে দক্ষিণাঞ্চলের সূর্যমুখী তেলের আবাদ পাকুন্দিয়ায় গানের আসরে মারামারি, কলেজছাত্র নিহত আবারো হার পাকিস্তানের, শেষ সিরিজ জয়ের স্বপ্ন পাটকেলঘাটায় অগ্নিকাণ্ডে ৩ দোকান পুড়ে ছাই ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা শুরু দোয়ারাবাজারে পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীকে হত্যা : স্বামীর আমৃত্যু কারাদণ্ড

সকল