০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`


নির্বাচন এবং দল-জোটের দাবি যখন অভিন্ন

নির্বাচন এবং দল-জোটের দাবি যখন অভিন্ন - ছবি : নয়া দিগন্ত

জানা যাচ্ছে, আগামী নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই ঘোষণা আসছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল। এরপরও এ নির্বাচন নিয়ে নানা অনিশ্চয়তা জনমনে ঘুরপাক খাচ্ছে। কারণ, নির্বাচনের পদ্ধতি-প্রক্রিয়া নিয়ে সরকারি মহল ও সরকারবিরোধী মহল এখনো পুরোপুরি বিপরীত মেরুতে অবস্থান রয়েছে। সরকারের বাইরের দল ও জোটগুলো চায় দল-নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন। অপর দিকে, সরকার চায় বর্তমান সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে।

সরকারবিরোধীরা চায় নির্বাচনের আগে সংসদ বাতিল করতে হবে। সরকার চায় সংসদ বহাল রেখেই নির্বাচন। সরকার বর্তমান নির্বাচন কমিশনেই আস্থাশীল। অপর দিকে, বিরোধী পক্ষ চায় বর্তমান নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন। সরকারি দল চায় নির্বাচনে ইভিএমের ব্যবহার, তেমনি বিরোধীদের তাতে আপত্তি। সরকারবিরোধীরা চায় নির্বাচনের সময় ম্যাজিস্ট্র্যাসি ক্ষমতা দিয়ে সেনা মোতায়েন, সরকার পক্ষের চাওয়া এর সম্পূর্ণ বিপরীতে। এরপরও সরকারপক্ষ ও সরকারের বাইরের দল-জোটগুলোর মধ্যে আছে সমসুযোগের বিতর্কসহ আরো কিছু ছোটখাটো মতপার্থক্য।

দেশের সাধারণ মানুষ মনে করে, নির্বাচনের পদ্ধতি-প্রক্রিয়া সম্পর্কিত এসব মতবিরোধের একটা শান্তিপূর্ণ সুরাহা অনেক আগেই হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু তা হয়নি। কার জন্য হয়নি, তা আরেক বিতর্ক। তবে এখন নির্বাচনের একদম পূর্বমুহূর্তে হলেও সব দল-মহলের মধ্যে একটা মোটামুটি সমঝোতা হলে নির্বাচন নিয়ে বিদ্যমান নানা অনিশ্চয়তার অবসান ঘটত এবং সব মহলের মধ্যে স্বস্তি নেমে আসত। কারণ, এ ধরনের মতবিরোধ নিয়ে এমনি অনিশ্চিত একটি পরিস্থিতি আমরা প্রত্যক্ষ করছি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনের সময়েও। বাস্তব অভিজ্ঞতা বলে- সে নির্বাচন পরিস্থিতি জাতির জন্য কোনো সুফল বয়ে আনেনি, বরং জন্ম দিয়েছে নানা প্রশ্ন। তাই আজকের এই সময়ে দাঁড়িয়ে আমাদের অনেকের প্রশ্ন : আমরা কি সেই ২০১৪ সালের মতো কোনো পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি?

এই পরিস্থিতি এড়ানোর লক্ষ্যেই সরকারের বাইরের দল জোটগুলো এবং দেশের সুশীলসমাজ নির্বাচনসংশ্লিষ্ট নানা দাবি-দাওয়া তুলে ধরছে সরকারের কাছে। এবং এসব দাবি-দাওয়া প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সরকারের আলোচনায় বসার দাবি জানিয়ে আসছে অব্যাহতভাবে। কিন্তু সরকার পক্ষের এক কথা : কোনো আলোচনা নয়, বর্তমান সরকারের অধীনেই সংসদ বহাল রেখেই সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ, বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ সম্ভব নয়। এ সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন নির্বাচনের অভিজ্ঞতা তাই বলে বিরোধী পক্ষের দাবি। অতএব নির্বাচন হতে হবে সবার মতামতের ভিত্তিতে গঠিত একটি দলনিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। সেই সাথে আছে আরো কিছু দাবি-দাওয়া।

বিরোধীদল-জোট বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন আঙ্গিকে তাদের দাবিগুলো উচ্চারণ করে আসছিল। কিন্তু একাদশ জাতীয় সংসদ যখন একদম দোরগোড়ায়, তখন এসব দল ও জোট সুনির্দিষ্টভাবে তাদের দাবিগুলো তুলে ধরছে। এসব দাবিগুলো একটু সচেতনভাবে লক্ষ করলে দেখা যাবে সরকারবিরোধী দল-জোট এখন যেসব দাবি তুলছে, এসব দাবির মধ্যে অভিন্নতা রয়েছে লক্ষণীয়ভাবে। এবং বললে ভুল হবে না, সরকারি দল আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট ছাড়া মোটামুটি সরকারের বাইরের সব দল ও জোটই এ অভিন্ন দাবিগুলো এখন তুলছে। এখন দেখা যাক, এ সময়ে কোন দল বা কোন জোট নির্বাচনের এই পূর্বমুহূর্তে কী কী দাবি তুলছে।

আমরা ইতোমধ্যেই লক্ষ করেছি, গত ১৩ অক্টোবর যাত্রা শুরু হলো বিএনপি ও ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন একটি ঐক্য জোটের। সরকারবিরোধী এই জোটের আনুষ্ঠানিক নাম দেয়া হয়েছ ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট’। এই ফ্রন্টে থাকছে বিএনপি, ড. কামালের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া, আ স ম আবদুর রবের নেতৃত্বাধীন জেএসডি, মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বধীন নাগরিক ঐক্য। শুরু থেকে এই জোট গঠনের সাথে বি. চৌধুরীর বিকল্পধারা যুক্ত থাকলেও শেষ পর্যন্ত নানা কারণে দলটিকে বাদ দিয়েই গঠিত হলো এই ঐক্যফ্রন্ট। তবে বিকল্পধারার নেতৃত্বধীন যুক্তফ্রন্টের দু’টি দল এই ঐক্যফ্রন্টে রয়েছে। তা ছাড়া, বিকল্পধারা ভেঙে একটি অংশ এই ঐক্যফ্রন্টে থাকবে বলে সংবাদ সম্মেলন করে তারা জানিয়েছে।

নবগঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের দিনেই সংবাদ সম্মেলন করে এ জোটের ৭ দফা দাবি এবং ১১ দফা লক্ষ্য ঘোষণা করেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফা দাবির মধ্যে নির্বাচনসংশ্লিষ্ট দাবিগুলো হচ্ছে : অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদ বাতিল, সব রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা করে নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার গঠন এবং খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দীর মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার। নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন এবং নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার নিশ্চয়তা দেয়া।

বাক, ব্যক্তি, সংবাদপত্র, টেলিভিশন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সব রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। নির্বাচনের ১০ দিন আগে থেকে নির্বাচনের পর সরকার গঠন পর্যন্ত বিচারিক ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োগ ও নিয়ন্ত্রণের পূর্ণক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের হাতে দেয়া। নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা, সম্পূর্ণ নির্বাচন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণে তাদের এবং গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ না করা। তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত চলমান সব রাজনৈতিক মামলা স্থগিত এবং নতুন কোনো মামলা না দেয়ার নিশ্চয়তা দেয়া।

এ দিকে, আগামী সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে গত ১৮ জুলাই আটটি বামপন্থী রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গঠিত হয় ‘বাম গণতান্ত্রিক জোট’। এই জোটভুক্ত দলগুলো হচ্ছে : সিপিবি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল, বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী), গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি এবং বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন। সংবাদ সম্মেলনে এই জোট বলেছে- দেশের সামগ্রিক নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। নির্বাচন ব্যবস্থা একটি প্রহসনে পরিণত হয়েছে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। দেশে আইনের শাসন নেই।

বিরোধীদলগুলো ও ভিন্ন মতাবলম্বীরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য নির্যাতন, মিথ্যা মামলা দায়ের, গ্রেফতার, বলপূর্বক অপহরণ ও খুনের পথ অবলম্বন করছে। এ পরিস্থিতিতে এই জোটের দাবি হচ্ছে : আগামী সাধারণ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই সংসদ বাতিল করতে হবে, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে, রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠীর সাথে আলোচনা করে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে।

ইসলামপন্থী জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম গত ১৪ অক্টোবর ঢাকায় তাদের সেক্রেটারিদের এক বৈঠকের আয়োজন করে। দলের মহাসচিব নুর মোহাম্মদ কাসেমির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে যেসব দাবি তোলার সিদ্ধান্ত হয়, সেগুলো হলো : দলনিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে হবে, সংসদ বাতিলসহ ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে নির্বাচনের সময় সেনা মোতায়েন করতে হবে, নির্বাচনে ইভিএম ব্যহার করা যাবে না। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয় এসব দাবি আদায়ের লক্ষ্যে দলটি ঢাকায় এক র‌্যালির আয়োজন করবে।

অপর দিকে, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ গত ৫ অক্টোবর দলটির পক্ষ থেকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক মহাসমাবেশের আয়োজন করে। এই ইসলামপন্থী দলটির আমির সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউর করীম তার দলের পক্ষ থেকে ১০ দফা দাবি ঘোষণা করেন। তার দলের দাবিগুলোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত আছে : নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনের পর ক্ষমতা হস্তান্তর পর্যন্ত সময়ের জন্য ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সেনা মোতায়েন, নির্বাচনের সময়ে সব দলের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি, ইভিএমের ব্যবহার বন্ধ করা এবং নির্বাচনে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের সুযোগ সৃষ্টি ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল। চরমোনাইয়ের পীর হিসেবে সমধিক খ্যাত ও এ দলটির আমির মুফতি ফজলুল করীম সমাবেশে বলেন, রেডিও ও টিভিসহ সব সরকারি-বেসরকারি গণমাধ্যমে সবাইকে সমান সুযোগ দিতে হবে ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের হয়রানি বন্ধ করতে হবে। সমাবেশে তিনি বলেন, দেশের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত।

দু’টি রাজনৈতিক জোট নির্বাচনকে সামনে রেখে মুখোমুখি অবস্থানে থেকে এক ভীতিকর পরিস্থিতির জন্ম দিয়েছে। দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দল এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা সরকারি দলের প্রতি সঙ্কট সমাধানের উদ্যোগ নেয়ার কথা বললেও সরকার বিষয়টি নিষ্পত্তির কোনো উদ্যোগ নেয়নি। গত ১০ বছর জনগণ তাদের পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিতে পারেনি। নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন কেউই নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করছে না। আগামীতে দেশের মানুষ আর প্রহসনের নির্বাচন মানবে না। সংসদ ভেঙে ৯০ দিনের মধ্যে একটি নির্বাচন চায় দেশবাসী।

এভাবে আমরা যদি সরকারি দল আওয়ামী লীগ এবং সরকারি দলের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের বাইরের রাজনৈতিক দল ও জোটগুলোর দাবিগুলো খতিয়ে দেখি, তবে দেখা যাবে- সেসব দল-জোট আগামী নির্বাচন প্রশ্নে মোটামুটিভাবে সরকারের কাছে কিছু অভিন্ন দাবি তুলছে। হতে পারে, দাবিগুলো উপস্থাপনে শব্দ ও বাক্যবিন্যাসে সামান্য পার্থক্য আছে। তবে দাবিগুলো যে অভিন্ন তাতে কোনো সন্দেহ নেই। আরো লক্ষণীয়, সরকারের বাইরের বামপন্থী, ইসলামপন্থী, জাতীয়তাবাদী কিংবা উদার গণতান্ত্রিক ইত্যাদি সব দলই এসব অভিন্ন দাবিগুলো নিয়ে এখন সোচ্চার। আমরা এসব অভিন্ন দাবিগুলোর মধ্যে আছে : নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দেয়া, বর্তমান সরকারের পদত্যাগ, নির্বাচনকালীন সরকার গঠন, নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন, নির্বাচনে ম্যাজিস্ট্র্র্যাসি ক্ষমতা দিয়ে সেনা মোতায়েন, নির্বাচনে সব দলের সমান সুযোগ সৃষ্টি, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের নিশ্চয়তা দান। এসব দাবিগুলো তোলার কারণ : এরা বাস্তবতার আলোকে মনে করেÑ বর্তমান দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন সম্ভব নয়, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।

এসব দাবি আজ নতুন করে উচ্চারিত হচ্ছে, তা নয়। বিগত ১০ বছর ধরেই এসব দল এসব দাবি নানা সময়ে নানাভাবে উত্থাপন করে আসছে। কিন্তু সরকার বরাবর এসব দাবি অবজ্ঞার সাথে উপেক্ষা করে আসছে। কিংবা বলা যায়, উপেক্ষা করে আসতে সক্ষম হয়েছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, এগুলো জনদাবি। জনগণ চায় এসব দাবির বাস্তবায়ন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, সরকারের বাইরের সব রাজনৈতিক দল ও জোট এসব দাবি আদায় করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং হচ্ছে। এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারের বাইরে থাকা দল ও জোট এই জনদাবি আদায়ে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে নিয়ে আসতে পারেনি। এটাই স্বাভাবিক, জনদাবি আদায় করতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করা অপরিহার্য।

এসব দল যদি এসব অভিন্ন দাবি আদায়ে ইস্যুভিত্তিক ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে নামত, তবে অনেক আগেই এসব দাবি পূরণে সরকার পক্ষ বাধ্য হতো। প্রশ্ন হচ্ছে, দাবি যদি জনদাবি হয় এবং দাবি যদি অভিন্ন হয়, তবে এসব দাবি আদায়ে কেন নয় ইস্যুভিত্তিক অভিন্ন আন্দোলন। কিন্তু বাস্তবে এসব দাবি আদায়ে আমরা সরকারের বাইরের দলগুলোর মধ্যে কাক্সিক্ষত সেই ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন দেখতে পাচ্ছি না। যতদিন তা না হবে, ততদিন ভিন্ন ভিন্ন প্ল্যাটফরম থেকে এসব দাবি নিয়ে চিৎকার চলতে পারে, কিন্তু জনদাবি হওয়া সত্ত্বেও এসব দাবি অপূর্ণই থেকে যাবে। এসব দলের জন্য এ সত্য উপলব্ধির সময় এখন চূড়ান্ত।

বাস্তবতার নিরিখে মনে হচ্ছে, সরকারের বাইরের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল-জোটের মধ্যে এই উপলব্ধি আসতে শুরু করেছে। গতকাল একটি জাতীয় দৈনিক জানিয়েছে- নির্দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনসহ সাত দফা দাবি নিয়ে গঠিত ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট’র সাথে রাজপথে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করতে চান প্রগতিশীল বাম দলের নেতারা। তারা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে সরাসরি জোটবদ্ধ না হয়ে আন্দোলনের মাঠে অর্থাৎ রাজপথে এক দাবিতে একত্রে থাকতে চান। বাম প্রগতিশীল নেতাদের মতে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যে ৭ দফা ঘোষণা করেছে, তা নিয়ে যদি আন্দোলনের মাঠে আসে তবে তারা জনসমর্থন পাবে। তাদের নির্বাচনকেন্দ্রিক দাবিগুলোর সাথে বাম প্রগতিশীল দলগুলোর দাবির মিল থাকায় একত্রে এসব দাবিতে রাজপথের আন্দোলনে ঐক্য হতে পারে। শুধু প্রগতিশীল বামদলগুলো নয়, ইসলামী দলগুলোর ঐক্যফ্রন্টের দাবির সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনের মাঠে থাকবে। তাদের বিশ্বাস এ ধরনের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন সরকারকে এসব জনদাবি মানতে বাধ্য করবে।


আরো সংবাদ



premium cement
গ্রিড লাইনের ত্রুটিতে সিলেট বিভাগে বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ভুক্তভোগী নারী ও তার পাশে দাঁড়ানো ব্যক্তিদের হয়রানির প্রতিবাদ বাড্ডায় নারীর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার কথিত স্বামী পলাতক গ্রেফতারকৃতদের পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করবে খতমে নবুওয়ত ঝিনাইদহ-১ আসনে উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নায়েব আলী জাতীয় গ্রিডে ত্রু‌টি, সিলেট বিভাগে বিদ্যুৎ বিপর্যয় ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য ঢাবিতে নিয়মিত ২০ আসন বরাদ্দ রেকর্ড গড়ে সাদিক খান আবারো লন্ডনের মেয়র আগামী ২ মাসের মধ্যে ভাঙ্গা-খুলনা-যশোর পর্যন্ত ট্রেন চালু হবে : জিল্লুল হাকিম ফতুল্লায় ব্যবসায়ী অপহরণ, গ্রেফতার ৭ তাপদাহের কারণে গোসল করতে গিয়ে কলেজছাত্রের মৃত্যু

সকল