২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সময় বলছে ঐক্য

সময় বলছে ঐক্য - ছবি : নয়া দিগন্ত

দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠন, সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে যে ঐক্যের আওয়াজ এখন উঠেছে তা বর্তমান প্রেক্ষাপটে খুব গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ঘটনা। বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের সাফল্যের ইতিহাস রয়েছে। এবারও ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে অতীতের মতো সাফল্য অর্জিত হবে বলে বিশ্বাস জন্মেছে। দেশের রাজনৈতিক গগনে যে হতাশার মেঘ জমেছে, জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়া সেই কালো মেঘকে উড়িয়ে নেবে বলে আশা করা হচ্ছে। যে সংগঠনগুলো একত্র হয়ে ঐক্যের মঞ্চে উঠেছে তাদের সবার মত ও পথ এক নয়। কিন্তু এক দুঃসময়ে তারা ন্যূনতম কর্মসূচিতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে সময় যেন তাদের বলছে ঐক্যের কথা।

যেসব ইস্যুতে সংগঠনগুলো এক ছাতার নিচে একত্র হয়েছে, তেমন ইস্যুতে আরো যেসব সংগঠনের আস্থা রয়েছে তাদের এখানে নিয়ে আসা হলে ঐক্যপ্রক্রিয়া আরো বিস্তৃত এবং মজবুত হবে। দেশের মানুষ রাজনৈতিক অঙ্গনে সাম্প্রতিক যে অগ্রগতি ঘটেছে তাতে তারা আশাবাদী বটে, কিন্তু আরো বৃহত্তর ঐক্য হলে এই আশাবাদ আরো দৃঢ় হতো। সে যা-ই হোক, এর আগে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন হয়েছে, সবাই ভিন্ন ভিন্ন মঞ্চ থেকে যুগপৎ আন্দোলনে প্রায় অভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে গেছে। এখন যে আন্দোলনের সূচনা হতে যাচ্ছে, সেটাও অতীতের সেই ধারা অনুযায়ী হতে পারে।

ঐক্য যত বড় হবে, আন্দোলনে গতিপ্রবাহ ততই জোরদার হবে। আন্দোলন করা হচ্ছে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে। এই মিছিলে সবাই যাতে শরিক হতে পারে সে বিবেচনা করা উচিত। অনেক বড় দল রয়েছে যাদের জনসমর্থন বিরাট, তারা যাতে গণ-অধিকার আদায়ে আন্দোলনে অংশ নিতে পারে সে চিন্তা মাথায় রাখা উচিত। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের পথ কঠিন এবং সরকার এই আন্দোলনের শুভ কামনা করবে না কখনো। তাই ঐক্যপ্রক্রিয়ার শরিকদের এ ব্যাপারে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। যারা ঐক্যপ্রক্রিয়ার সাথে সংশ্লিষ্ট তাদের সবার মত ও পথ এক নয়, তাই এখানে বৃহত্তর স্বার্থেই তারা ন্যূনতম ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। এই অভিযাত্রায় অনেক ছোট খাটো ব্যাপার এড়াতে হবে।

বিরোধী দলের ঐক্য নিয়ে সরকার ফাঁপড়ে পড়েছে। এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি বলেছেন, আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে জাতীয় ঐক্য হবে না। অবশ্যই কিছু জাতীয় বিষয়ে সবার একমত হওয়া উচিত। সেখানে আওয়ামী লীগকেও থাকতে হবে। সেই ঐক্য চেতনায় শরিক হতে সবাইকে বৃহত্তর স্বার্থে ক্ষুদ্র স্বার্থ ত্যাগ করার মানসিকতা থাকতে হবে। দেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন, সুশাসন, মানবাধিকার উন্নয়ন এসব বিষয় নিয়ে জাতীয় ঐক্য হতে পারে। এখন বিরোধী দলগুলোর যে ঐক্য তাতে যদি আওয়ামী লীগ থাকতে চায় তবে যেসব ইস্যুতে এখন ঐক্য হয়েছে সেই নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করা, বর্তমান সংসদ ভেঙে দেয়া- আওয়ামী লীগ যদি এসব বিষয়ে একমত এবং তা কার্যকর করে তবে তো বিরোধী ঐক্যবদ্ধ হওয়া এবং আন্দোলন করার কোনো প্রয়োজনই হয় না।

এসব দাবি মেনে আওয়ামী লীগ সম্মতও হবে না, বিরোধী দলগুলোর আন্দোলন থেকে বিরত হওয়াও সম্ভব হবে না। কেননা, আওয়ামী লীগ দেশ পরিচালনা করছে টানা প্রায় এক দশক ধরে, কিন্তু তারা তো এসব সমস্যার সমাধান করেইনি বরং সৃষ্টি করেছে। তাই বিরোধী দলের যে ঐক্য সূচনা হয়েছে তাতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কথা ওঠে না। আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায় থেকে এটা বলা হয়েছে যে, জনগণ যদি তাদের সমর্থন না করে তারা ক্ষমতায় থাকবে না। সে বিবেচনায় সবাইকে কখনো-না-কখনো বিরোধী শিবিরে যেতে হবে। তাই এখন যেসব ইস্যুতে ঐক্য হয়েছে তা পূরণ হলে সবাই এ থেকে উপকৃত হবে।

ঐক্যপ্রক্রিয়ার পক্ষ থেকে তাদের তৈরি করা ইস্যুগুলো নিয়ে সরকারের সাথে আলোচনার আহ্বান জানানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত তা নিয়ে কোনো জবাব তারা পায়নি। বিরোধী দলগুলোর সাথে আলোচনা করে একটা সমঝোতায় পৌঁছার কোনো আগ্রহ সরকারের আছে বলে মনে হয় না। তাই ঐক্যপ্রক্রিয়াকে শেষ অবধি তাদের ঘোষিত কর্মসূচি নিয়ে ময়দানেই নামতে হবে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা মনে করছেন। আর সেটা ঘটলে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ-উত্তেজনার সৃষ্টি হবে। এর মোকাবেলায় ঐক্যপ্রক্রিয়ার নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা-হামলার আশঙ্কা রয়েছে।

এ দিকে, পত্রিকার রিপোর্টে প্রকাশ, সারা দেশে সেপ্টেম্বর মাসে বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক জোটের নেতাকর্মী ও আইনজীবীসহ তিন লাখ ১৩ হাজার জনের বিরুদ্ধে তিন হাজার ৭৩৬টি মামলা হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, এর মধ্যে কাল্পনিক মামলার সংখ্যা অনেক। এমন কাল্পনিক মামলার কারণে এখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যখন তখন যে কাউকে অভিযুক্ত করে আটক করে ফেলতে পারে। ক্ষমতাসীনেরা যদি মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলনকে এভাবে দমন করতে চায় তবে এর পরিণতি ভালো হবে না। ক্ষমতাসীনদের এটা বোঝা উচিত দেশে অস্থিতিশীল অবস্থার সৃষ্টি হলে তা অর্থনীতি ও উন্নয়ন কার্যক্রমে বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়বে। এখন উন্নয়ন নিয়ে অনেক কথা বলা হচ্ছে। এসব কথার সারবত্তা অনুসন্ধান না করে যদি ইতিবাচকই ধরে নেয়া হয়, তবে সরকারের উচিত হবে বিরোধী দলের সাথে একটা সমঝোতায় পৌঁছার জন্য সংলাপের প্রতি অনুকূল মনোভাব প্রদর্শন করা।

কিছুকাল আগে উগ্রবাদীরা ইসলামের নামে ভ্রান্ত পথ ধরে দেশে অরাজকতা ও হিংসাত্মক পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যথেষ্ট দক্ষতার সাথে এসব উগ্রবাদীকে দমন করতে সমর্থ হয়েছিল। এসব অপশক্তি সব সময় তাকিয়ে থাকে, কখন অরাজকতা সৃষ্টি হয় আর মাথা চাড়া দেয়া যায়। এরা যাতে আর এমন অরাজকতার সুযোগ নিতে না পারে সে দিকে সরকারেরই বেশি সজাগ থাকা উচিত।

সেসব বিষয়ের নিষ্পত্তির জন্য ঐক্যপ্রক্রিয়া সংলাপের কথা বলছে সেগুলো নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি, জাতীয় সংসদ ভেঙে দেয়া। নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে অনেক সময় থেকে। কমিশনের কোনো এক সদস্যের ব্যাপারে এমন অভিযোগ রয়েছে যে, বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন তাদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের পক্ষে কর্মকর্তাদের আন্দোলনে তিনি সক্রিয় ছিলেন। তাই স্বাভাবিকভাবে তার দলীয় সম্পৃক্ততা থাকা এবং আনুগত্যের বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ ওঠা অসঙ্গত নয়। তা ছাড়া এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে এ পর্যন্ত যতগুলো নির্বাচন হয়েছে তার বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তারা সুষ্ঠুভাবে তাদের দায়িত্ব পালনে সমর্থ হননি।

এই পরিপ্রেক্ষিতে কিভাবে তাদের কাছে আশা করা যায় যে, আগামীতে অনুষ্ঠিতব্য গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সাধারণ নির্বাচন তারা দক্ষতার সাথে সম্পন্ন করতে পারবে। অবাধ নির্বাচনের জন্য শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করা একটি অপরিহার্য শর্ত। এখন অবস্থা এমন যে, বিরোধী দলের পক্ষে তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না। সভা সমাবেশ করতে নানা বিধিনিষেধ, রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের অনুমতি চাইলেও তা দেয়া হচ্ছে না। আর নির্বাচনের সময় তো সরকার প্রতিপক্ষের প্রতি আরো কঠোর এবং কঠিন হওয়াই স্বাভাবিক।

এতে করে বিরোধী দল লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবে। এমন অসম পরিবেশে বিরোধী দলের নির্বাচনে যাওয়া বা না যাওয়া সমান। আর সরকার যদি ক্ষমতায় বহাল থাকে তবে সবার সমান সুযোগ সৃষ্টি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা থাকবে না। তাই সরকারকে অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে ক্ষমতা থেকে সরে আসতে হবে। শুধু সরকার ক্ষমতা ত্যাগ করলেই সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।

সংসদকে বহাল রাখার অর্থ সরকারি দলের সদস্যদের প্রশাসনকে প্রভাবিত করে তাদের অনুকূলে কাজ করার ব্যবস্থাকে বহাল রাখা। মন্ত্রী সভা ভেঙে দিলেও কিছু হবে না কেননা মন্ত্রীরা তো সংসদ সদস্য হিসেবে বহাল থাকবেন। সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচনকালীন সরকারের যে ধারণার কথা হচ্ছে। তা বর্তমান সরকারের বহাল রাখারই শামিল। কেননা এই ধারণার মধ্যে রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সংসদের প্রতিনিধিত্বকারীর এমপিদের নিয়েই নির্বাচনকালীন সরকার। আর সংসদে আওয়ামী লীগের বাইরে যারা রয়েছে তারা তো সবাই সরকারি জোটের সদস্য। এই ধারণা দিয়ে তো প্রকৃত অর্থে নির্বাচনকালীন সরকারের সত্যিকার স্বরূপটি ভেসে ওঠে না। বিরোধী দল যে নির্বাচনকালীন সরকারের ধারণা দিয়েছে, সেখানে প্রধানসহ মন্ত্রীসভার অন্য সব সদস্য নির্দলীয় হবেন। এমন সরকার যার পুরো চরিত্রটি হবে নিরপেক্ষ। সবাই যদি প্রশ্নমুক্ত নির্বাচন চান, তাহলে এমন নিরপেক্ষ সরকারের ধারণাকে গ্রহণ না করার কোনো কারণ নেই।

পত্রপত্রিকার খবরে প্রকাশ এখন নির্বাচনের আগে সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীদের সদস্য ও বেসরকারি প্রশাসনের সদস্যদের জন্য আর্থিক সুবিধা বাড়িয়েছে। এমন সিদ্ধান্ত অবশ্যই নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্য করা হচ্ছে। নির্বাচনের দায়িত্ব পালনকালে এসব কর্মকারী সরকারি দলের প্রার্থীদের পক্ষে দুর্বল থাকবে এবং তাদের মদদ দেবে। সরকারপক্ষ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা এবং সুযোগ-সুবিধা যদি এমনভাবে ব্যবহার করে তবে নির্বাচন অবাধ নিরপেক্ষ হবে কিভাবে। আরো জানা গেছে, সরকারি দলের সংসদ সদস্যদের নিজ নিজ এলাকায় বিভিন্ন কাজে ব্যয় করার জন্য রাষ্ট্রীয় অর্থ বরাদ্দ করা হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় সম্পদ কোনো দলবিশেষের নেতাদের জন্য বরাদ্দ করা অনৈতিক। রাষ্ট্রীয় সম্পদ ব্যয় করতে হবে জনগণের জন্য, কারো একক ভালোর জন্য এমন বরাদ্দ দেয়া আমানতদারির পরিপন্থী।

স্বাধীন মতপ্রকাশের অবাধ সুযোগ থাকা প্রতিটি নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। মতপ্রকাশের সুযোগ সৃষ্টি হয় গণমাধ্যমের স্বাধীনতার মধ্য দিয়ে। এখন এই অধিকার খর্ব করার সরকারি উদ্যোগ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। এই নতুন আইন প্রণীত হয়েছে, সংসদে তা পাস করার উদ্যোগ চলছে। সাংবাদিক, সুশীলসমাজ, রাজনীতিক ও মানবাধিকার কর্মীসহ সব মহল থেকে এই আইন পাসের বিরোধিতা করা হচ্ছে। কিন্তু সরকার এই বিরোধিতাকে কানে তুলছে না।

সব মহলের প্রবল আপত্তি উপেক্ষা করা সরকারের অগণতান্ত্রিক মনোভাবের পরিচায়ক। অথচ সরকারের উচ্চমহল থেকে বলা হয়েছে, তারা গণতন্ত্রকে সংহত করার ব্যাপারে কাজ করছেন। এই বক্তব্যের পাশাপাশি তাদের বাস্তব ভূমিকা কিন্তু ভিন্ন। ক্ষমতাসীনদের আচরণের সাথে তাদের বক্তৃতা বিবৃতিতে বিরোধী দলকে যে ভাষায় আক্রমণ করা হচ্ছে সেটাও সৌজন্য শিষ্টাচারের পরিপন্থী। বিরোধী দলের প্রতি এমন বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে পারস্পরিক সম্পর্ক সহাবস্থানের পরিবেশকে বিঘিœত করে। দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নীতি ও আদর্শের বা মত-পথের ভিন্নতা তো অবশ্যই থাকবে। কিন্তু এখনকার মতো জাতীয় ক্রান্তিকালে পরস্পরের মতবিনিময়ের সুযোগ না থাকলে এমন সঙ্কটের সমাধান সম্ভব হবে না। এই পরিবেশ বজায় থাকলে দেশের মানুষ প্রজাতন্ত্রের সম্মানিত নাগরিক হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে সক্ষম হবে না।

নির্বাচনে যে সময় এখন বাকি রয়েছে সে সময়টুকু কাজে লাগিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনের বিরাজমান অসুস্থ পরিবেশ দূর করা উচিত। গত প্রায় দশ বছর থেকে দেশে রাজনৈতিক অঙ্গনে বিরাজ করছে এমন অসুস্থ পরিবেশ। ফলে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো দিন দিন দুর্বল থেকে দুর্বলতর হয়েছে। সংসদীয় গণতন্ত্র এখন বহাল রয়েছে; কিন্তু সংসদ কার্যকরভাবে চলছে না। সংসদ ভালোভাবে চলতে না পারায় জবাবদিহিমূলক শাসন কায়েম নেই। এতে অনিয়ম-দুর্নীতি এখন সর্বত্র জেঁকে বসেছে। জবাবদিহিতা না থাকার অর্থ হচ্ছে সুশাসনের ঘাটতি। এই ঘাটতি নাগরিক জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। রাজনীতির লক্ষ্য যদিও জনকল্যাণ কিন্তু এই লক্ষ্য অনুসরণ করছে না ক্ষমতাসীন দলের একটি বড় অংশ। এমন সব নেতাকর্মী নিজ উদ্দেশ্য হাসিলে ব্যস্ত থাকলে জনগণের কথা ভাববেন কখন? সংসদে এখন কেবল সরকারি দলের সদস্য এবং তাদের পাত্রমিত্ররাই রয়েছেন। তাই সরকারের দুর্বলতা এবং তাদের ভুলত্রুটি ধরিয়ে দেয়ার কেউ নেই।
ndigantababor@gmail.com

 

 


আরো সংবাদ



premium cement