২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পাবনার ১৬ দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর এইচএসসিতে স্বপ্ন জয়

পাবনার ১৬ দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর এইচএসসিতে স্বপ্ন জয়। - নয়া দিগন্ত।

এবার এইচএসসি পরীক্ষায় পাবনার ১৬ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছে। এই প্রথম পাবনা থেকে সর্বোচ্চ ১৬ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধি এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে। তারা ভাল ফলাফল বয়ে আনায় যেন ভবিষ্যৎ জীবনে আলোর দিশা পেয়েছে।

এই ১৬ জন শিক্ষার্থী হলো, নরসিংদী জেলার শিহাবুদ্দিন ভুইয়া পেয়েছে জিপিএ ৪.৮৩, টাঙ্গাইল জেলার আবদুল্লাহ আল আমিন পেয়েছে ৪.০৮, পাবনার মনিরুল ইসলাম ৫.০০, গোপালগঞ্জের ইখতেয়ার মৃধা ৪.০৮, জামালপুরের গোলাপ মল্লিক ৪.৬৭, ব্রাম্মনবারিয়া জেলার শাহাদত হোসেন ৩.৯২, পঞ্চগড় জেলার রোকনুজ্জামান ৩.৫০, দিনাজপুরের আব্দুল আজিজ ৪.২৫, কুড়িগ্রামের ইমরান হোসেন ৩.৫০, টাঙ্গাইল জেলার আবুল কালাম আজাদ ৪.১৭, রাজশাহীর মনিরুজ্জামান ৪.১৭, ময়মনসিংহ জেলার মোজাম্মেল হক ৪.৪২, নরসিন্দীর মোঃ আব্দুল্লাহ-৪.০৮, জয়পুরহাটের মোহাম্মদ আলী ৪.৮৩ এবং বরিশালের হুমায়ুন কবির ৪.২৫ এই ১৬ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পাবনার মানব কল্যান ট্রাষ্টের আশ্রয়ে থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল। এসব যুবক শিক্ষার আলোয় আলোকিত হবার জন্য শ্রুতি লেখকের সহায়তায় পাবনা শহীদ বুলবুল কলেজ, শহীদ এম মনসুর আলী কলেজ ও জাগির হোসেন একাডেমী কেন্দ্র থেকে এইচএসসি পরিক্ষায় অংশ গ্রহন করে।

দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এসব পরীক্ষার্থীরা প্রশ্নপত্রের উত্তর মুখে বলে শ্রুতি লেখকদের শোনান এবং শ্রুতি লেখকরা সেটি লিখে আবার তাদের পড়ে শোনান। একারনে তাদের জন্য তিন ঘন্টার অতিরিক্ত মাত্র ২৫ মিনিট বেশি সময় বরাদ্দ করা হয়েছে। এসময় যথেষ্ট নয় বলে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এসব প্রতিবন্ধীদের এ সংগ্রামে শারিরিক প্রতিবন্ধকতার পাশাপাশি যোগ হয়েছে নানা ধরনের আর্থ-সামাজিক প্রতিকুলতা। সব বাধা ও প্রতিকুলতাকে জয় করে তারা সোনালী ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখছেন এসব দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা।
তাদের লেখাপড়ার জন্য প্রয়োজন ব্রেইল পদ্ধতি। অথচ দেশের অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ সুযোগ নেই। পরীক্ষার জন্য প্রয়োজন শ্রুতি লেখকের। দরিদ্র এসব শিক্ষার্থীর লেখক সম্মানী তো দুরের কথা লেখাপড়ার করার নুন্যতম আর্থিক ব্যয় নির্বাহ করারও সক্ষমতা নেই। তারপরেও থেমে থাকেনি এসব সংগ্রামী দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর শিক্ষা জীবন।

এ ১৬ জন পরীক্ষার্থীর মত আরো প্রায় ৭২ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পাবনার মানব কল্যান ট্রাষ্টের আশ্রয়ে থেকে ব্রেইল পদ্ধতিতে লেখাপড়া করছেন। এছাড়া এ প্রতিষ্ঠান থেকে ১২ জন পথশিশুকে প্রাথমিক শিক্ষা, ৮ জন ৯ম শ্রেণীতে, ১০ম শ্রেণীতে ৭জন, একাদশে ৯ জন, ২ জন এমএ সহ বিভিন্ন শ্রেনীতে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

পাবনা মানব কল্যাণ ট্রাষ্টের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল হোসেন জানান, এ প্রতিষ্ঠানকে সরকারী পৃষ্টপোষকতা দেয়া হলে সারা দেশের দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের সর্বোৎকৃষ্ট শিক্ষালয় হিসেবে গড়ে উঠতে পারে। এজন্য তিনি সবার সুদৃষ্টি কামনা করেন।


আরো সংবাদ



premium cement