২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

অবৈধ ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় স্কুল ছাত্রের মুত্যু 

অভিযক্ত হাসপাতাল। (ইনসেটে) নিহত সাকিব হাসান। - নয়া দিগন্ত।

বগুড়ায় একটি বেসরকারী ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় সাকিব হাসান (১৩) নামের এক স্কুল ছাত্র মারা গেছে। সে শহরের ফয়েজুল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর ছাত্র এবং ফুলদিঘী পূর্ব পাড়ার আব্দুল আজিজ লিটনের পুত্র। বুধবার রাতে শহরের শেরপুর রোডের লাইসেন্স বিহীন ডলফিন ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর প্রশাসন ক্লিনিকটি সিলগালা করে দিয়েছে। তবে ক্লিনিক মালিক জন মন্ডল ও ডাক্তার একে পাল গ্রেফতার হননি ।

নিহতের বাবা লিটন জানান, তার ছেলে সাকিব হাসান পেটের ব্যথায় ভুগছিলেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার পেটে অ্যাপেন্ডি সাইটিস ধরা পড়ে। পরে এক প্রতিবেশীর পরামর্শে বুধবার বিকেলে ছেলেকে তিনি অস্ত্রোপচারের জন্য ওই ক্লিনিকে ভর্তি করান। সেই অনুযায়ী রাত ৮টার দিকে ছেলেকে ক্লিনিকের অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। ডা. একে পাল ছেলেকে অপারেশন করান। অপারেশন থিয়েটার থেকে রাত ৮টা ৪০ মিনিটে ছেলেকে বের করা হয়। তখন ছেলের দেহ নিথর মনে হয়। এভাবে কিছু সময় কেটে যাওয়ার পর তিনি ছেলেকে নিয়ে শহরের কানছগাড়ী এলাকায় অবস্থিত আরেকটি ক্লিনিকে নিয়ে যান। সেখানে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তার ছেলেকে মৃত ঘোষণা করেন। সেখান থেকে ছেলেকে নিয়ে আবার ডলফিন ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যান ।

বাবা আব্দুল আজিজ লিটন ও মা পান্না আকতার অভিযোগ করে বলেন, চিকিৎসকের ভুলের কারণে তাদের ছেলের মৃত্যু হয়েছে। তারা ছেলে হত্যার বিচার চান। এ ঘটনায় তারা সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবেন বলেও জানান।

বৃহস্পতিবার সিভিল সার্জনসহ কর্মকর্তারা ক্লিনিকটি পরিদর্শন করেন। এসময় ক্লিনিকটি সিলগালা করা হয়। এসময় নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মমতাজ মহল উপস্থিত ছিলেন।

সিভিল সার্জন ছামসুল হক জানান, এই ক্লিনিকটি অবৈধ। সরকারী কোন লাইসেন্স নেই। তবে কিভাবে এটা এতদিন চলেছে তা তিনি জানাতে পারেননি। ঘটনা তদন্তে তিন সদস বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এদিকে ঘটনার পর থেকেই ক্লিনিকের মালিক জন মন্ডল ও কর্মকর্তারা পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তার বাড়ী শহরের খান্দার এলাকায়। যোগাযোগ করেও অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. একে পালের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। তিনি বগুড়া মিশন হাসপাতালের সাবেক ডাক্তার।

বগুড়া সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কামরুজ্জামান মিয়া জানান বৃহস্পতিবার দুপুরে ময়না তদন্তের পর বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমক) হাসপাতাল মর্গ থেকে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও লিখিত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাক্ষেপে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement