০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`


মোবাইলে ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব শিক্ষকের : অতঃপর

মোবাইলে ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব শিক্ষকের : অতঃপর - ছবি : সংগৃহীত

নওগাঁ সেন্ট্রাল গার্লস হাই স্কুলের সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে মোবাইলে উত্যক্ত করার অভিযোগ উঠেছে একই স্কুলের সহকারী শিক্ষক বেলাল হোসেনের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর ওই ছাত্রী নিজ মানসম্মান রক্ষা ও এই শিক্ষকের আক্রোশ থেকে বাঁচতে বিদ্যালয় পরিত্যাগের ছাড়পত্র (টিসি) নিয়ে অন্যত্র চলে গেছে। মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে তাকে টিসি দেয়া হয়। আর এ ঘটনার পর অভিভাবকরা তাদের মেয়েদের স্কুলে লেখাপড়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

জানা গেছে, নওগাঁ শহরের সুনামধন্য প্রতিষ্ঠান নওগাঁ সেন্ট্রাল গার্লস হাই স্কুল। নওগাঁ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরেই তার অবস্থান। দীর্ঘ দিন থেকে সুনামের সাথে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয়ে আসছে। তবে সপ্তম শ্রেনীর এক ছাত্রীকে শিক্ষকের অনৈতিক প্রস্তাব দেয়ার পর থেকে অভিভাবকদের মধ্যে তাদের মেয়েদের স্কুলে লেখাপড়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। আর এভাবে চলতে থাকলে অভিভাবকরা তাদের মেয়েদের অন্যত্র পড়াশুনা করাবেন বলেও জানা গেছে।

ভুক্তভোগী ছাত্রী জানান, অর্ধবার্ষিকী ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষা শেষ করে বাস যোগে বাড়ি যাচ্ছিলাম। একই বাসে শিক্ষক বেলাল হোসেনও ছিলেন। বাসের মধ্যে তার কাছ থেকে স্যার নাম্বার নেন। তবে কখনো তিনি ফোন দেননি। গত শনিবার স্কুল চলাকালে স্যার ফোন করে ইসলাম শিক্ষায় কত পেয়েছি জানতে চান। এরপর ফোন কেটে দেন। ওইদিন রাত ১২টার দিকে স্যার আবার ফোন দেন। বিভিন্ন বাজে কথা বলেন। আমাকে ‘মল্লিকা ইন’ হোটেলেও নিয়ে যেতে চান। আমাকে আবার নাকি চুরি করে নিয়ে যাওয়াসহ কুপ্রস্তাবও দেন। এরপর আবার স্কুলে আসতে বলেন। পরদিন আর ভয়ে স্কুলে আসিনি। বাবাকে বিষয়টি খুলে বলি।

ভুক্তভোগীর বাবা জানান, অবাক করার বিষয় একজন শিক্ষক হয়ে তার ছাত্রীকে এমন কুপ্রস্তাব দিতে পারেন। শিক্ষকের মান গিয়ে দাঁড়াল কোথায়। ছোট মেয়ে ভয়ে গত দু’দিন থেকে আর স্কুলে আসেনি। একজন শিক্ষক রাত ১২টার দিকে কেনই বা ফোন দিবেন। ওই স্কুলে বাচ্চাদের পড়াশুনা করানোই এখন দুশ্চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিদ্যালয় পরিত্যাগের ছাড়পত্র দিয়েই কি সব সমস্যা সমাধান হবে? এর একটা বিহিত হওয়া উচিত।

শিক্ষক বেলাল হোসেনের মোবাইলে ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি। এক সময় ফোনটি বন্ধ করে দেন। ফলে তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
নওগাঁ সেন্ট্রাল গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মহাতাফ হোসেন বলেন, এ বিষয়ে কোনো ধরনের অভিযোগ নেই। মেয়ে ও তার অভিভাবক স্কুলে এসেছিলেন। মেয়েও স্কুলে পড়তে চাইছে না। তাকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। স্কুলের কমিটির সদস্যরা আছেন তাদের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে।

নওগাঁ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুশতানজিদা পারভিন জানান, তাকে কেউ বিষয়টি না জানানোর কারণে তার জানা নেই। তবে সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে ক্ষতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরো পড়ুন :
যৌতুকের বলি হলো গৃহবধু

শার্শা (যশোর) সংবাদদাতা
স্বামীর হাতে যৌতুকের বলি হলো গৃহবধু সুমাইয়া (১৯)। সুমাইয়ার মৃত্যুর খবর শুনে মা ছকিনা খাতুন নির্বাক। তার মুখে কোনো ভাষা নেই। দশ মাসের অবুঝ শিশু সন্তান তোহার চিৎকারে বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। তোহা জানে না যে তার মা কোথায়? গত ৭ জুলাই সুমাইয়া খাতুনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঘরের আড়ায় টাঙিয়ে রাখেন তার স্বামী জাহাঙ্গীর হোসেন (বাবু)। প্রচার করতে থাকে সে আত্মহত্যা করেছে।

সুমাইয়া অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী ছিল। স্কুলে যাওয়া আসার পথে পরিচয় ঘটে ঝিকর গাছা বাইশা চাঁদপুর কলনি পাড়ার মুজিবর রহমানের ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন রায়হান (বাবু) সাথে। স্কুলে যাওয়ার পথে বিভিন্ন সময় বিবাহের প্রস্তাব দেয় জাহাঙ্গীর হোসেন রায়হান (বাবু)। এবং রাজি না হলে তাকে এসিড নিক্ষেপের হুমকি দেয়। অসহায় সুমাইয়ার পিতা নির্মাণ শ্রমিক ইসমাইল হোসেন নিরুপায় হয়ে দুশ্চরিত্র জাহাঙ্গীর হোসেন রায়হানের সাথে বিবাহ দিতে বাধ্য হয়। বিবাহের কিছু দিন পর থেকে স্বামী জাহাঙ্গীর হোসেন রায়হান (বাবু) ও শাশুড়ি সখি খাতুনের শুরু হয় যৌতুকের দাবিতে সুমাইয়ার ওপর অত্যাচার নির্যাতন। পিতার বাড়ি থেকে যৌতুক আনার জন্য বিভিন্ন সময় অত্যাচার নির্যাতন চালাতে থাকে। গরিব পিতা নির্মাণশ্রমিক ইসমাইল হোসেন মেয়ের সুখের কথা ভেবে একটি খাটসহ ৭৫ হাজার টাকা যৌতুক দিয়েছেন বলে জানা যায়।

কিন্তু এতেও স্বামী জাহাঙ্গীর হোসেন রায়হান (বাবু) ও শাশুড়ি সখি খাতুনের মন ভরেনি। অভিযোগে প্রকাশ, ঘটনার দিন গত ৭ জুলাই রাতে স্বামী জাহাঙ্গীর হোসেন রায়হান (বাবু)ও শাশুড়ি সখি খাতুন মিলে সুমাইয়া খাতুনকে বেধড়ক মারপিট ও কিল ঘুসি দিয়ে গুরুতর যখম করে। এ সময় ১০ মাসের শিশু সন্তান তোহাকে নিয়ে সুমাইয়া দৌড়ে পালানোর সময় আবার ও গুরুতর আহত করে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, মেয়েটিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ ঐ দিন রাতে সুমাইয়ার লাশ উদ্ধার করে যশোর মর্গে পাঠান। পোস্ট মডেম রিপোর্ট শেষে সুমাইয়ার পিতার বাড়ি ঝিকরগাছা উপজেলার কুন্দিপুর গ্রামে জানাজা শেষে সমাহিত করে। ঘটনার পর থেকে স্বামী জাহাঙ্গীর হোসেন রায়হান(বাবু) ও শাশুড়ি সখি খাতুন পলাতক রয়েছেন।


আরো সংবাদ



premium cement