০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`


জনগণের চিকিৎসাসুবিধা নিশ্চিত করা

-

আমি বারবার লিখছি যে, জনগণের একটি বড় অংশ চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে গিয়ে ফতুর বা নিঃস্ব হয়ে গেছে। একটি অংশ অতিরিক্ত ব্যয়ের জন্য চিকিৎসা নিতেই পারছে না। এ অবস্থার অন্যতম কারণ সরকারি হাসপাতালে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই, সেখানে অনেক সময় ওষুধ কিনতে হয়, সার্জারির ফি দিতে হয়। বিশেষ করে যদি রোগ হয় ক্যান্সার অথবা হৃদরোগ অথবা কিডনির রোগ (যেখানে বারবার ডায়ালাইসিস করতে হয়) তাহলে চিকিৎসা ব্যয় অনেক বেশি হয় এবং ৯৫ শতাংশ রোগী সে ব্যয় বহন করতে পারে না। ফলে তারা সামান্য কিছু সম্পদ থাকলে তা বিক্রি করে চিকিৎসা করে, না হলে চিকিৎসা ছাড়াই এসব রোগী মারা যায়।
সরকারি হাসপাতালে সুযোগ পর্যাপ্ত না থাকায় মানুষকে বাধ্য হয়ে প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়। সরকারি হাসপাতালে আউটডোরের মাধ্যমে ভর্তি হতে হয় এবং এতে অনেক সময় লাগে। অথবা ইমার্জেন্সির মাধ্যমে ভর্তি হতে হয়। সব রোগীকে ইমার্জেন্সি বিভাগ গ্রহণ করে না এই বলে যে, এটা ইমার্জেন্সি বিভাগের রোগী নয়। সিট খালি থাকলে কেউ যদি ভর্তি হতে চায় তবে তাকে ভর্তি করা হয় না, বলা হয় আউটডোর বা ইমার্জেন্সিতে যান।
এখন মূল কথায় আসি। অসংখ্য লোককে আর্থিক ফতুর হওয়া থেকে বাঁচাতে হলে সবার চিকিৎসা ব্যয় রাষ্ট্র কর্তৃক ফ্রি করে দিতে হবে। যদি চিকিৎসা প্রাইভেট হাসপাতালে নেয়া হয়, তাহলে সেই ব্যয়ও সরকার থেকে বহন করতে হবে, কেননা রোগী সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পায়নি। আমি আগেই উল্লেখ করেছি যে, বেশির ভাগ রোগীর সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা বাস্তবে পাওয়া সম্ভব নয়।
সবার জন্য চিকিৎসা ফ্রি করার জন্য নিম্নরূপ ব্যবস্থা নেয়া যায়
সরকার কর্তৃক সবাইকে হেলথ ইন্স্যুরেসের আওতায় আনা যায়। যারা ইন্স্যুরেন্স ফি দিতে পারবে না তাদের ফি সরকার দেবে। প্রত্যেককে একটি স্বাস্থ্য কার্ড ইস্যু করা হবে, যা দেখিয়ে সরকারি হাসপাতাল ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া যাবে। বেসরকারি হাসপাতালে যে বিল হবে তা সরকারকে পরিশোধ করতে হবে। এতে যদি সরকারের পাঁচ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয় তা বর্তমান বাজেটের ১ শতাংশেরও কম। সুতরাং এ ব্যবস্থা না করার কোনো যুক্তি নেই।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ রকম ব্যবস্থা বা এর কাছাকাছি ব্যবস্থা চালু আছে। যেমন যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, নরওয়ে, সুইডেনÑ এসব দেশে একটা হেলথ কার্ড ইস্যু করা হয়। তার ভিত্তিতে সব হাসপাতাল থেকে নাগরিকরা চিকিৎসা নিতে পারে।
একই ব্যবস্থা একটু ভিন্নভাবে ইন্স্যুরেন্স ছাড়াও করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে সরকার প্রত্যেককে একটি হেলথ কার্ড দেবে এবং তার ভিত্তিতে সবাই সবখানে চিকিৎসা পাবে। প্রাইভেট হাসপাতালের বিলও সরকার পরিশোধ করবে এবং যেভাবে আগে বলেছি এতে পাঁচ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয় হবে না।
প্রাইমারি শিক্ষা যেমন সবার জন্য ফ্রি, চিকিৎসাসেবাও সবার জন্য ফ্রি হওয়া দরকার। তা না করা হলে প্রতি বছর কয়েক লাখ লোক আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ কিছু রোগের চিকিৎসা ব্যয় দুই লাখ থেকে ১০ লাখ এবং তারও বেশি।
আমি সরকারকে অনুরোধ করি, এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় যোগ বিয়োগসহ এ ব্যবস্থা কার্যকর করার জন্য। আমি সব রাজনৈতিক দলকেও এই বিষয়টি উপলব্ধি ও গ্রহণের জন্য অনুরোধ করি।হ
লেখক : সাবেক সচিব বাংলাদেশ সরকার


আরো সংবাদ



premium cement
যারা দলের শৃঙ্খলা ভাঙবে তাদের শাস্তি পেতেই হবে : ওবায়দুল কাদের রাজশাহীতে তরুণকে তুলে নিয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগে ৪ পুলিশ প্রত্যাহার চাঁদপুরে পিকআপের সাথে অটোরিকশার সংঘর্ষে বাবা-ছেলে নিহত সুন্দরবনে আগুনের সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে যা জানালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকা-ময়মনসিংহ রেল যোগাযোগ ৪ ঘণ্টা বন্ধ, ভোগান্তিতে যাত্রীরা মধুখালীতে বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু ইসরাইলের রাফাহ অভিযান মোকাবেলায় প্রস্তুতি সম্পর্কে যা জানালো হামাস নিজ্জর হত্যার কানাডায় গ্রেফতার ৩ ভারতীয় যুবকের পরিবার কী বলছে? গাজীপুরে পল্লী বিদ্যুতের সাবস্টেশনে দুর্ধর্ষ ডাকাতি সখীপুরে স্কুল খোলা থাকলেও নেই শিক্ষার্থী, প্রধান শিক্ষকের রুমে তালা বিজয়ের সেঞ্চুরিতে ডিপিএলে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন আবাহনী

সকল