১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪২৯, ০৮ রমজান ১৪৪৫
`

ড. কামালের ঐক্য নিয়ে সংসদে আলোচনার প্রস্তাব তোফায়েলের

ড. কামালের ঐক্য নিয়ে সংসদে আলোচনার প্রস্তাব তোফায়েলের - ছবি : সংগ্রহ

স্বাধীনতাবিরোধী, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সাথে সম্পৃক্ত এবং একুশে আগস্টের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার সাথে সরাসরি জড়িতদের সাথে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করায় গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এবং ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য ও বিএনএফ চেয়ারম্যান এস এম আবুল কালাম আজাদ। গতকাল রোববার জাতীয় সংসদে এই বিষয়টি নিয়ে প্রস্তাব আকারে চলতি অধিবেশনে যেকোনো একদিন বিস্তারিত আলোচনা করার প্রস্তাব করেন তোফায়েল। তবে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিক কোনো সিদ্ধান্ত দেননি।

অধিবেশনে মাগরিবের নামাজের বিরতি ও প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষে তোফায়েল আহমেদ পয়েন্ট অব অর্ডারে ফ্লোর নিয়ে বলেন, ড. কামাল হোসেন নিজেকে সংবিধানপ্রণেতা বলে দাবি করেন। অনেকে তাকে সংবিধানপ্রণেতা বলে থাকেন। আমি নিজেও তৎকালীন গণপরিষদের সদস্য ছিলাম। এখানে উপস্থিত আমির হোসেন আমু ও আমিসহ অনেকেরই সেই সংবিধান প্রণয়নে ভূমিকা ছিল। এই ড. কামাল, যিনি নিজেকে সংবিধানপ্রণেতা দাবি করেনÑ তিনি কী করে সংবিধানপরিপন্থী দাবি করেন? তাদের দাবি সাংবিধানিক নয়। যারা সংবিধানবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত, যারা একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলার সাথে জড়িত, যারা বঙ্গবন্ধু হত্যার সাথে জড়িত, গ্রেনেড হামলার দায়ে যেই দলের নেতাদের ফাঁসির রায় হয়েছে, কারো কারো যাবজ্জীবন দণ্ড হয়েছে, যাকে একটি দলের চেয়ারম্যান হিসেবে অভিহিত করা হয়Ñ সেই নেতার যাবজ্জীবন দণ্ড হয়েছে, তাদেরকে সাথে নিয়ে ড. কামাল কিভাবে ঐক্য করেন? তিনি বলেন, আমরা এটা নিয়ে সংসদে একদিন সময় নিয়ে বিস্তারিত এবং তথ্যমূলক আলোচনা করতে চাই। এটা একটা অশুভ ঘটনা হতে চলেছে। আমরা স্পিকারের অনুমতি নিয়ে যেকোনো একদিন এটা নিয়ে আলোচনা করতে চাই, দেশের মানুষকে অনেক কিছু জানাতে চাই। এর জন্য প্রয়োজনীয় হোমওয়ার্ক করতে চাই। স্পিকার অনুমতি দিলে আমরা ভালো আলোচনা করব।

তোফায়েল আহমেদ তার বক্তব্যের শুরুতে বলেন, ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। স্বাধীনতার পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে চার মূলনীতি গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদ নির্ধারিত হয়। এর ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে আমাদের সংবিধান প্রণয়ন হয়। বঙ্গবন্ধুর ছেড়ে দেয়া আসনে এই ড. কামাল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। 

এর আগে বিষয়টির অবতারণা করে পয়েন্ট অব অর্ডারে বিএনএফ চেয়ারম্যান এস এম আবুল কালাম আজাদ ফ্লোর নিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ড. কামাল হোসেন সংবিধান প্রণয়ন করেছেন। তিনি নিজেকে সংবিধানপ্রণেতা দাবি করেন। কিন্তু সংবিধানের মুখবন্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম রাখা হয়নি। এত দিনে আমরা বুঝতে পারলাম কেন সংবিধানের মুখবন্ধে রাখা হয়নি। ড. কামাল হোসেন মুক্তিযুদ্ধে ছিলেন না, তিনি পাকিস্তানপন্থী ছিলেন। এ কারণেই তিনি উদ্দেশ্যমূলকভাবেই সংবিধানের মুখবন্ধে বঙ্গবন্ধুর নাম রাখেননি। এটা তার অসততা, অসৎ উদ্দেশ্যে ছিল। এই অসততার জন্য ড. কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। 
প্রধানমন্ত্রীর ১০ বছরের সাফল্য নিয়ে আলোচনার জন্যও নোটিশ দেবেন তোফায়েল : পয়েন্ট অব অর্ডারে তোফায়েল আহমেদ স্পিকারের উদ্দেশে বলেন, আমি আরেকটি বিষয়ে এই অধিবেশনে আলোচনার জন্য নোটিশ দেবো। গত ১০ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে অভূতপূর্ব উন্নয়ন ঘটিয়ে দেশকে বিশ্বদরবারে অনন্য স্থানে তুলে ধরেছেন। এই বিষয়টি নিয়েও আমরা আলোচনা করতে চাই।

গ্রামীণফোনের কলড্রপে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি : বাণিজ্যমন্ত্রী তার বক্তব্যে গ্রামীণফোনে কল করার সময় বারবার কলড্রপ হওয়ার ঘটনায় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ডাক ও টেলিযোগযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বিষয়টির অবতারণা করে তোফায়েল বলেন, বেসরকারি খাতে প্রথম ড. ইউনূসকে এই গ্রামীণফোন দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইদানীং লক্ষ করছি আমরা যারা গ্রামীণফোন ব্যবহার করি প্রতিবার কলড্রপ হয়। প্রতিটি কলে ৩-৪ বার কলড্রপ হয়। আমি বহুবার গ্রামীণফোন কর্মকর্তাদের কাছে জানিয়েছি। কোনো কাজ হয়নি। আমরা অনেক সময় দেশে ও বিদেশে গুরুত্বপূর্ণ কল করি। কিন্তু প্রতিবারই কলড্রপ হয়। এটা হতে পারে না। শুধু ব্যবসার জন্য এভাবে কলড্রপ চলতে পারে না। এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে হবে।

সরকারি চাকরিতে মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের সন্তানদের না নেয়ার দাবি : এ দিকে কার্যপ্রণালী বিধির ৭১ বিধিতে আনা এক জরুরি মনোযোগ আকর্ষণ নোটিশে সংরক্ষিত মহিলা আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় সদস্য ফজিলাতুন নেসা বাপ্পী বলেন, রাজাকার, আল বদর, আল শামস আমাদের হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছে। অসংখ্য মা-বোনের ইজ্জত নষ্ট করেছে। রক্তেভেজা এই স্বাধীন দেশে সেই মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের সন্তানদের সরকারি চাকরি হতে পারে না। সরকারি চাকরিতে তাদের নিষিদ্ধ করার দাবি জানান তিনি। 


আরো সংবাদ



premium cement