০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`


সাধ না মিটিল, আশা না পুরিল

-

১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচনের ২৩ বছর পর ১৪ দলীয় সরকারের অধীনে তাদের নিয়োগ করা নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায়, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রশাসন, পুলিশ ও পোলিং অফিসারদের সার্বিক সহযোগিতায় ক্ষমতাসীন দল ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ভোটার ও বিরোধী দলের প্রার্থীবিহীন ভোটকেন্দ্র দখল করে একেকজন শত ভোট দিয়ে ৪০ শতাংশ ভোটে ১৪৬ জন এমপি নির্বাচিত করলেও বাকি ১৫৪ জন নির্বাচনের জন্য তা-ও করার প্রয়োজন পড়েনি। জনগণ ওই নির্বাচন মেনে নিতে বাধ্য হয়েছিল। এই রায় ক্ষমতাসীনদের একই ধরনের নির্বাচন করতে উৎসাহ জোগানোর কারণে পরে সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, জেলা পরিষদ থেকে ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত সব স্তরের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সরকারদলীয় প্রার্থীরা এবং একই গোত্রভুক্ত ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ও নামকাওয়াস্তে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাধ্যমে নৌকার হাল ধরেছিলেন। ফলে নেতাদের দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার নিশ্চিত ব্যবস্থা হয়েছিল। তাদের স্ত্রী, পুত্র, কন্যা ও আত্মীয়স্বজনদের দল ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পদে বসিয়ে আত্মীয়তার সূত্রে ও পদ পদবির জোরে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, দখলবাজি, কমিশনবাণিজ্য, নিয়োগবাণিজ্য ও ভর্তিবাণিজ্যের মাধ্যমে তাদের আঙুল ফুলে কলাগাছে রূপান্তর হতে থাকে। তাদের ক্ষমতায় থাকার সাধ না মেটেনি। তাই যখন তাদের ‘৫ জানুয়ারি মার্কা’ নির্বাচনে জয়ের জন্য দলীয় নেতাকর্মী ও প্রশাসন, পুলিশ ও পোলিং অফিসারদের সার্ভিসকে কাজে লাগাতে হয়, তখন তারা কি বসে বসে আঙুল চুষবে না, নেতাদের গাছের কলা পাকার অপেক্ষায় বসে থাকবে? তাই নেতাকর্মীরা এবং দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তারা বিত্তবৈভব বৃদ্ধির প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েন।

২০১৪ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত পাঁচ বছরে কে কত টাকা কিভাবে কামিয়েছেন তা কেন্দ্রীয় নেতাদের নখদর্পণের থাকায় অর্জিত ধনসম্পদ রক্ষার জন্যই ক্ষমতায় থাকা অপরিহার্য মনে করেছে। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর জিরো আওয়ারে ৪২ হাজার ভোটকেন্দ্র দখল করে শতভাগ অস্বচ্ছ ব্যালট কেটে স্বচ্ছ বাক্স ভরে ৯৭ শতাংশ আসনে এক লাখ থেকে চার লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে ১৪ দলীয় প্রার্থীদের জয় নিশ্চিত করা হয়। এজন্য প্রশাসন, পুলিশ, পোলিং অফিসার এবং দল ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের ২০১৪ সালের মতো ব্যবহার করা হয়েছে। অথচ ২০০৭ সালে নির্বাচনে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ‘কারচুপি করতে পারেন’ এই আশঙ্কায় ওই নির্বাচন বন্ধ করার জন্য তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মইন-উ ও তার দক্ষিণহস্ত সাবেক রক্ষীবাহিনীর ডেপুটি লিডার মাসুদ উদ্দীন চৌধুরীকে কাজে লাগিয়ে ফখরুদ্দীনকে দুই বছরের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ দিতে রাষ্ট্রপতিকে বাধ্য করা হয়েছিল। এই দুই জেনারেল আর কিছু করতে পারুন না পারুন, নির্বাচনী মাঠে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়ে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনের মাধ্যমে ১৪ দল ২৬৫টি আসন লাভের ব্যবস্থা করে দেন। তারা ৩০-০৬-২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী পাসের মাধ্যমে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের সাংবিধানিক গ্যারান্টি ক্লজ, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিধান সংবিধান থেকে মুছে ফেলে ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করার সাংবিধানিক ক্ষমতা গ্রহণ করেন। এর কুফল হচ্ছে ৫ জানুয়ারি ও ৩০ ডিসেম্বর মার্কা নির্বাচন আর ‘সুফল’ হচ্ছে আওয়ামী লীগ+জাপার ক্ষমতায় দীর্ঘকাল থাকার সুব্যবস্থা।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে যথাক্রমে পঞ্চম, সপ্তম ও অষ্টম সংসদ নির্বাচনে বিএনপি যথাক্রমে ১৪৬, ১১৬ ও ২২০টি আসনে জয়ী হয়েছিল। পক্ষান্তরে আওয়ামী লীগ পেয়েছিল যথাক্রমে ৮৮, ১৪৬ ও ৬০টি আসন। আওয়ামী লীগের আন্দোলনের ফসল ফখরুদ্দীন-মইন উদ্দিন সরকারের অধীনে ২০০৮ এবং আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ১৪ দলীয় জোট যথাক্রমে ২৬৫, ২৮৫ ও ২৯২টি আসনে জয়ী হয়; আর বিএনপি জয়ী হয়েছিল যথাক্রমে ৩০টি ও ৬টি আসনে।

২০০৮ সালের নির্বাচনের জয়ের ধারা আরো সংহত করতেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিধান বাতিল করা হয়েছে। অথচ বিরোধী দলে থেকে নির্বাচনে জয় নিশ্চিত করতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগ, জাপা, জামায়াত ও ওয়ার্কার্স পার্টির ১৪৭ জন এমপি ১৯৯৪ সালে সংসদ থেকে পদত্যাগ করে ১৯৯৬ সালের মার্চ পর্যন্ত ১৭৩ দিন হরতাল পালন করেছিল। তৎকালীন সচিব মহিউদ্দিন খান আলমগীরের নেতৃত্বে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদ্রোহ ঘটিয়ে প্রশাসন অচল করে দেয়ায় এবং তাতে তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল নাসিমের নীরব সমর্থন থাকায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে ৩০-০৩-৯৬ সালে বেগম জিয়ার সরকার পদত্যাগে বাধ্য হয়েছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হওয়া সত্ত্বেও জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা আওয়ামী লীগ মাত্র ১৪৬টি আসন পেয়েছিল। বিএনপি ১১৬ ও জাপা ৩২ এবং জামায়াত দু’টি আসন পায়। এই নির্বাচনী ফলাফল আওয়ামী লীগ ও জাপাকে হতাশ করায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার প্রতি তাদের মোহভঙ্গ ঘটে। তবে সংবিধান সংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় ২০০টি আসনের সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করতে না পারায় ২০০১ সালের নির্বাচনে তাদের পরাজয় বরণ করতে হয়। এখন বলা যায়, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের জন্যই ২০০৭ সালের নির্বাচনে ২০০ আসনে জয় নিশ্চিত না থাকায় মনোনয়নপত্র দাখিল করেও পরে প্রত্যাহার করিয়ে নেয়া হয়। ওই নির্বাচনকে ‘একতরফা’ আখ্যা দিয়ে তা বন্ধ করার জন্যই ১/১১ ঘটিয়ে নির্বাচন দুই বছর পিছিয়ে দেয়া হয়েছিল।

সত্য একদিন প্রকাশ পাবেই। জেনারেল মাসুদ ২০১৮ সালের নির্বাচনে ফেনীর একটি আসনে ১৪ দলের জোটভুক্ত, জাপার প্রার্থী হিসেবে তার নির্বাচনী প্রচারণায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অসহযোগিতায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘১/১১’ তে তিনি এগিয়ে না এলে আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মীর পিঠের চামড়া থাকত না। যা হোক, আজ তিনি জাপার এমপি। আরেক এমপি সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন ২০১৮ সালের নির্বাচন সম্পর্কে প্রথমে কী বলেছেন, টিভির কল্যাণে জনগণ তা জানতে পারার সাথে সাথে ক্ষমতাসীনদের গাত্রদাহ শুরু হওয়ায় তারা নৌকা মার্কা এমপি রাশেদ খান মেনন এবং সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি তার স্ত্রীর সংসদ সদস্য পদ বাতিলের হুমকি দেয়া। ফলে তাৎক্ষণিকভাবে তিনিও ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে দাঁড়ান। ক্ষমতার স্বার্থে প্রবীণ নেতারা যেসব করতে পারেন তা এই বাম নেতা ও আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতারা তাদের বক্তব্যে ও পত্রের মাধ্যমে প্রমাণ করছেন। ওয়ার্কার্স পার্টিতে নারী নেতৃত্বের দুর্ভিক্ষ চলায় মেনন সাহেব তার স্ত্রীকে সংরক্ষিত কোটায় এমপি বানিয়েছেন, তাতে দোষের কিছু নেই।

ক্ষমতা থেকে নির্বাচন করার সুবাদে ক্ষমতাসীনদের জয় ১০০% নিশ্চিত থাকায় ক্ষমতায় থাকার মেয়াদ বৃদ্ধির সাধ ও সময় বৃদ্ধি পেয়ে নেতাদের বয়স বিবেচনায় ২০২৮ সালের ডিসেম্বরে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত জয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় প্রবীণ নেতাদের ক্ষমতায় থাকার সাধের সাথে পাল্লা দিয়ে, নির্বাচনের সহায়ক শক্তি দল ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী এবং দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা, পুলিশ ও পোলিং অফিসারদের বিত্তবৈভব বৃদ্ধির প্রতিযোগিতা ২০১৪ সাল থেকেই চলে আসছে। কারো কারো কোটিতে মন ভরে না শত ও হাজার কোটির সাধ। একটি বাড়ি ও একটি গাড়িতে চলে না, অত্যাধুনিক নকশার ১৫-২০টি বাড়ি এবং নিত্যনতুন মডেলের ৮-১০টি গাড়ির লোভ। দেশে বাড়ি করে ও দেশের ব্যাংকে টাকা রেখে স্বস্তি পাওয়া যায় না, বিদেশে বাড়ি করার এবং বিদেশী ব্যাংকে টাকা জমানোর সাধ পূরণের জন্য এ পর্যন্ত সাত লক্ষাধিক কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া এবং মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম তৈরি করা হয়েছে এবং সুইস ব্যাংকে লাখ কোটি টাকা জমা রেখে সাধ পূরণ করা হয়েছে। এই সংক্রামক রোগে সরকারের সচিবরাও আক্রান্ত হওয়ায় তাদের স্ত্রী, পুত্র ও কন্যাদের জন্যও সরকারি গাড়ি জোগানোর ব্যবস্থা হয়েছে। দল পরিচালনার জন্য ক্যাসিনো জুয়ার আসর বসান কেউ কেউ। তাতে আয় রোজগার আশাতীত হওয়ায় বিদেশে জুয়া খেলার সাধ জাগে এবং তা পূরণ হয়েছে। ক্যাসিনোবাজ নেতারা দলীয় তহবিলে কোটি কোটি টাকা দান করেই ক্ষান্ত হননি, প্রভাবশালী নেতাদেরও প্রচুর ধন দান করে করেছেন। গোপনীয়তা বজায় রেখে দানের ঘটনা ঘটায় তা সংগঠনের অভিভাবকদের নজরে আসতে ১০ বছর ৯ মাস সময় লেগে গেছে।

বিরোধী দলের অংশগ্রহণে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর সংসদ নির্বাচনে ১৪ দলীয় জোটের জন্য ২৯২টি আসনে জয় নিশ্চিত করতে পুলিশকে নাশকতার গায়েবি মামলা দায়ের আর আসামি গ্রেফতার নিয়ে বছরব্যাপী পরিশ্রম করতে হয়েছে। তেমনি প্রশাসন ও পোলিং অফিসারদেরও ডিসেম্বর মাসব্যাপী পরিশ্রম করতে হয়েছিল। এ জন্য আর্থিক প্রণোদনা জুগিয়েছিলেন দুর্নীতিবাজ ও দখলবাজ নেতারা এবং ঋণখেলাপি ব্যাংক ও শেয়ারবাজার লোপাটকারী ব্যবসায়ী নেতারা। তাই নির্বাচনের পরেই শুরু হয়েছে ‘প্রতিদান’ দেয়ার পালা। খেলাপি ঋণ ১২ বছরের জন্য পুনঃতফসিল করা হয়েছে যাতে ২০২৮ সাল পর্যন্ত তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারেন। অবশ্য প্রজ্ঞাবান এক ঋণখেলাপি ও শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির হোতা ২০১৫ সালেই তার খেলাপি ঋণ ১৫ বছরের জন্য পুনঃতফসিল করায় ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি এমপি হতে পেরেছেন। মেরুদণ্ড মচকানো ও কোমর ভাঙা বিএনপির বর্তমান হালচাল ও নেতাদের বয়স বিবেচনায় আগামী ২০২৩ ও ২০২৮ সালের নির্বাচনে বর্তমান ক্ষমতাসীনদের জয় অবধারিত বলে প্রতীয়মান হয়।

অনেক সরকারি কর্মকর্তা ‘ক্ষমতার আপন’ বলে ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ পর্যন্ত ফি-স্টাইলে দুর্নীতি করে প্রচুর ধনরাশির মালিক বনে যাওয়া সত্ত্বেও হাতেগোনা কয়েকজনের অর্জিত সম্পদের খবর ঘটনাচক্রে ফাঁস হয়ে পড়ায় দুদক তাদের গ্রেফতার করতে বাধ্য হয়। এতে সরকারি কর্মকর্তারা আতঙ্কিত হয়ে দায়িত্ব পালনকালীন দায়মুক্তির সুরক্ষা দাবি করেন। এতে ‘সরকারের পূর্বানুমতি ছাড়া কোনো কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা যাবে না’ মর্মে আইন পাস করে ১ অক্টোবর থেকে তা কার্যকর করার মাধ্যমে মূলত তাদের ৩০ ডিসেম্বরের প্রতিদান পেয়েছে। সাত হাজার টাকায় বালিশ, ৩৭ লাখ টাকায় পর্দা এবং ১০ কোটি টাকার মেডিক্যাল সরঞ্জাম ৫০ কোটি টাকায় ক্রয়ের সংবাদ আপনা আপনিই ফাঁস হয়ে যাওয়ায় সরকারের জন্য বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

নেতাদের আজীবন ক্ষমতায় থাকার সাধের সাথে তাল মিলিয়ে দলের ও অঙ্গসংগঠনের নেতা, পাতিনেতাদের টাকার ক্ষুধাও অসীম হয়ে পড়ায় টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও কমিশন বাজির কয়েকটি ঘটনায় সেমসাইড ফাউল হয়ে গেছে। অতএব, আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগেই ঢাকা ও চট্টগ্রাম নগরবাসীর দৃষ্টি নৌকামুখী করার জন্য অঙ্গসংগঠনগুলোর অভিভাবক হিসেবে প্রধানমন্ত্রীকে শুদ্ধি অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দিতে হয়েছে। কচ্ছপগতিতে ও বিক্ষিপ্তভাবে চলা শুদ্ধি অভিযানের প্রাথমিক ফলাফলেই বিব্রতকর অবস্থার উদ্ভব হয়েছে। কিন্তু কাকে রেখে কাকে বিশুদ্ধ করা হবে? ১/১১’র ঘটনায়, ৫ জানুয়ারি ও ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ঘোর সমর্থক বুদ্ধিজীবী মহল, সুশীল সমাজ, শুদ্ধি অভিযানের মধ্যে আশার আলো দেখতে পেলেও আমজনতা কোনো আলো দেখছে না। যৌথ পরিবার ও আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে সৌহার্দ্যরে সেতুবন্ধ রাজনৈতিক পরিবারে আজো অটুট থাকায় একই পরিবার থেকে কয়েকজন এমপি, পৌরমেয়র, জেলা, উপজেলা ও ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হচ্ছেন। পনেরো শতকের অটোমান সম্রাট সুলতান সুলেমানের সাথে তার বোনের সংলাপ টিভির কল্যাণে আমরা জানতে পারলেও ‘স্বামীকে রক্ষার জন্য এমপি ভাইয়ের সাথে বোনের সংলাপ’ কোনো দিনই জানা যাবে না। নেতাদের, তাদের আত্মীয়স্বজন এবং দলের ও অঙ্গসংগঠনের নেতাদের ক্ষমতার সাধ ও অর্থবিত্তের ক্ষুধা মেটাতে মেটাতে জনগণের যে সকলি ফুরিয়ে যাচ্ছে। জনগণ বিশ্বাস করতে চায় যে, নেতারা এসবের কিছুই জানতেন না।


আরো সংবাদ



premium cement
হিলি বন্দর দিয়ে ১৪ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রীর ওপর : মন্ত্রী রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায় ওআইসি’র সহযোগিতা চেয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী টর্চার সেলে শিশু-বৃদ্ধদের পেটাতেন মিল্টন : হারুন গাজা ত্যাগ করবে না ইউএনআরডব্লিউএ শৈলকুপায় সাংবাদিক মফিজুলের ওপর হামলা : প্রেসক্লাবের উদ্যোগে মানববন্ধন বিএনপির ভাবনায় ক্লান্ত ওবায়দুল কাদের : রিজভী অনলাইন জুয়ায় ২০ লাখ টাকা হেরে যুবকের আত্মহত্যা আল-জাজিরার অফিসে ইসরাইলি পুলিশের হানা মালয়েশিয়ায় কাল বৃহত্তম আন্তর্জাতিক ধর্মীয় সম্মেলন রাস্তা প্রশস্ত করতে কাটা হবে ৮৫৬টি গাছ

সকল