২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

প্রেসিডেন্টের আদেশের বিরুদ্ধে আদালতে সেনা কর্মকর্তারা কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল

-

কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসনসংক্রান্ত প্রেসিডেন্টের আদেশকে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন দেশটির অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা, সরকারি নীতিনির্ধারকরা। তারা বলেছেন, কাশ্মিরের জনগণের সম্মতি ছাড়াই সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করা হয়েছে। এতে গণতন্ত্রের মৌলিক নীতি, ফেডারেলিজম ও মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে।
সম্প্রতি কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসনসংক্রান্ত সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলবিষয়ক আদেশে স্বাক্ষর করেন প্রেসিডেন্ট রামনাথ কোবিন্দ। এরপরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ পার্লামেন্টে ওই অনুচ্ছেদ বাতিল, সাথে সাথে জম্মু কাশ্মিরকে দেয়া বিশেষ মর্যাদা বাতিল ঘোষণা দেন। এর কড়া নিন্দা জানিয়েছে পাকিস্তান। নিন্দা জানিয়েছেন কংগ্রেসের সদ্যবিদায়ী সভাপতি রাহুল গান্ধী। এবার ভারতের প্রেসিডেন্টের ওই আদেশকে দেশের শীর্ষ আদালতে চ্যালেঞ্জ করলেন ভারতেরই সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও নীতিনির্ধারকরা।
শনিবার এই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে পিটিশন দাখিল করেছেন জম্মু কাশ্মির ইস্যুতে মধ্যস্থতাকারী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একদল সদস্যের সাবেক সদস্য রাধা কুমার। ওই গ্রুপের সদস্য ছিলেন তিনি ২০১০ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত। আরেকটি পিটিশন জমা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব গোপাল পিল্লার। কেরালা ক্যাডারে ভারতীয় প্রশাসনিক সার্ভিসের সাবেক কর্মকর্তা তিনি। আরো যারা পিটিশন দিয়েছেন তার মধ্যে আছেন জম্মু কাশ্মিরে ভারতের প্রশাসনিক সার্ভিস ক্যাডারের সাবেক অফিসার হিন্দাল হায়দার তৈয়বজি, সাবেক এয়ার ভাইস মার্শাল কপিল কাক, অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল অশোককুমার মেহতা ও ভারতীয় প্রশাসনিক সার্ভিসে পাঞ্জাব ক্যাডারের সাবেক অফিসার অমিতাভ পাণ্ডে। এর মধ্যে ইনস্টিটিউট অব ডিফেন্স স্টাডিজ অ্যান্ড এনালাইসিসের উপপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন কপিল কাক। তাদের পক্ষে পিটিশনের খসড়া করেছেন আইনজীবী অর্জুন কৃষ্ণাণ, কৌস্তুব সিং ও রাজালক্ষ্মী সিং। আর এর চূড়ান্ত কাজ শেষ করেছেন সিনিয়র আইনজীবী প্রশান্ত সেন।
আবেদনে বলা হয়েছে, কাশ্মিরের জনগণের সম্মতি ছাড়াই সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করা হয়েছে। এতে গণতন্ত্রের মৌলিক নীতি, ফেডারেলিজম ও মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। এমন আবেদন করা হয়েছে যখন পুরো জম্মু-কাশ্মির অনাকাক্সিক্ষত নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা রয়েছে। সেখানে অতিরিক্ত আধা সামরিক বাহিনীর সদস্য পাঠাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। অভিযোগ উঠেছে, সেখানে মানবিক এক বিপর্যয় সৃষ্টি হতে পারে। মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ফুরিয়ে এসেছে। চিকিৎসা নিতে মানুষ হাসপাতালে যেতে পারছে না। পাকিস্তান অভিযোগ তুলেছে, সেখানে জাতি নিধন শুরু করতে পারে ভারত। মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ আছে। এসব ইস্যুতে এরই মধ্যে জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়েছে। ৫০ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে এ ইস্যুতে পরিষদ বৈঠক করেছে। সেখানে কাশ্মির পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। ভারতীয় মিডিয়ার খবরে বলা হচ্ছে জম্মু-কাশ্মিরের বেশ কিছু এলাকায় কড়াকড়ি শিথিল করা হয়েছে। ভারত সরকার বলছে, এখন পর্যন্ত ওই অঞ্চলে কোনো অঘটন ঘটেনি। বড় আকারে বিক্ষোভ বানচাল করে দিয়েছে সরকার ও পুলিশ বাহিনী।


আরো সংবাদ



premium cement