৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


খাসোগি হত্যায় যুবরাজ জড়িত থাকতে পারেন : ট্রাম্প

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মোহাম্মাদ বিন সালমান -

সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ড নিয়ে মত পাল্টেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার তিনি বলেছেন, এ বিষয়ে সন্দেহ যাচ্ছে সৌদি যুবরাজের দিকে। যদিও আগে তিনি বলেছিলেন তিনি বিশ্বাস করতে চান এই ঘটনায় যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমানের সম্পৃক্ততা নেই।

শুরু থেকেই এ ঘটনায় যুবরাজের সম্ভাব্য সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠলেও হত্যাকাণ্ডে ঊর্ধ্বতন সৌদি নেতৃত্বের সংশ্লিষ্টতার প্রশ্ন নাকচ করে আসছিলেন ট্রাম্প। তবে মঙ্গলবার ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সাথে এক সাক্ষাৎকারে নিজের নতুন মত জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

এর আগে ট্রাম্প সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, বিভিন্ন দিক থেকে সৌদি যুবরাজকে তিনি খাসোগি হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার ব্যাপারে প্রশ্ন করেছেন। জানতে চেয়েছেন, ‘শুরুর পরিকল্পনা নিয়ে মোহাম্মদ বিন সালমান কিছু জানতেন কিনা। জবাবে যুবরাজ বলেছেন, তিনি কিছুই জানতেন না। কারা এটি ঘটিয়েছে, ট্রাম্পের এমন প্রশ্নে সৌদি যুবরাজ বলেছেন, নিম্ন স্তরের কর্মীরা।

এই বক্তব্যের পর ট্রাম্পের কাছে সাংবাদিকরা জানতে চেয়েছিলেন তিনি যুবরাজের কথা তিনি বিশ্বাস করেন কিনা। জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, তিনি বিশ্বাস করতে চান।
তবে এবার সম্ভবত পূর্ববর্তী ধারণা থেকে সরে এসেছেন ট্রাম্প। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পের কাছে সৌদি যুবরাজের সম্ভাব্য সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে ওই পরিস্থিতি নিয়ে যুবরাজই সবচেয়ে তৎপর। তিনিই সবকিছু সামলাচ্ছেন। তো কাউকে সন্দেহ করতে গেলে তার নামটি এসেই যায়।’

ওয়াশিংটন থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক মাইক হানা জানিয়েছেন, খাশোগি হত্যাকাণ্ডে সুনির্দিষ্ট করে যুবরাজের দায়বদ্ধতার প্রশ্নে এটাই ট্রাম্পের সবচেয়ে শক্ত মন্তব্য।

গত ২ অক্টোবর ইস্তম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে ঢুকে আর বের হননি ভিন্নমতাবলম্বী সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগি। বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় তিনি নিহত হয়েছেন এমন খবর প্রকাশ হলেও সৌদি আরবের পক্ষ থেকে বলা হয় খোসোগি কনস্যুলেট থেকে বের হয়ে গেছেন। কিন্তু তদন্তে বের হয়ে আসে যে খাসোগি কনস্যুলেট থেকে বের হওয়ার কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এক পর্যায়ে বিভিন্নি মিডিয়ায় গোপন সূত্রের বরাত দিয়ে খবর প্রকাশ হয় যে, খাসোগিকে কনস্যুলেটের ভেতরেই হত্যা করা হয়েছে। 

তুর্কি পুলিশের তদন্তেও ক্রমশ উন্মোচিত হতে থাকে রহস্য। এক পর্যায়ে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে দুই সপ্তাহ পর সৌদি আরব শিকার করে যে, খাসোগি কনস্যুলেটের ভেতরে হাতাহাতির এক পর্যায়ে নিহত হয়েছেন। কিন্তু তাদের সেই স্বীকারোক্তি হালে পানি পায়নি। তদন্তে জানা যায়, ঘটনার দিন সৌদি আরব থেকে ইস্তাম্বুল যাওয়া ১৫ সদস্যের একটি দল এই হত্যাকাণ্ড ঘটনায়। অত্যন্ত নৃশংসভাবে হত্যার পর খাসোগির শরীর টুকরো টুকরে করে ব্যাগে ভরে দূতাবাস থেকে বের করা হয়। তবে সেই লাশের খোজ এখনো পাওয়া যায়নি।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান বলেছেন, সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে ওই সাংবাদিককে হত্যার নীলনকশা তৈরি করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার তুরস্কের পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে ‘নগ্ন সত্য’ প্রকাশ করতে গিয়ে এ কথা বলেছেন এরদোগান।


আরো সংবাদ



premium cement