১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলকদ ১৪৪৫
`


ট্রেনে ‘বালতি সেবা’

-

বাংলাদেশ রেলওয়ে আমাদের দেশের একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। তবে এই প্রতিষ্ঠানের লোকসান জাতির জন্য বিরাট দুশ্চিন্তার বিষয়। কয়েক দফা ভাড়া বাড়ালেও এর লোকসান পিছু ছাড়ছে না। গত ১০ বছরে রেল খাতে সরকারি খরচ ৩২ হাজার কোটি টাকা, যেখানে আয় মাত্র ৯ হাজার কোটি টাকা। সরকার বন্ধ হয়ে যাওয়া রেললাইনগুলো চালু করেছে। চালু হয়েছে বন্ধ হয়ে যাওয়া অনেক স্টেশন ও ট্রেন। নতুন নতুন রেলপথ নির্মিত হয়েছেও। এত কিছু করার পরও লোকসান থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না রেলওয়ে। লোকসানের পেছনে অন্যতম প্রধান কারণ দুর্নীতি। অনেক কর্মকর্তা ঘুষ-দুর্নীতির সাথে জড়িত; তবুও জবাবদিহিরও কোনো বালাই নেই। নিয়োগবাণিজ্য, তেল চুরি, জমির অবৈধ দখল, টিকিট কালোবাজারিসহ নানা ধরনের দুর্নীতিতে আক্রান্ত বাংলাদেশ রেলওয়ে। ট্রেনের টিকিট কাটতে গেলে শুধু ‘নেই আর নেই’, অন্যদিকে যাত্রীরও অভাব নেই। তাহলে এত টিকিটের টাকা যায় কোথায়? সবাই টিকিট কেটে ট্রেনে উঠছেন কি না সেটিও প্রশ্নের বিষয়! অনেক দিন আগে থেকেই ট্রেনে সিটের পাশাপাশি কিছু চেয়ার, মোড়া কিংবা টুল দেখা গেলেও সম্প্রতি যোগ হয়েছে বালতি সেবা। প্রতি বগিতে ১০ থেকে ১২টি করে বালতি বসানো হয়। এসব বালতিতে বসার জন্য ‘স্ট্যান্ডিং টিকিট’ কাটা যাত্রীদের জনপ্রতি ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত গুনতে হয়। তা ছাড়াও অনেক যাত্রী আছেন, যারা টিকিট ছাড়াই যাওয়া-আসা করছেন। দূরপাল্লার ট্রেনে টিকিট না কেটে ১৫০-২০০ টাকায় বালতি ভাড়া করলেই তারা আরামে যাতায়াত করতে পারেন। ক্ষতির সম্মুখীন হয় রেলওয়ে। আর পকেট ভর্তি হয় অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। স্টেশনে পৌঁছার আগে ট্রেনের গতি যখন কমে যায়, টিকিট না কাটা যাত্রীরা তখনই নেমে যান। এসব প্লাস্টিকের চেয়ার, টুল, মোড়া এবং বালতি থেকে আয় করা টাকা খাবার বগির ঠিকাদার, টিটি, গার্ড, অ্যাটেন্ডেন্ট এবং পুলিশ সদস্যরা ভাগাভাগি করে নেন। সিটের ফাঁকা জায়গায় মোড়া, টুল, প্লাস্টিকের চেয়ার এবং বালতি থাকায় সিটের যাত্রীরা সমস্যায় পড়ে যান। যাত্রীদের দুর্ভোগে ফেলে অবৈধভাবে বালতি ভাড়া দিয়ে অর্থ উপার্জনের বিষয়ে খতিয়ে দেখার জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
রিফাত মাহদী
শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

 


আরো সংবাদ



premium cement