২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জাতিসঙ্ঘের অপর নাম ‘ভীতিসঙ্ঘ’!

-

একটি ঐক্যবদ্ধ বিশ্ব গড়ার জন্য গঠন হয়েছিল জাতিসঙ্ঘ। পৃথিবীর সব দেশকে এক কাতারে এনে একসাথে চলার জন্যই জাতিসঙ্ঘ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে গঠন করা হয় জাতিসঙ্ঘ। জাতিসঙ্ঘের মাধ্যমে আসলে কি সবাই একসাথে থাকতে পারছে? সবাই কি সেখানে সমান অধিকার পায়? আসলেই পাচ্ছে না। বর্তমান পৃথিবীর যে অন্যায় ব্যবস্থা, সেই নিয়মেই চলছে জাতিসঙ্ঘও। অর্থাৎ তেলে মাথায় আরো তেল দেয়া। ধনীরা আরো ধনী হচ্ছে, আর গরিবরা গরিবই হচ্ছে কেবল। শাসকগোষ্ঠী আজীবন শাসন করে যাচ্ছে আর শোষিতরা শোষিতই শুধু হচ্ছে। জাতিসঙ্ঘে গেলেও যারা ক্ষমতাধর রাষ্ট্র তারাই আগে পায় অন্য সব সুবিধা। আসলে এই জাতিসঙ্ঘ কোনো ক্ষমতাধর প্রতিষ্ঠানই নয়। আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া, চীনের মতো রাষ্ট্রের প্রধানদের সামনে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের অবস্থান নড়বড়ে। বিশ্বশান্তি বজায় রাখার মিথ্যা আশ্বাস সেখানে দেয়া হয়, কিন্তু জাতিসঙ্ঘ নামক একটা হাস্যকর প্রতিষ্ঠানের কোনো কর্মকাণ্ড দেখা যায় না। মিয়ানমারের রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়েও তারা বিবৃতি দিয়েছে, কিন্তু কার্যত কিছুই করতে পারেনি। হয়তো সূচির আড়ালে লুকিয়ে আছে বড় কোনো হাত। তাই বিবৃতি দেয়া ছাড়া কোনো কিছু করার ক্ষমতা রাখে না বলেই এর নাম বলেছি ভীতিসঙ্ঘ। ইরাক যখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়, জাতিসঙ্ঘ তখন শুধুই মাইক কাঁপায়। আফগানিস্তানে যখন অনবরত বোমা ফোটে, জাতিসঙ্ঘ তখন টেবিল চাপড়ায়। ফিলিস্তিন যখন ইসরাইল কর্তৃক অগ্নিকুণ্ডে পরিণত হয়, জাতিসঙ্ঘ রাতের আঁধারে প্রশ্রয় দেয়। অন্যথায় টিকবে বা কী করে? একটা সংস্থাকে রেখে কিইবা লাভ তারা যদি ভীতি নিয়েই বসে থাকে। লাভ শাসকগোষ্ঠীর, শোষিতদের নয়। জাতিসঙ্ঘের কাজ সম্পর্কে মাঝেমাঝে দ্বিধায় পড়ে যাই। নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে যে ট্র্যাজেডি ঘটে গেল তা সবার জন্য একটা শিক্ষা। মুসলিম নামধারী হামলা করলে যেমন জঙ্গি হয়ে যায়, তেমনি ‘খ্রিষ্টান জঙ্গি’ কিন্তু বলছে না পাশ্চাত্য। অপরাধীকে তারা মানসিক বিকারগ্রস্ত বলে দাবি করে। তবে জাতিসঙ্ঘের মতোই আরো একটা অকার্যকর সংগঠন হচ্ছে ওআইসি, এদের কাজ কি তা জানি না। সারা বিশ্বে মুসলমানদের নির্যাতনের বিরুদ্ধে তাদের কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না। হোমড়াচোমড়া দেশগুলো থাকে শিয়া-সুন্নি আর তেল-অস্ত্র নিয়ে দ্বন্দ্বে লিপ্ত। আফগানিস্তানের শিশুর একটা ভিডিও দেখা যায় : মেসিকে নিয়ে সে খুব বেশি আসক্ত। তাকে নিয়ে সারা বিশ্বে হৈ-হুল্লোড় শুরু হয়ে গেল, কত নিউজ হলো। মেসির কাছ থেকে জার্সি এলো, বল এলো, সেখানে ইউনিসেফের সিল মারা ছিল। কিন্তু ফিলিস্তিনি যুদ্ধাহত শিশুদেরও এমন কিছু ভিডিও আছে যেখানে তারা গুলি খাওয়ার ভয়ে কিংবা স্বজন হারানোর শোকে কান্নাকাটি করছে। এসব ভিডিও কারো নজর কাড়ে না, হয়তো ভিডিও সামনে এলেও হর্তাকর্তারা ‘ডিলেট’ করে দেন। আর ইউনিসেফ থেকেও কিছু আসে না। ‘ভীতিসঙ্ঘ’ তথা জাতিসঙ্ঘ সম্ভবত তখন দিবানিদ্রায় থাকে।
মাহবুব নাহিদ, ঢাকা


আরো সংবাদ



premium cement