অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে এক হাজার কোটি টাকা চেয়েছে বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশন (বিজেএমসি)। সংস্থাটি দেনা পরিশোধ ও কাঁচাপাট কেনার জন্য এই অর্থ ব্যবহার করবে। তবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ আবেদনে এখন পর্যন্ত সাড়া দেয়া হয়নি বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট এক সূত্র জানায়, গত ১ অক্টোবর বিজেএমসির চেয়ারম্যান ড. মো: মাহমুদুল হাসান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে চলতি অর্থবছরে জরুরিভিত্তিতে পাট কেনার জন্য এ অর্থ চাওয়া হয়। এতে বলা হয়, এই পরিমাণ অর্থ যেন মন্ত্রণালয়ের ‘ঘূর্ণায়মান তহবিল’ থেকে দেয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়, কাঁচাপাটের অভাবে দেশের সরকারি পাটকলগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্ক রয়েছে। বকেয়া পাওনা পরিশোধ না করায় মিল বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় শ্রমিক অসন্তোষ বাড়ছে বলে বিজেএমসির চেয়ারম্যান পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ে লেখা চিঠিতে উল্লেখ করেছেন।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এরই মধ্যে পাটের মওসুম শুরু হয়ে গেছে। নতুন বছরের পাটক্রয় কার্যক্রম শুরু করার জন্য মিলগুলোকে মিলঘাটসহ প্রয়োজনীয়সংখ্যক পাট ক্রয়কেন্দ্রের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। মওসুমে পাট কিনতে না পারলে মিলগুলোর উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাবে। গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দুই অর্থবছরে বিজেএমসির কাছ পাটকলগুলোর মোট ৪৯৫ কোটি পাঁচ লাখ টাকা বকেয়া আছে। তাই এসব বকেয়া পরিশোধ করতে না পারলে নতুন কাঁচা পাট কেনাও সম্ভব নয়।
চিঠিতে বলা হয়েছে, মিলগুলোতে প্রয়োজন অনুযায়ী পাট মজুদ করা হয় না। ফলে অলস শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধ করতেই বরাদ্দ শেষ হয়ে যায়। তাই মওসুমের মধ্যেই পর্যাপ্ত পরিমাণে পাট কিনতে এবং মিলের উৎপাদন অব্যাহত রাখতে জরুরিভিত্তিতে ১০০০ কোটি টাকার বরাদ্দ দেয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।
পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো বিজেএমসির চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত মিলগুলোতে কাঁচাপাটের মজুদ ছিল ৯৪ হাজার ৪৪১ কুইন্টাল। এই পরিমাণ পাট দিয়ে মিলগুলো সর্বোচ্চ ১৫ দিন চালু রাখা যাবে। মান ও গ্রেড ভেদে পাট মজুদ না থাকায় এরই মধ্যে কয়েকটি মিলের উৎপাদন কমে গেছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে মিলগুলোর দৈনিক গড় উৎপাদন ছিল ৪৭১ দশমিক ২৪ টন। কিন্তু গত সেপ্টেম্বর মাসে মিলগুলোর দৈনিক গড় উৎপাদন দাঁড়িয়েছে ২৪৭ দশমিক ৭২ টন।
পাটক্রয় কার্যক্রম পুরোদমে শুরু না করতে পারলে শিগগির মিলগুলোর উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাবে। মিলগুলোর প্রয়োজন (ব্যাচ) অনুযায়ী পাটের মজুদ না থাকায় শ্রমিকদের বসিয়ে বসিয়ে মজুরি দিতে হচ্ছে। এ অবস্থা অবসানের জন্য নতুন মওসুমে পাট ক্রয়ের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বকেয়া মজুরিসহ বিজেএমসির বর্তমান দায়দেনার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৭০৫ কোটি টাকা। রাষ্ট্রায়ত্ত ২৬টি পাটকল বিজেএমসির অধীনে পরিচালিত হয়। এগুলোর মধ্যে ঢাকায় আছে সাতটি, চট্টগ্রামে ১০টি এবং খুলনায় ৯টি। তার মধ্যে একটি নন জুট মিল ছাড়া বাকিগুলো লোকসানি প্রতিষ্ঠান। এসব পাটকলে মোট কর্মচারীর সংখ্যা ৩৫ হাজার ১৬৫।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা