২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ডলার ভাঙালেই লাখপতি

অনূর্ধ-১৫ মহিলা ফুটবল দলের মিয়ানমার সফর কাভার করতে দেশটির মান্ডালা স্টেডিয়ামের সামনে নয়া দিগন্তের সিনিয়র স্পোর্টস রিপোর্টার রফিকুল হায়দার ফরহাদ (বামে) - ছবি : নয়া দিগন্ত

মিয়ানমারে একশত ডলার ভাঙ্গালেই লাখ পতি। একশ শত মার্কিন ডলারের বিপরীতে পাওয়া যায় দেড় লাখ কিয়েত। স্থানীয়রা বলে চিয়াড। যদিও তাদের মুদ্রার মান কম। মিয়ানমারের ১ হাজার টাকা বাংলাদেশের ৬৫ টাকা সমপরিমানের। তবে মার্কিন ডলারের ব্যাপারে খুঁতখুঁত স্বভাব মানি একচেঞ্জ এর দোকান সংশ্লিষ্টদের। এমনকি হোটেল কর্তৃপক্ষেরও।

ডলারের মাঝখানে কোনো ভাজ থাকলে আর নিতে চায়না তারা। কোনো দাগ বা লেখা থাকলে তা তাদের দৃষ্টিতে বাতিলের খাতায়। এ নিয়ে বিপত্তির মুখে পড়তে হয়েছে বাংলাদেশ দল এবং ঢাকা থেকে আসা মিডিয়া কর্মীদের। পরে অবশ্য ফ্রেশ ডলারে বিনিময় পর্ব সম্পন্ন করা।

আরো পড়ুন:

চীনের কাছে হেরে গ্রুপ রানার্সআপ বাংলাদেশ
চীন ৩ : ০ বাংলাদেশ

চূড়ান্ত পর্বের ছাড়পত্র মিলেছিল আগেই। তাই রোববার ‘বি’ গ্রুপের শেষ ম্যাচ ছিল গ্রুপ শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই। গ্রুপ সেরা হিসেবে ফাইনাল রাউন্ডে যেতে জয় দরকার ছিল বাংলাদেশ দলের। অথচ জয়তো দূরের কথা নূন্যতম ড্র’ও করতে পারেনি লাল সবুজরা। উল্টো ০-৩ গোলের হার দিয়ে মিশন মিয়ানমার সম্পন্ন করলো ছোটন বাহিনী। এদিন মারিয়াদের হারিয়ে টানা তিন জয় দিয়ে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ মহিলা ফুটবলের গ্রুপ সেরা হয়েছে চীন।

এটিই ছিল দুই দেশের মহিলা দলের প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ। অন্য দিকে গত দুই বছরে লাল সবুজ অনূর্ধ্ব- ১৫/১৬ দলের এটি দ্বিতীয় হার। গতবছর আগস্টে অনূর্ধ্ব-১৫ সাফের ফাইনালে সর্বশেষ হেরেছিল ভারতের কাছে।


র‌্যাংকিং , গত খেলাগুলোর পারফরম্যান্স এবং আনুসঙ্গিক সব সুযোগ সুবিধার বিচারে লাল-সবুজদের চেয়ে ঢের এগিয়ে চীনারা। তাদের ১৫ র‌্যাংকিংয়ের বিপরীতে মনিকা, তহুরাদের র‌্যাংকিং ১২৫। এরপরও রোববার মিয়ানমারের মেন্ডালার থিরি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ যদি তাদের স্বাভাবিক খেলা উপহার দিতো তাহলে কি তিন গোলের পরাজয় বরণ করতে হতো? হয়তো ম্যাচটি একপেশে না হয়ে আরো আকর্ষনীয় হতো।

আগের দুই ম্যাচে অল আউট অ্যাটাকে খেলা দলটি এদিন চীনের বিপক্ষে প্রথম থেকেই খোলসে ঢুকে পড়ে। নিজেদের অর্ধেই ব্যয় করতে থাকে বেশী সময়। শামসুন্নাহার , মনিকারা তাদের গতানুগতিক খেলা রেখে বিপক্ষ ফুটবলারদের মার্কিংয়েই ব্যস্ত। এই সুযোগে চীন আরো চড়াও হয়। সেপ্টেম্বরে তাদের থাইল্যান্ডে খেলা নিশ্চিত হলেও এই ম্যাচকে মোটেই হালকা ভাবে নেয়নি তারা। বরং মিয়ানমারের বিপক্ষে যে প্রথম একাদশ তারা মাঠে নামায় বাংলাদেশের বিপক্ষেও বজায় ছিল তা। অন্য দিকে বাংলাদেশ আহত ছোট শামসুন্নাহারের পরিবর্তে একাদশে চান্স দেয় মোসাম্মত সুলতানাকে।

শুরুতে বাংলাদেশর মেয়েদের প্রতিরোধে তেমন সুবধিা করতে পারছিল না চীন। ২০১২ এবং ২০১৪ সালের অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে খেলা দলটি শেষ পর্যন্ত সফল হয় ২৯ মিনিটে। ৯নং জার্সীধারী ওয়াং জিং লিং একক প্রচেষ্টায় ডান দিক দিয়ে বল নিয়ে লেফট ব্যাক নীলাকে পরাস্ত করে ঢুক পড়েন বক্সে। এরপর তার কাট ব্যাক থেকে বল পেয়ে ফাঁকা পোষ্টে জালে ঠেলতে কোনো সমস্যাই হয়নি দাই জিন ইয়াওয়ের।


তখন থেকেই ফাঁঠল ধরতে থাকে আঁখি, নাজমাদের গড়া রক্ষণ লাইনে। ৩১ মিনিটে এই দাই জিন একা পেয়ে গিয়েছিলেন গোলরক্ষক রুপনা চাকমাকে। অবশ্য এই মিডফিল্ডারের শট দারুণ দক্ষতায় ঠেকান বাংলাদেশ গোলরক্ষক। ৩৩ মিনিটে ওয়াং জিং লিংয়ের শটেও বাধা হয়ে দাড়ান গোলরক্ষক। তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে (৪৫.৫০ সেকেন্ডে) এই রুপনার ভুলেই মূলতঃ লড়াইয়ের শক্তি হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। চীনের এক ফুটবলারের থ্রু পাসের বল চলে আসে বক্সে। সেই বল ধরতে ছুটে আসেন রুপনা এবং চীনের শাও জি কিন। লাল সবুজ কিপার সেই বল হাত দিলে ধরলেই পারতেন। কিন্তু তিনি তা শটে ক্লিয়ার করতে গিয়ে মারেন শাও জি কিনের পায়ে।

বল এই চীনা দীর্ঘদেহীর পায়ে লেগে গড়িয়ে গড়িয়ে চলে যায় জালে। অথচ মিয়ানমারের বিপক্ষে এভাবে পোষ্ট ছেড়ে বেরিয়ে দলকে রক্ষা করেছিলেন তিনি। বাংলাদেশের রক্ষনভাগকে আতঙ্কের মধ্যে রাখা ওয়াং জিং লিং গোল করানোর পর নিজেও গোল আদায় করেন। ৫৩ মিনিটে থ্রু পাস থেকে বল পেয়ে দলের তৃতীয় এবং নিজের প্রথম গোল দেন আগুয়ান রুপনার পাশ দিয়ে বল পাঠিয়ে। ৬৩ মিনিটে রুপনাকে একা পেয়েও বল বাইরে মারেন শাও জিন কিন।

সারা ম্যাচে বাংলাদেশ একবারই শট নিতে পেরেছিল প্রতিপক্ষের জালে। তা ৮২ মিনিটে। বক্সের বাইরে থেকে অধিনায়ক মারিয়া মান্ডার শটটি চলে যায় বারের উপর দিয়ে। ৭৭ মিনিটে মারিয়ার শটে গতি বেশী থাকায় তা নিয়ন্ত্রনে নিতে পারেননি ফাঁকায় থাকা তহুরা। এর আগে ৩২ মিনিটে তহুরার পাস ঠিক মতো না হওয়ায় গোল বঞ্চিত ছোটনের দল। তখন একেবারে ফাঁকায় ছিলেন মারিয়া।

তিন গোলে পিছিয়ে পড়ার পর রিতু পর্না এবং রোজিনাকে মাঠে নামান কোচ ছোটন। বাম পায়ের খেলোয়াড় রিতু একটি গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন বল তার ডান পায়ে পড়ায়। এরপর তা বাম পায়ে নিলেও ততোক্ষনে চীনের ডিফেন্ডার তার সামনে।


আরো সংবাদ



premium cement