২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

স্বপ্ন আরো বড় ছিল, পূরণ হয়নি...

বিশ্বকাপ
ইগনাশেভিচ - সংগৃহীত

ফুটবলকে বিদায় বললেন রাশিয়ার ডিফেন্ডার সের্গেই ইগনাশেভিচ। দেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত ২১তম ফুটবল বিশ্বকাপের কোয়ার্টারফাইনাল থেকে বিদায় নেয় রাশিয়ার। দলের বিদায়ের পরই ফুটবলকে বিদায় বলে দেন ইগনাশেভিচ। রাশিয়ার হয়ে রেকর্ড সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলেছেন তিনি। ১২৭ ম্যাচে ৮ গোল করেছেন এই ডিফেন্ডার। ২০০২ সাল থেকে জাতীয় দলের হয়ে খেলছেন ইগনাশেভিচ।

নিজের অবসর নিয়ে ইগনাশেভিচ বলেন, ‘গর্ব নিয়েই জাতীয় দলকে বিদায় বলছি। কারণ দেশের মাটিতে দেশের হয়ে বিশ্বকাপ খেলতে পেরেছি আমি। দেশের সেরা দলটি নিয়েই আমরা মাঠে নেমেছি। প্রত্যাশার চেয়ে ভালো পারফরমেন্স করেছি। তবে দুর্ভাগ্য আমাদের, শেষ আটেই নিজের যাত্রা থামিয়ে দিতে হলো। এখন আমার নিজের যাত্রা থামিয়ে দেয়ার সময়। আমার মতে, এটিই সবচেয়ে ভালো মূহূর্ত। দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ না থাকলে আরও আগেই ফুটবলকে বিদায় বলতাম।’

খেলোয়াড়ী জীবনের ইতি টেনে ভবিষ্যতে কোচ হবার লক্ষ্য স্থির করেছেন ৩৮ বছর বয়সী ইগনাশেভিচ। তিনি বলেন, ‘খেলোয়াড়ী জীবন শেষ করলাম। এবার সামনে নতুন লক্ষ্য স্থির করেছি। কোচ হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করতে চাই। এজন্য এখানেও আমাকে ঘাম ঝড়াতে হবে। সেটি করার জন্য আমি প্রস্তুত।’

ইগনাশেভিচ

 

চলতি বিশ্বকাপে রাশিয়ার হয়ে সবগুলো ম্যাচই খেলেছেন ইগনাশেভিচ। তার উপর আস্থা ছিল টিম ম্যানেজমেন্টের। সেই আস্থার প্রতিদান দিতে পেরেছেন বলে মনে করেন তিনি, ‘দেশের হয়ে খেলাটা সবসময়ই গর্বের। আমিও গর্বিত। বিশ্বকাপের মত আসরে নিজের সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করেছি। তবে আমার স্বপ্ন আরো বড় ছিল। কিন্তু স্বপ্ন পূরণ হয়নি। আমার উপর আস্থা রাখার জন্য দল ও ফেডারেশনের সবাইকে ধন্যবাদ।’

জাতীয় দলের পাশাপাশি ক্লাব ফুটবলকেও বিদায় জানিয়েছেন ইগনাশেভিচ। ২০০৩ সাল থেকে রাশিয়ার ঘরোয়া ক্লাব সিএসকেএ মস্কোর হয়ে খেলছেন। অবসরের আগ পর্যন্ত ৩৮০ ম্যাচে ৩৫ গোল করেন তিনি। রাশিয়ান লিগের সিএসকেএ মস্কোর হয়ে ছয়টি শিরোপা জিতেন ইগনাশেভিচ।

 

আরো পড়ুন : পিকফোর্ড ও ম্যাগুয়েরের প্রশংসা ইংলিশ কোচের

ইংলিশ থ্রি লায়ন্সরা যখন রাশিয়া বিশ্বকাপের জন্য তাদের স্কোয়াড ঘোষণা করল প্রাথমিকভাবে। সেই দলে ছিলেন না বর্তমান গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ড। চলতি বিশ্বকাপে দারুণ কিপিং করে ইংলিশদের ভরসার প্রতীক হয়ে গেছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে এভারটনের হয়ে খেলা জর্ডান পিকফোর্ড। ইংলিশ গোলকিপারকে তাই প্রশংসায় ভাসালেন ব্রিটিশ কোচ গ্যারেথ সাউথগেট। পিকফোর্ডকে আধুনিক গোলকিপারদের জন্য আদর্শ এবং তাদেরকে তারই ছায়া অনুসরণ করতে বলেছেন ইংলিশ কোচ। সেমিফাইনালে সুইডেনের বিপক্ষে দারুন কিপিং করেন জর্ডান পিকফোর্ড। ইংল্যান্ডকে তিন-চারটি গোলের হাত থেকে নিশ্চিতভাবে রক্ষা করেছেন এই কিপার। কলম্বিয়ার বিপক্ষেও টাইব্রেকারে পেনাল্টি শুট আউটে ইংলিশদের ত্রাতা ছিলেন এই এভারটনের কিপার। তার এই নায়কোচিত কিপিংয়ের ফলেই ইংল্যান্ড রাউন্ড অব সিক্সটিন থেকে কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নেয় এবং শেষ আটের লড়াইয়ে পিকফোর্ডের কয়েকটি সেভ সুইডেনের বিপক্ষে তাদের ২-০ গোলের জয় নিশ্চিত করে। সামারা এরিনায় পিকফোর্ড দারুণ খেললেও থ্রি লায়ন্সদের হয়ে গোল করে তাদেরকে ২৮ বছর পর বিশ্বকাপ ফুটবলের সেমিফাইনালে নিয়ে যায় হ্যারি ম্যাগুয়ের এবং ডেলে আলীর দু’টি গোল। উভয়ই গোল দু’টি করেছেন হেডের মাধ্যমে। ১৯৯০ সালের পর ইংল্যান্ড শেষ চারে জায়গা করে নিলো বিশ্বকাপ ফুটবলের সেমিফাইনালে এবং এটি তাদের তৃতীয় বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল। শেষ চারে তারা ক্রোয়েশিয়ার মুখোমুখি হবে যারা স্বাগতিক রাশিয়াকে কোয়ার্টার ফাইনালে পেনাল্টি শুট আউটে ৪-৩ গোলে পরাজিত করে শেষ চারে জায়গা করে নিয়েছে। নির্ধারিত সময়ে এবং অতিরিক্ত সময় শেষে পূর্ব ইউরোপে দেশ দু’টির স্কোরলাইন ছিল ২-২।

সাউথগেট পিকফোর্ড ও গোল স্কোরার ম্যাগুয়েরের খেলার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে বলেন, ‘ম্যাগুয়ের তরুণ খেলোয়াড়দের এবং পিকফোর্ড গোলকিপারদের জন্য আমার মনে হয় আদর্শ’। ম্যাগুয়ের সম্পর্কে কোচ আরো বলেন, ‘ইউরোপ ও আন্তর্জাতিক ফুটবলে এখন খেলোয়াড়রা পা দিয়ে বল দখল করা এবং পজিশন ধরে রাখার ওপরই বেশি নির্ভর করে। কিন্তু ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের চিত্রটা কিছু ভিন্ন এবং এখানে ক্রস ও সেটপিসের ওপর নির্ভর করে স্কোরলাইন বাড়াতে চেষ্টা করে ফুটবলাররা। এটি একটু ভিন্ন স্কিল।’ তিনি আরো বলেন, তার ডি বক্সের ভেতর এবং গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কিছু সেভ এবং তার অসাধারণ বল বিতরণ ইংল্যান্ডের জয়ে দারুণ ভূমিকা রেখেছে। কিয়েরেন ট্রিপারকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বলের জোগান দেয়া, গোল লাইনের ভেতর অসাধারণ খেলাটা আমাকে মুগ্ধ করেছে। আমার মতে এ রকম গোলকিপার আধুনিক সময়ের যেকোনো দল চাইবে।’

ম্যাগুয়েরকে নিয়ে এ ইংলিশ কোচ বলেন, রাশিয়া বিশ্বকাপে যত ম্যাচ খেলেছে ম্যাগুয়ের দলের এবং প্রতিপক্ষের গোললাইনের ভেতর সে দুর্দান্ত ভূমিকা পালন করেছে। তার খেলায় আমি দারুণ খুশি। মওসুমের শুরুতে ট্রেনিং সিজনে যখন আমি তাকে দেখতাম, তখন সবসময়ই আমি চাইতাম সে যেন নিজেকে ফিট রাখে এবং বিশ্বকাপের এ পর্যায়ে খেলতে পারে। আমি নিশ্চিত সে নিজেও মনে মনে তাই বিশ্বাস করত। তিনি আরো যোগ করেন, মলদোভার বিপক্ষে যখন সে ইংল্যান্ডের হয়ে অভিষিক্ত হলো তখন তার মাঝে আমি খেলায় ভুল না করা তীব্র ইচ্ছা দেখতে পেয়েছিলাম। সে একজন দারুণ প্রতিভা। সবসময় উন্নতি করতে ইচ্ছুক। সেন্টার ব্যাক হিসেবে এই বিশ্বকাপে বল নিয়ে অন্যান্য সফল সেন্টার ব্যাকের মতোই খেলছে ম্যাগুয়ের। এ পর্যায়ে নিজের ওপর সে বিশ্বাস জন্ম করে নিয়েছে। সেট পিস থেকে বিশ্বকাপের এ পর্যায়ে আমরা গোল করতে পারছি তার জন্য এবং সে যা করেছে তা তার প্রাপ্যই ছিল।

দেখুন:

আরো সংবাদ



premium cement