২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রাখাইনে গোলায় অন্তঃসত্ত্বাসহ ২ রোহিঙ্গা নারী নিহত আইসিজের আদেশ অগ্রাহ্য

-

জাতিসঙ্ঘের সর্বোচ্চ আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে) আদেশ দেয়ার দু’দিন পরই মিয়ানমারের রাখাইনে সেনাবাহিনীর গোলায় নিহত হয়েছেন দু’জন রোহিঙ্গা নারী। তাদের একজন অন্তঃসত্ত্বা। আহত হয়েছেন সাতজন। পার্লামেন্টের সদস্য ও গ্রামের এক বাসিন্দার বরাতে গতকাল এ খবর জানিয়েছে রয়টার্স।
সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় মিয়ানমার সরকারকে আইসিজে চার দফা নির্দেশনা দেয়ার দু’দিন পরেই এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল। উত্তর রাখাইনের বুথিডং শহরতলী থেকে নির্বাচিত পার্লামেন্ট সদস্য মোং কিউ জান বলেন, নিকটস্থ সেনা ব্যাটালিয়ন থেকে ছোড়া ওই গোলা কিন তুয়াং গ্রামে গত শুক্রবার মধ্যরাতে আঘাত হানে। তিনি বলেন, যখন এই কামানের গোলা ছোড়া হয়, তখন কোনো সঙ্ঘাত ছিল না। বিনা উসকানিতেই ওই গোলা নিক্ষেপ করা হয়েছে।
চলতি মাসে এভাবে বেসামরিক লোক হত্যার ঘটনা এটা দ্বিতীয়। মিয়ানমার সেনাবাহিনী এই হামলার দায় অস্বীকার করেছে। বিদ্রোহীদের ওপর দায় চাপিয়ে তারা জানায়, সকাল হওয়ার আগেই একটি সেতুর ওপর হামলা চালানো হয়েছে।
সম্প্রতি ওই অঞ্চল আবার এক উত্তেজনাপূর্ণ এলাকায় পরিণত হয়। সেখানে বিদ্রোহী গ্রুপ আরাকান আর্মির সাথে যুদ্ধ শুরু হয়েছে সেনাবাহিনীর। আরাকান আর্মি হলো ওই রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধদের একটি বিদ্রোহী গ্রুপ। তারা স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে আন্দোলন করছে। এই যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ বাস্তচ্যুত হয়েছে। নিহত হয়েছেন কয়েক ডজন।
এখনো রাখাইনে যে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা অবস্থান করছেন, তারা সেখানে রয়েছেন বর্ণবাদের শিকার মানুষের মতো অবরুদ্ধ হয়ে। তাদের চলাফেরায় স্বাধীনতা নেই। নেই স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা লাভের কোনো সুযোগ। আরাকান আর্মি ও মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর যুদ্ধের মাঝখানে তারা আটকা পড়েছেন। চলাচলে বিধিনিষেধ থাকার কারণে তারা বৌদ্ধ প্রধান অঞ্চল থেকে পালাতে পারছেন না। গত ৭ জানুয়ারি এক বিস্ফোরণে রোহিঙ্গা চার শিশু নিহত হয়। এ জন্য সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মি একে অন্যকে দোষারোপ করে। সর্বশেষ যে দু’জন নারী নিহত হয়েছেন, তাদের বিষয়ে রয়র্টাস বক্তব্য নিতে সেনাবাহিনীর দু’জন মুখপাত্রকে ফোন করে। কিন্তু তারা কোনো উত্তর দেননি।
কিং তাং গ্রাম থেকে প্রায় এক মাইল দূরের আরেক গ্রামে বসবাস করেন সোয়ে তুন ওও। তিনি ফোনে রয়টার্সকে বলেছেন, শুক্রবার মধ্যরাতের ওই গোলাগুলিতে দু’টি বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। সেনারা সব সময়ই ভারী অস্ত্র থেকে গোলা বর্ষণ করে। তারা কোনো এলাকাকে সন্দেহপ্রবণ মনে করলেই পুরো এলাকায় এভাবে গোলা ছোড়ে। ফলে পালিয়ে অন্য কোথাও যাওয়া অসম্ভব।
উত্তর রাখাইনে ২০১৭ সালে সামরিক বাহিনীর ধরপাকড়ে সাত লাখ ৩০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের ওপর হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও নিপীড়ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। জাতিসঙ্ঘ বলছে, গণহত্যার উদ্দেশ্য নিয়েই মিয়ানমার বাহিনী সামরিক অভিযান চালায়।
রাখাইনে রোহিঙ্গাবিরোধী এ আগ্রাসনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের নভেম্বরে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নেদারল্যান্ডের হেগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মামলা করে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া। ডিসেম্বরে শুনানির পর গত ২৩ জানুয়ারি মামলার অন্তর্বর্তী আদেশ দেন আদালত। এতে মিয়ানমারকে রোহিঙ্গা গণহত্যা বন্ধ ও রাখাইনে বাস করা রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেয়া হয়।

 


আরো সংবাদ



premium cement
শিল্পী-সাংবাদিক দ্বন্দ্ব নিয়ে এলো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত যশোর কারাগারে হাজতিদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ব্যাপক আতঙ্ক চিকিৎসার জন্য ঢাকা ছাড়লেন বিএনপি নেতা আমীর খসরু কুষ্টিয়াতে মসজিদ কমিটি নিয়ে সংঘর্ষে আহত ৫ চেয়ারম্যান তপন ও অজিত মেম্বারকে ধরিয়ে দিতে পারলে পুরস্কার ঘোষণা নারায়ণগঞ্জে ২৪ ঘণ্টায় ১৪ ডাকাত সদস্য গ্রেফতার রাজশাহীতে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি ছাড়াল যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশী শ্রমিকদের ভিসা সহজ করার আহ্বান প্রবাসী প্রতিমন্ত্রীর চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী না হয়ে অংশীদার হওয়া উচিত : শি জিনপিং ওকাব সভাপতি নজরুল ইসলাম, সম্পাদক জুলহাস আলম পাবনায় ১০ কোটি টাকার অনিয়মে ৩ ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে

সকল