দায়িত্ব নিতে হবে সিটি করপোরেশনকে
- ১৪ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০
ঢাকার বাসাবাড়ির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়েও ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা বেপরোয়া বাণিজ্য করছে। আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠন বাসাবাড়ি ও রেস্তোরাঁ থেকে ময়লা সংগ্রহ বাবদ হাতিয়ে নিচ্ছে প্রায় সাড়ে চার শ’ কোটি টাকা। সহযোগী একটি দৈনিকে ক্ষমতাসীন দলের এ বেপরোয়া বাণিজ্যের খবর বিস্তারিত প্রকাশ করেছে। রাজধানীর বাসিন্দারা এ বাণিজ্যের শিকার। কারণ বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজটি সঠিকভাবে হচ্ছে না। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী বাসিন্দাদের কিছু করারও থাকছে না। তারা দলীয় লোকদের কাছে জিম্মি হয়ে রয়েছে। পত্রিকাটি জানাচ্ছে, দেশের অন্য দু’টি প্রধান শহরে সিটি করপোরেশন নিজে এ দায়িত্ব পালন করে। এ ব্যাপারে সেখানে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সরকার চাইলে সিটি করপোরেশনের মাধ্যমে রাজধানী ঢাকার বাসাবাড়ি ও রেস্তোরাঁর বর্জ্য ব্যবস্থানায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে মানুষের হয়রানি বন্ধ করতে পারে।
বাসাবাড়ির বর্জ্য সংগ্রহ নিয়ে রাজধানীবাসী দীর্ঘ দিন অভিযোগ করে আসছে। বাসাবাড়ি থেকে সময়মতো ময়লা সংগ্রহ করা হয় না। ময়লা নেয়া হয় না নিয়মিত বিরতিতে। পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের আসার জন্য কয়েক দিন অপেক্ষায় থাকতে হয়। বাসাবাড়িতে এ সময় ময়লা উপচে পড়ে। কয়েক দিন জমে থাকার কারণে ময়লা পচে দুর্গন্ধ হয়ে পরিবেশ বসবাসের অনুপযোগী হয়ে যায়। অন্য দিকে সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত মাসিক ফি বাসাপ্রতি ৩০ টাকা বেঁধে দেয়া হলেও স্থানভেদে এর ১০ গুণ বেশিও আদায় করা হচ্ছে। একই অবস্থা রেস্তোরাঁর আবর্জনা সংগ্রহের ক্ষেত্রেও। ফি বাড়ানোর ক্ষেত্রেও কোনো ধরনের নিয়মকানুন মানা হয় না। লাফিয়ে লাফিয়ে আবর্জনা সংগ্রহের ফি বাড়ানো হয়। এ ব্যাপারো কিছু বলার সুযোগ রাখা হয় না। ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় প্রভাবশালীরা সামাজিক সংগঠনের আড়ালে ময়লা সংগ্রহের কাজ করে। তাদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বাসিন্দাদের কেউ কথা বলবে, সে সুযোগ নেই। কোনো ধরনের অভিযোগ জানানোর কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে ঢাকাবাসী জিম্মি হয়ে আছে। খবরে জানা যাচ্ছে, ঢাকার প্রায় ২৪ লাখ ফ্ল্যাট থেকে বছরে আয় করে নিচ্ছে ৪৩২ কোটি টাকা। অন্য দিকে সাত হাজার রেস্তোরাঁ থেকে তারা বছরে আয় করছে ১৭ কোটি টাকা। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ, মহিলা লীগ, ছাত্রলীগ, কৃষক লীগ ও মৎস্যজীবী লীগের নেতারা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছে। এর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ক্ষমতাসীনদের মধ্যে জোরজবরদস্তিও হয়। একটি সিন্ডিকেটকে পরাজিত করে অপর সিন্ডিকেট এর নিয়ন্ত্রণ নেয়। কিন্তু মানুষের জিম্মিদশা আগের মতোই রয়ে যায়।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব স্বভাবতই সিটি করপোরেশনের হওয়ার কথা। ঢাকার দুটো সিটি করপোরেশন এ ব্যাপারে নির্লিপ্ত। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বাণিজ্যে পরিণত হওয়ার পেছনে বরং তাদের হাত রয়েছে। দলীয় লোকদের সুবিধা দিতে সিটি করপোরেশন নিজেই এ পথ তৈরি করে দিচ্ছে। অন্য দিকে রাজশাহী ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ময়লা ব্যবস্থাপনা নিজেদের উদ্যোগে করছে। সেখানে একটা শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দুটি নগরীর বাসিন্দারা এ নিয়ে ভোগান্তিতে পড়ছে না। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে রাজধানীর বাসিন্দাদের ভোগান্তি কমানোর উদ্যোগ সিটি করপোরেশনকে নিতে হবে। এ কাজটি সিটি করপোরেশন একা করতে পারবে না ক্ষমতাসীনদের চাপের কারণে। সে জন্য সরকারকে ব্যাপারটিতে ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। আমরা মনে করি, ঢাকাবাসীর দ্ইু কোটি মানুষের ভোগান্তি লাঘবে শিগগিরই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা