২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
  কারা ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি

সংশোধনাগার হয়ে গেছে অপরাধীর আখড়া

-

অপরাধ করার পর মানুষের ঠাঁই হয় কারাগারে। আর কারাগারের ব্যবস্থাপনা হবে স্বচ্ছ-সুষ্ঠু। সেখানে থাকবে না কোনো অন্যায়-অনিয়ম, যাতে অপরাধীদের মনে তাদের কৃত অপরাধের জন্য ঘৃণা জন্মে। তাদের মনে জাগে অপকর্মের জন্য অনুশোচনা। কারাগার তাই সংশোধনাগার। বাংলাদেশের কারগারগুলোর ব্যবস্থাপনা ঠিক এর উল্টো। অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা-দুর্নীতি সেখানকার জন্য সাধারণ একটি ব্যাপার। কারা ব্যবস্থাপনার সাথে যারা জড়িত তারা নিজেরাই জড়িয়ে পড়ছেন দুর্নীতির সাথে। আর যারা কয়েদি তাদের মধ্যে একটি শ্রেণী রয়েছে, যারা প্রকাশ্যে দুর্নীতি-অনিয়ম করে। তাদের রয়েছে একটি বিশাল সিন্ডিকেট। কারা প্রশাসনও জড়িয়ে যাচ্ছে এ সিন্ডিকেটের সাথে। ফলে অপরাধীদের সংশোধনের বদলে কারাগার যেন হয়ে উঠছে অপকর্ম চর্চার একটি আখড়া।
কারা প্রশাসনের ওপরের স্তরের কর্মকর্তারা সরাসরি জড়িয়ে পড়ছেন দুর্নীতির সাথে। সিলেটের কারা উপ-মহাপরিদর্শক পার্থ গোপাল বণিকের কাছে সম্প্রতি বিপুল অর্থ পাওয়া গেছে। কারাগারের এ ব্যবস্থাপক এখন নিজেই কারাগারে। দুর্নীতি দমন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২৬ অক্টোবর চট্টগ্রাম কারাগারের জেলার সোহেল রানা বিশ্বাস বিপুল অর্থসহ আটক হন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি তদন্ত কমিটি কারা বিভাগের ৪৯ কর্মকর্তা-কর্মচারীর দুর্নীতির তথ্য পায়। ওই প্রতিবদেন নিয়ে দুদক অনুসন্ধানে নেমে বিভাগের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের অনিয়ম পাচ্ছে। কয়েদিদের নিয়ে কারাগার যে আসলে একটি বাণিজ্যের জায়গা হয়ে গেছেÑ সেটি বহু আগের খবর, কিন্তু জানা ছিল না একেবারে শীর্ষ কর্মকর্তারা ঠিক এভাবে জড়িয়ে পড়েছেন। কারাগারে কিছু কয়েদি আছেন, তারা আর বাইরে আসতে চান না। কারণ, তারা সেখানে গড়ে তুলেছেন অপরাধী সিন্ডিকেট। অর্থের বিনিময়ে কয়েদিদের তারা বিভিন্ন সুযোগ পাইয়ে দেন। টাকার বিনিময়ে কয়েদিরা অনিয়ম-অন্যায়ও করতে পারেন। এ সুযোগে সিন্ডিকেট কোটি কোটি টাকা কামাই করে। কারাগারের অনিয়ম কতটা বিস্তৃতি লাভ করেছে ফেনী কারাগারের সঙ্ঘটিত একটি ঘটনা থেকে বোঝা যায়।
সহযোগী একটি দৈনিক রিপোর্ট করেছে, ফেনী কারাগারে ঢুকে কয়েদিদের হুমকি-ধমকি দিয়েছে প্রতিপক্ষ। একপক্ষের সাথে খোদ পুলিশও ছিল। কারাগারের দুই হাজতি অভিযোগ করেছেন, কনডেম সেলে থাকা অবস্থায় তাদের প্রতিপক্ষ ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা বাইরে থেকে গিয়ে তাদের হুমকি দিয়েছে। তাদের এ বলে সেখানে শাসানো হয় যে, মামলায় তারা যেন জামিন না করায়; জামিন করালে জেলখানা থেকে বের হওয়ার পর তাদের একরাম চেয়ারম্যানের মতো পুড়িয়ে হত্যা করা হবে। কনডেম সেলে থাকা দু’জনও ফেনী যুবলীগের সাবেক নেতা। কনডেম সেলে ফাঁসির আসামিদের রাখা হয়। এরা ফাঁসির আসামি ছিলেন না। তারা বর্তমান ফেনীর এমপি নিজাম হাজারীর প্রতিপক্ষ গ্রুপের পুরো ভাগে রয়েছে। ঘটনার সুনির্দিষ্ট বিবরণ দিয়ে তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অভিযোগও দায়ের করেছেন।
অপরাধীদের সংশোধন বাংলাদেশের কারাগারে হচ্ছে না। বরং কারাগারের পুরো ব্যবস্থাপনা আকণ্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হচ্ছে। একজন অপরাধী সাজা ভোগের পর ভালো মানুষ হয়ে যাচ্ছে, এমন দেখা যাচ্ছে না। অপরাধীদের দেখা যাচ্ছে বরং আরো বেপরোয়া হয়ে উঠতে। এটা কি কারা-ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম-দুর্নীতির ফল, তা ভাবার সময় এসেছে। ফেনীর কারাগারে দেখা যাচ্ছে ক্ষমতাসীন দলেরই প্রতিপক্ষ গ্রুপের সদস্য ফাঁসির আসামি না হয়েই জায়গা হয়েছে কনডেম সেলে। প্রাণসংহারের হুমকি দেয়া হচ্ছে একেবারে কারা অভ্যন্তরে ঢুকে। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা থাকলে এমন হওয়ার কথা নয়। কারা ব্যবস্থাপনা ঢেলে সাজানোর প্রয়োজন দেখা দিয়েছে, আরো প্রয়োজন অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করা। কারা ব্যবস্থাপনাকে দুর্নীতিমুক্ত না করে সেটি কোনোভাবে সম্ভব নয়।


আরো সংবাদ



premium cement
নোয়াখালীতে প্রবাসীর স্ত্রীর ব্যক্তিগত ছবি দেখিয়ে চাঁদা আদায় দেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে, অথচ বিরোধী দল দেখে না : কাদের আশুলিয়ায় বাঁশবাগান থেকে নারী পোশাক শ্রমিকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার মিয়ানমারের কর্মকর্তারা ফেরত গেলেন, কিন্তু রোহিঙ্গা সঙ্কট কি আরো জটিল হচ্ছে দিনাজপুরে দুই ট্রাকের সংঘর্ষ, চালক-হেলপার নিহত মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২ সখীপুরে বৃষ্টির জন্য অঝোরে কাঁদলেন মুসল্লিরা দক্ষিণ ভারতে কেন কাজ করেনি বিজেপির হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের নতুন আংশিক কমিটি বাংলাদেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসায় বিনিয়োগ সম্ভাবনা অন্বেষণে থাইল্যান্ডের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান ট্রাম্পের বিচার নিয়ে বিভক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট

সকল