০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫
`


কাদিয়ানিদের জলসা নিয়ে উত্তেজনা

হামলা ভাঙচুর অনাকাক্সিক্ষত

-

পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের বার্ষিক জলসা অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে অনাকাক্সিক্ষত উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার মধ্যরাতে একদল উত্তেজিত জনতা আহমদনগরে বিচ্ছিন্ন হামলা চালিয়েছে। বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে তারা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এতে আহমদিয়াদের দাবি মতে, ৪০ জন সদস্য আহত হয়েছেন। এ ধরনের সহিংস ঘটনা সমর্থনযোগ্য নয়। সাম্প্রদায়িক পরিচিতি নিয়ে উত্তেজিত হয়ে আবেগবশত হামলার ঘটনা অগ্রহণযোগ্য। তবে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের প্রচারিত বিশ্বাস নিয়ে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর আপত্তির দিকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। এ ব্যাপারে বেশির ভাগ মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাস ও চেতনাকে আঘাত করা হলে সেটির যথোচিত বিহিত হওয়া দরকার।
কুরআনের ৩৩ নম্বর সূরা আহজাবের ৪০ নম্বর আয়াতে খতমে নবুওয়াত সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘মুহাম্মদ তোমাদের মধ্যে কোনো পুরুষের পিতা নন; বরং আল্লাহর বার্তাবাহক এবং খাতামান্নাবিয়িন (সর্বশেষ নবী)। আর আল্লাহ সব বিষয়ে অবগত।’ আল্লাহর দেয়া বক্তব্যটির ওপর বিশ্বাস নিয়েই মূল প্রশ্ন। মুসলিমরা মনে করেন বিনা প্রশ্নে আল্লাহর বাণীকে বিশ্বাস করে নিতে হবে। আহমদিয়াদের ব্যাপারে বৃহত্তর মুসলিম সম্প্রদায়ের অভিযোগ, তারা কুরআনের ‘খতমে নবুওয়াত’ বিষয়ে বিশ্বাস করে না। অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি)-এর ফিকাহ কমিটি দু’টি সম্প্রদায়ের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিয়েছেÑ সেটি হচ্ছে গোলাম আহমদ কাদিয়ানির নামে যে ধর্মীয় সম্প্রদায় রয়েছে, ‘তারা মুসলিম নয়’। ধর্মীয় সম্প্রদায় বাহায়িদের ব্যাপারেও ওআইসি ফিকাহ বোর্ড একই সিদ্ধান্ত দিয়েছে।
মুসলমানদের ক্ষুব্ধ হওয়ার ব্যাপারটি হচ্ছে, কাদিয়ানিরা একজন ব্যক্তির নামে প্রতিষ্ঠিত এবং ধর্মীয় সম্প্রদায় হবার পরও নিজেদের ‘মুসলিম’ দাবি করছে। এ ধরনের দাবি মূল ধর্মীয় আকিদার ব্যাপারে বিভ্রান্তির জন্ম দিচ্ছে বলে ধর্মীয় পণ্ডিতগণ মত ব্যক্ত করেছেন। এ জন্য অনেক ধর্মীয় সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে, রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তাদের অমুসলিম ঘোষণা করা হোক। দুর্ভাগ্য হচ্ছে, মূল বিষয়টির আজো সুরাহা করা হয়নি। বরাবরই বাংলাদেশের জন্য একটা বড় ইস্যু হচ্ছে কাদিয়ানি প্রসঙ্গ। অনেকের মতে, কাদিয়ানিরা নিজেদের একটি আলাদা সম্প্রদায় হিসেবে ঘোষণা দিলে আর বিভ্রান্তি থাকে না।
কাদিয়ানিদের নিয়ে অনেকবার উত্তপ্ত আন্দোলন হতে দেখা গেছে। এই আন্দোলন-সংগ্রামে প্রতিবার একটি মহল বাংলাদেশের মুসলমানদের ‘সাম্প্রদায়িক’ হিসেবে চিত্রিত করার চেষ্টা করেছে। এবার একটি জলসাকে কেন্দ্র করে এই উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। এটা জানা কথা, কাদিয়ানিদের এ ধরনের জলসা আয়োজন করতে দিলে ধর্মীয় উত্তেজনা দেখা দেবে। কারণ, বাস্তবতা হলোÑ দেশের ৯০ শতাংশ মানুষের ধর্মীয় চেতনা তাদের সাথে মিলছে না। যুক্তিযুক্ত কথা হচ্ছে, সমাজে অন্যান্য সম্প্রদায়ের মতো তারাও ধর্মীয় অনুষ্ঠান করতে পারবেন, যদি তারা আলাদা ধর্মমত হিসেবে নিজেদের অবস্থানের বিষয় স্পষ্ট করেন।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে পঞ্চগড়ের জলসা বন্ধ করার কথা জানানো হয়েছে। আন্দোলনের নেতাদের সাথে আলোচনার পর তারা এ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিছু সংগঠনের পক্ষ থেকে এরপরও সহিংস কর্মকাণ্ড সমর্থনযোগ্য নয়। মানুষের সম্পদ ও প্রাণের ওপর যে হামলা হয়েছে, সেটি কোনোভাবেই ইসলাম সমর্থন করে না। এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন ও সংযত হতে হবে এবং সব পক্ষকে সহিষ্ণুতার পরিচয় দিতে হবে।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement
বাংলাদেশ-সৌদি আরবের যৌথ উদ্যোগে ইউরিয়া সার কারখানার সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সম্পন্ন আগামী ২ বছর উন্নয়নশীল এশীয় অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ৪.৯ শতাংশ থাকার আশা এডিবি প্রেসিডেন্টের চুয়াডাঙ্গায় আগুনে পুড়ে পানবরজ ছাই মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ, রিমান্ডে নেয়া হবে : ডিবি বৃহস্পতিবার সারা দেশের স্কুল-কলেজ বন্ধ ভূরুঙ্গামারীতে চিকিৎসকের কপাল ফাটিয়ে দিলেন ইউপি সদস্য ‘পঞ্চপল্লীর ঘটনা পাশবিক, এমন যেন আর না ঘটে’ টি২০ বিশ্বকাপের পিচ পৌঁছেছে নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামে হাসপাতালে ভর্তি খালেদা জিয়া কমলাপুর স্টেশনে ট্রেন থেকে লাশ উদ্ধার মোরেলগঞ্জে বৃদ্ধের ফাঁস লাগানো লাশ উদ্ধার

সকল