২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

প্রচারণার শুরুতেই সহিংসতা উদ্বেগে  কূটনীতিকরা

প্রচারণার শুরুতেই সহিংসতা উদ্বেগে  কূটনীতিকরা - সংগৃহীত

নির্বাচনী প্রচারণার প্রথম দিন থেকেই দেশব্যাপী রাজনৈতিক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন ঢাকায় অবস্থানরত বিদেশী কূটনীতিকরা। তাদের মতে, এ অবস্থা চলতে থাকলে নির্বাচনের দিন সাধারন মানুষ ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিরাপদে ভোট দিতে আস্থা পাবে না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নির্বাচন কমিশন কি ভূমিকা নেয়, সরকার কমিশনকে কতটা সহায়তা করে - তার ওপর নজর রাখা হচ্ছে।

একাধিক পশ্চিমা কূটনীতিক নয়া দিগন্তের সাথে আলাপকালে বলেন, নির্বাচন সংক্রান্ত সহিংতা দেখতে কেউ পছন্দ করে না। কিন্তু চলমান পরিস্থিতি উদ্বেগ সৃষ্টি করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানে কমিশন কি কি পদক্ষেপ নেয় - তার ওপর সবার নজর থাকবে। ১০ কোটি ৪০ লাখ ভোটারের অংশগ্রহণে নির্বাচন অনুষ্ঠান অবশ্যই একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ। নির্বাচন কমিশনকে তাদের সক্ষমতার পরিচয় দিতে হবে।

তাদের মতে, চলতি বছর নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ করছে। নির্বাচন হচ্ছে অংশগ্রহণমূলক। একটি ভাল লক্ষণ। তবে নির্বাচনের আগের দিনগুলোতে সহিংসতা ছড়িয়ে পরাটা উদ্বেগজনক। কেননা এতে নির্বাচনের দিন সাধারন মানুষ ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিরাপদে ভোট দেয়ার আস্থা হারাবে। বিশেষ করে নারীরা ভোটকেন্দ্রে যেতে উৎসাহিত হবে না। এটি ভোটার সংখ্যার (টার্নওভার) ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

সম্প্রতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদার সাথে সাক্ষাত শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপাকালে নবনিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলার নির্বাচনে সবার শান্তিপূর্ণ আচরণ প্রত্যাশা করে বলেন, রাজনৈতিক দলসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে শান্তিপূর্ণ আচরণ করতে হবে। সবাই যেন সহিংসতা থেকে দূরে থাকে। কেননা, সহিংসতা গণতন্ত্রের পথে বাধা। যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, সহিংসতা শুধু তাদের উদ্দেশ্যই পূর্ণ করে।

রাষ্ট্রদূত বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১০ কোটি ৪০ লাখ ভোটার অংশ নেবেন। আমরা সবাই এই নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছি। অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিশ্রুতি পূরণকে যুক্তরাষ্ট্র উৎসাহিত করে।

গত বৃহস্পতিবার মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদে সর্বসম্মতভাবে পাস হওয়া প্রস্তাবে বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে। এতে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটারদের ইচ্ছাকে সম্মান জানাতে এবং ভোটারদের বাধাহীন অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল ও বিচারিক কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

কংগ্রেস বাংলাদেশের নির্বাচন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং রোহিঙ্গাদের নিয়ে চারটি প্রস্তাব করেছে। প্র্রথম প্রস্তাবে কংগ্রেস সদস্যরা বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। দ্বিতীয় প্রস্তাবে মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতি বাংলাদেশের সরকারকে শ্রদ্ধা দেখানোর আহ্বান জানানো হয়েছে। তৃতীয় প্রস্তাবে ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে - তা নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে। আসন্ন নির্বাচন নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হওয়ার ব্যাপারে কংগ্রেস সদস্যরা তাদের প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন।

চতুর্থ প্রস্তাবে রোহিঙ্গাদের প্রসঙ্গ এসেছে। এতে বলা হয়েছে, রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার কারণে দেশটির সংখ্যালঘু মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষ বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। মনুষ্যসৃষ্ট মানবিক এই বিপর্যয়ের মতো জটিল পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ প্রশংসনীয় কাজ করছে।


আরো সংবাদ



premium cement