২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নৈশ প্রহরী নিখোঁজ, ফ্লোরে রক্তের দাগ

- ছবি : নয়া দিগন্ত

ফরিদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী ইয়াকুব আলী শেখ (৩৮) রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার সকালে স্কুলের বারান্দা থেকে উদ্ধার হয়েছে তার রক্তমাখা জামা। এসময় মেঝে ও দরজার নিকটেও রক্ত মাখা দেখা গেছে। তার সাথে খারাপ কিছু হয়েছে বলে পুলিশ আশঙ্কা করছে। এখবওে নিখোঁজ ইয়াকুব আলীর পরিবার ও স্বজনদেও মাঝে অজানা আশঙ্কা বিরাজ করছে।

জানা গেছে, ইয়াকুব আলী শহরের দক্ষিণ আলীপুরে একটি সেলুনে কাজ করতেন। তার বাড়ি ফরিদপুর সদর উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের বিলনালিয়া গ্রামে। স্কুল পড়ুয়া দু’টি সন্তান ও স্ত্রী রয়েছে তার। সোমবার (২৪ জুন) বিলনালিয়া গ্রামের বাড়িতে পরিবারের সাথে দেখা করতে যান তিনি। সন্ধ্যায় সেখান থেকে ফিরে ডিউটিতে যোগ দেন। গত সাত বছর যবত তিনি এখানে রাতের ডিউটি করছেন।

ফরিদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক শামীমা বেগম বলেন, সকালে ঝাড়ুদার দুলাল জমাদ্দার প্রথম স্কুলে এসে মেইন গেইট বন্ধ পেয়ে ভিতরে প্রবেশ করতে পারেননি। এরপর সে আমার বাড়িতে চলে আসে। পরে দপ্তরি রেজাউল করিমকে ডেকে এনে স্কুলের গেইট খুলে ভিতরে প্রবেশ করি।

শামীমা বেগম জানান, এসময় স্কুলের বারান্দায় ইয়াকুবের গায়ের রক্তামাখা জামা এবং দরজা ও মেঝে জুড়ে রক্ত লেগে থাকতে দেখি। পাশেই তার মোবাইল ফোনটিও পড়েছিলো। এরপর পুলিশ ও ইয়াকুবের পরিবারকে খবর দেই।

ইয়াকুবের স্ত্রী ছকিনা বেগম জানান, গত কয়েক মাস ধরেই এখানে ডিউটি করতে চাইছিলেন না তার স্বামী। গত জানুয়ারি মাসেও এখানে কম্পিউটার ল্যাবে চুরি হয়েছে। তাছাড়া মাদকসেবীদের প্রচুর উৎপাত হতো। এগুলো ইয়াকুব পছন্দ করতো না। অনেকবার স্কুলের শিক্ষকদের নিকট নালিশও করেছে। এসব ছাড়া তার সাথে আর কারো কোন ঝামেলা ছিল না।

ইয়াকুবের শ্যালক মিনারুল বলেন, আমার দুলাভাই গত কয়েকদিন ধরে খুব ভীত সন্ত্রস্ত ছিল। স্থানীয় মাদকসেবীরা রাতে স্কুলের বারান্দায় আড্ডা বসাতো। তিনি বলেন, একারণে দুলাভাইয়ের বেশ শত্রু তৈরী হয়ে গিয়েছিল। কয়েকদিন আগে দুলাভাই আমাকে বলেছিল যে, আমার স্কুলে যেতে ভয় লাগে। রাতে ঘুম আসলে কখন যে ওরা কি করে ফেলে তার ঠিক নাই। তুই আমার সাথে চল, রাতে আমার সাথে থাকবি।

ইয়াকুবের পরিবারের অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে শামীমা বলেন, রাতে মাঝেমধ্যে মাদকসেবীরা উৎপাত করতো। সেগুলো ইয়াকুব আামাদের জানালে আমরা এই এলাকায় থাকা গোয়েন্দা পুলিশকে মৌখিকভাবে সেসব জানাই। তারা কয়েকবার ধাওয়া করে ওদের তাড়িয়েও দেয়।

ফরিদপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আতিকুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোতয়ালী থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। সেখানকার আলামত দেখে মনে হয়েছে ইয়াকুবের সাথে খারাপ কিছু হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে তাকে খুঁজে বের করতে। এঘটনায় কোতয়ালী থানায় স্কুলের পক্ষ থেকে একটি সাধারন ডায়েরি করা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement