২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

গাজীপুর সিটি নির্বাচন : বিএনপি নেতকর্মীদের হয়রানী ও গ্রেফতারের অভিযোগ

-

গাজীপুর সিটি নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ পুরো নির্বাচন কমিশনের মতবিনিময়ের পর রাত থেকেই পুলিশ বিএনপিসহ ২০দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের গণগ্রেফতার শুরু করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার। বৃহস্পতিবার সকালে তিনি নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে তিনি এ অভিযোগ করেন । এসময় তার সঙ্গে জেলা বিএনপি’র সভাপতি ফজলুল হক মিলন, সাধারণ সম্পাদক কাজী ছাইয়েদুল আলম বাবুল, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক শিল্পপতি মোঃ সোহরাব উদ্দিন, জেলা হেফাজতের যুগ্ম সম্পাদক মুফতি নাসির উদ্দিনসহ ২০ দলীয় জোট নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

ধানের শীষ প্রতীকের নির্বাচনী মিডিয়া সেল প্রধান ডা. মাজহারুল আলম জানান, কাশিমপুর অঞ্চল নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব শাহীন ও কেন্দ্র সচিব শাহজাহান ডিলারকে বুধবার রাতে গ্রেফতারের পর ঢাকা ডিবি পুলিশে হস্তান্তর করে গাজীপুর জেলা পুলিশ। তাদেরকে রাতেই সাভার ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়। অপরদিকে কোনাবাড়ি কেন্দ্র পরিচালনা কমিটির আহবায়ক স্থানীয় বিএনপি নেতা ডা. মিলন, কেন্দ্র আহবায়ক ছাত্রদল নেতা মিলন মিয়া ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য তাইজুল ইসলামকে বুধবার রাতে আটক করে পুলিশ। আটকের পর রাতেই তাদেরকে টাঙ্গাইল ডিবি পুলিশে হস্থান্তর করা হয়। এছাড়া ৩০ নম্বর ওয়ার্ড বালিয়ারা কেন্দ্র কমিটির সদস্য আব্দুস সামাদ, কাউলতিয়া অঞ্চল নির্বাচন পরিচালনা কেমিটির সদস্য শাহ আলম, টঙ্গীর মরকুনের ৪৭ নং ওয়ার্ড নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য আবু সায়েম, পূবাইল অঞ্চল নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের ইছালী গ্রামের আব্দুস সামাদকে গ্রেফতার করে ঢাকা ও গাজীপুর ডিবি পুলিশ।

মেয়রপ্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার এব্যপারে বলেন, পোলিং এজেন্টরা যাতে কেন্দ্রে না যায় সেজন্য সাদা পোশাকে পুলিশ কোনাবাড়ি ও কাশিমপুর অঞ্চলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ভয়ভীতি ছড়াচ্ছে। পুলিশ নগরীর কাশিমপুর ও কোনাবাড়ি অঞ্চলের কেন্দ্রগুলো দখলের নীল নকশা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। ইতিপূর্বে কাশিমপুর অঞ্চলের ধানের শীষ প্রতীকের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক সাবেক কাশিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান শওকত হোসেন সরকারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রিটার্নিং অফিসারের কাছে পুলিশী হয়রাণীর বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরও পুলিশী হয়রানী থামছে না বলেও তিনি অভিযোগ করেন। আটককৃতরে বিরুদ্ধে কোন মামলা নাই বলেও তিনি জানান। তিনি গণগ্রেপ্তার বন্ধ, গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি ও পুলিশী হয়রানী বন্ধের জন্য বৃহস্পতিবার সকালে আবারো লিখিত অভিযোগ করেছেন।

রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মন্ডল বিএনপি প্রার্থীর লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তি স্বীকার করে বলেন, এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তাদের নামে কোন হুলিয়া আছে কিনা জানতে চেয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে। কারো নামে নতুন কোন কেস করা যাবে না। কারো নামে হুলিয়া আছে কিনা তা জানতে চাওয়া হয়েছে। এছাড়া নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়েছি। বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে কথা হয়েছে।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, ১৫জন গ্রেপ্তারের কথা অস্বীকার করেন। তবে তিনি দুইজন ওয়ারেন্টের আসামিকে বুধবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওয়ারেন্ট ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।

গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল শেখ জানান, চলতি বছরের ৩১ মার্চ নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর থেকেই গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন সুষ্ঠ করতে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, মাদক ব্যবসায়ীসহ অপরাধীদের গ্রেফতারে সাঁড়াশি অভিযান চলছে। এ অভিযানে প্রায় দেড় হাজারের বেশী অপরাধীকে গ্রেফতার হয়েছে । এদের মধ্যে এক হাজারের বেশী মাদক ব্যবসায়ী। দুইজন মাদক ব্যবসায়ী পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছে। সেই অভিযানের ধারাবাহিকতায় আরও দুইজন আসামী গ্রেফতার হয়েছে। দুই আসামীর মধ্যে একজনের নাম সায়েম (৩৫) অপরজন সোহেল খান। দু’জনই ওয়ারেন্টভূক্ত আসামী। সায়েম মাদক মামলার আর সোহেল নাশকতার মামলার আসামী।


আরো সংবাদ



premium cement