তাদের বোলারদের যেভাবে কচুকাটা করেছেন পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানরা, তারপর এই ম্যাচে জেতার আশা জিম্বাবুয়ে করেছে এমনটা ভাবা ভুল। তবে ব্যাটিং পিচে স্বাগতিকরাও একটা সম্মানজনক স্কোর গড়তে পারবে কিনা সেটি দেখার বিষয় ছিলো; কিন্তু পাকিস্তানি বোলারদের সামনে দাড়াতেই পারেনি জিম্বাবুয়ে।
অনেক রেকর্ডের এক ইনিংসের পর বুলাওয়েতে সিরিজের চতুর্থ ওয়ানডেতে প্রত্যাশামতোই বড় জয় পেয়েছে সফরকারী পাকিস্তান। ম্যাচে ২৪৪ রানের পরাজিত হয়েছে জিম্বাবুয়ে। রানের ব্যবধানে জয়ের দিক থেকে এটি পাকিস্তানের দ্বিতীয় বড় জয়। ২০১৫ সালে তারা আয়ারল্যান্ডকে হারিয়েছিলো ২৫৫ রানের ব্যবধানে। অল্পের জন্য সেই রেকর্ড গড়া হলো না পাকিস্তানের।
বুলাওয়েতে শুক্রবার রানের পাহাড় টপকাতে নেমে তাসের ঘরের মতো ধসে পরে জিম্বাবুয়ে। স্কোর বোর্ডে ৬৭ রান তুলতেই দলটি হারায় ৫ উইকেট। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে এলটন চিগুম্বুরা ও ত্রিপানো ৬৯ রানের জুটিতে অল্প রানে অলআউটের লজ্জা থেকে রক্ষা পায় দলটি। শেষ পর্যন্ত তারা অলআউট হয় ১৫৫ রানে। ত্রিপানো সর্বোচ্চ ৪৪ রান করেন। পাকিস্তানের পক্ষে লেগ স্পিনার শাদাব খান ২৮ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন। এছাড়া দুটি করে উইকেট নিয়েছেন উসমান খান ও ফাহিম আশরাফ দুটি করে উইকেট নিয়েছেন।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করে ফখর জামান ও ইমাম উল হকের রেকর্ড উদ্বোধনী জুটিতে ভর করে পাকিস্তান তোলে ১ উইকেটে ৩৯৯ রান। ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৩০৪ রানের উদ্বোধীন জুটির রেকর্ড গড়েন দুজনে। ফখর করে প্রথম ওয়ানডে ডাবল সেঞ্চুরি(অপরাজিত ২১০)। ইমাম আউট হয়েছেন ১১৩ রানে।
আরো পড়ুন : উদ্বোধনী জুটিতে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড ফখর-ইমামের
ওয়ানডে সিরিজে জিম্বাবুয়েকে নিয়ে রীতিমতো খেলছে পাকিস্তান। ব্যাটে-বলে পুরো সিরিজে মাসাকাদজার দলকে নাস্তানুবাদ করার পথে আজ বিশ্ব রেকর্ডই গড়ে ফেলেছেন পাকিস্তানের দুই ওপেনার। ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে উদ্বোধনী জুটির সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড এখন ফখর জামান ও ইমাম উল হকের(৩০৪)। সেই সাথে পাকিস্তানের হয়ে প্রথম ও ওয়ানডে ইতিহাসে পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে ডাবল সেঞ্চুরির মালিকও হলেন ফখর। আগে ব্যাট করে পাকিস্তান সংগ্রহ করেছে ১ উইকেটে ৩৯৯ রান। পাকিস্তানের দলীয় সর্বোচ্চ রানের ইনিংসও এটি।
বুলাওয়েতে ওয়ানডে সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে এদিন টস জিতে ব্যাট করতে নামে পাকিস্তান। ইনিংসের শুরুটা ধীরে সুস্থেই করেছিলেন দুই ওপেনার। তবে সময় যত গড়িয়েছে তাদের ব্যাট ততই ধারালো হয়েছে। ১৮তম ওভারে দলীয় ১০০ রান পূর্ণ করে পাকিস্তান। আর ২০০ রান পূর্ণ হয় ৩২তম ওভারে। ইমাম উল হক কিছুটা ধীর গতিতে খেললেও ফখর জামান ছিলেন নিয়মিত চেহারায়। ৪৯ বলে অর্ধশত রান করার ফখর শত রানের মাইল ফলকে পৌছেছেন ৯২ বলে।
সেঞ্চুরির পর ফখর জামানের ব্যাট যেন তলোয়ার হয়ে কাটতে শুরু করে জিম্বাবুয়ের বোলারদের। ব্যক্তিগত দেড়শ রান পূর্ণ করেছেন ১১৬ বলে। আর দেড়শ থেকে দুই শ’ রানের মাইফ ফলকে যেতে বল লেগেছে ৩২ বল। ৪৬তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ত্রিপানোকে ডিপ মিডউইকেট নিয়ে চার মেরে ছাড়িয়ে যান পাকিস্তানি তারকা সাইদ আনোয়ারের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৯৪ রান। নিজের দখলে নেন পাকিস্তানের পক্ষে সর্বোচ্চ ওয়ানডে রানের রেকর্ড। পাকিস্তানের পক্ষে ওয়ানডে ক্রিকেটের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির গর্বিত মালিক এখন ফখর। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ভারতের বিরুদ্ধে দারুণ এক সেঞ্চুরি করে যে বার্তা দিয়েছিলেন ক্রিকেট বিশ্বকে, তা যেন আরো জোড়ালো হয়েছে এই ইনিংসের পর।
ম্যাচের ৪০তম ওভারে ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে মিড উইকেট দিয়ে বাউন্ডারি মেরে রেকর্ড বইয়ের পাতায় নিজেদের নামটি লেখেন ফখর জামান। উদ্বোধনী জুটির আগের রেকর্ডটি ছিলো শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনার সনথ জয়সুরিয়া ও উপুল থারাঙ্গার(২৮৬)। এক যুগ আগে ইংল্যান্ডের মাটিতে তাদেরই বিরুদ্ধে রেকর্ডটি গড়েছিলেন দুই লঙ্কান। ফখর জামান ও ইমাম উল হকের সামনে সুযোগ ছিলো নিজেদের পার্টনারশিপটাকে আরো বড় করার, হাতে ছিলো আরো ৮টি ওভার; কিন্তু ৪২তম ওভারের শেষ বলটিতে ইমাম উল হক আউট হলে শেষ হয় এই ম্যারাথন জুটি।
তার আগে অবশ্য ইমাম খেলেছেন ১২২ বলে ১১৩ রানের ধীরস্থির একটি ইনিংস। আর পাকিস্তানের পক্ষে ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ রানের জুটি আগে ছিলো আমির সোহেল ও ইনজামাম উল হকের(২৬২)। আজ চাচার সেই রেকর্ড ভেঙে নিজের দখলে নিলেন ইনজামামের ভাতিজা ইমাম। ৮ ওয়ানডের ক্যারিয়ারে এদিন তৃতীয় সেঞ্চুরিটি করেন ইমাম। ফখরও তৃতীয় সেঞ্চুরির মালিক হয়েছেন, তবে তিনি ম্যাচ খেলেছেন ১৭টি।
ওয়ানডে ইতিহাসের যে কোন উইকেট জুটিতে সর্বোচ্চ রানের তালিকায় শুক্রবারের ইনিংসটি আছে চার নম্বরে। সেখানে সবার উপরে ক্যারিবীয় হার্ড হিটার ক্রিস গেইল ও মারলন স্যামুয়েলস। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে এই জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধেই দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৩৭২ রান করেছিলেন গেইল-স্যামুয়েলস। গেইল সেদিন করেছিলেন বিশ্বকাপ ইতিহাসের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিটি।
ফখর জামান শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ২১০ রানে। তার ১৫৬ বলের ইনিংসে ছিলো ৫টি ছক্কা ও ২৪টি চারের মার। আরেক ব্যাটসম্যান আসিফ আলী ২২ বলে খেলেছেন ৫০ রানের ঝড়ো ইনিংস।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা