২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সংস্কারের অভাবেই রেলে দুর্ঘটনা রেলমন্ত্রী

নর্থ বেঙ্গল জার্নালিস্ট ফোরামের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও অভিষেক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন রেলমন্ত্রী মো: নূরুল ইসলাম সুজন হ নয়া দিগন্ত -

রেলমন্ত্রী মো: নুরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, রেলপথ ও ব্রিজ সংস্কার না হওয়া রেল দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। ওয়ার্ল্ড ব্যাংক ও আইএমএফের সীমাবদ্ধতার কারণে রেল বিভাগ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে গেছে। গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে নর্থবেঙ্গল জার্নালিস্ট ফোরামের ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন নয়া দিগন্ত সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দীন। বক্তব্য রাখেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী ও শহীদুল ইসলাম, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ, রাজশাহী বিভাগ সাংবাদিক সমিতির সভাপতি খায়রুজ্জামান কামাল, রংপুর বিভাগীয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মাকসুদুর রহমান প্রমুখ।
রেলমন্ত্রী বলেন, সত্তরের দশকে রেলের লোকবল ছিল ৭০ হাজারের উপরে। কমতে কমতে এখন তা দাঁড়িয়েছে ২৭ হাজারে। যার কারণে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে শতাধিক রেলস্টেশন। রেলের যে ব্রিজগুলো রয়েছে এগুলো আমরা ছোট বেলা থেকে দেখে আসছি। এগুলো কখনও সংস্কার করতে দেখেছেন? অথচ নতুন নতুন রাস্তা হচ্ছে, ব্রিজ হচ্ছে, কিন্তু রেলে সেই ধরনের নজর ছিল না। রেলের নাজুক অবস্থা দূর করার জন্য সরকার এখন কাজ করে যাচ্ছে। ঢাকা থেকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলগুলোর সাথে ব্রডগেজ ও ডুয়েল গেজ লাইন বৃদ্ধি করা হচ্ছে। সেই সাথে যুক্ত করা হচ্ছে দ্রুতগতির ট্রেনও। ফলে মাত্র আড়াই ঘণ্টায় ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাওয়া সম্ভব হবে। দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের সাথে উত্তরবঙ্গেও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে উন্নয়ন হচ্ছে। এ উন্নয়নের রেলের ওপরে অধিক গুরুত্ব দেয়ায় উত্তরবঙ্গের সাথে ঢাকার দূরত্ব আগের চেয়ে অনেক কমে এসেছে।
উত্তরবঙ্গের ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ের কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, আগে ১১টি ট্রেন দৈনিক আপ-ডাউন করত। সেখানে এখন ২১টি ট্রেন আপ-ডাউন করে। কিন্তু রেললাইন বৃদ্ধি পায়নি। টঙ্গী থেকে ঈশ্বরদী পর্যন্ত মাত্র একটি রেললাইন ব্যবহার করতে হচ্ছে। সেখানে অন্যান্য ট্রেনও চলাচল করে। এ কারণেই উত্তরাঞ্চলের ট্রেনে শিডিউল বিপর্যয় ঘটে।
স্বাধীনতার পর রেল, নৌ ও সড়কপথে ভারসাম্যপূর্ণ যোগাযোগব্যবস্থা ছিল মন্তব্য করেছেন রেলমন্ত্রী বলেন, তখন রেল বিভাগ ৩১ ভাগ পরিবহনের অংশীদার ছিল। এখন এটা কমে ১০ থেকে ১১ ভাগে নেমে এসেছে। আমরা চেষ্টা করছি রেল বিভাগ যেন পরিবহনের ৩১ কিংবা ৩৫ ভাগ অংশীদার হতে পারে। একটা উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের যে স্বপ্ন আমরা দেখছি, তার একটি মানসম্পন্ন রেলযোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার চেষ্টা করছি আমরা। ইতোমধ্যে পুরনো ব্রিজ ও লাইনগুলো সংস্কার করার প্রকল্প হাতে নিচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য রেলকে দুর্ঘটনামুক্ত করা।
উত্তরাঞ্চলের সাথে যোগাযোগব্যবস্থা সম্প্রসারিত হচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, পদ্মাসেতু হলে দেশে রেলসেবার পরিধি আরও বাড়বে। রেলপথে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। রেলে সেবাগ্রহীতার সংখ্যা কমে যাওয়া এবং এ খাতে শ্রমিকদের সংখ্যা ধীরে ধীরে কমে এসেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

 


আরো সংবাদ



premium cement