২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পেঁয়াজের ঝাঁজ বাড়ছেই

-

কোরবানির ঈদ সামনে রেখে পেঁয়াজের দাম বাড়ছেই। দ্বিগুণ দামে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। এই দামেও পেঁয়াজ মিলবে কি-না সে সংশয় খুচরা ব্যবসায়ীদের। আর দুই সপ্তাহে দাম দ্বিগুণ হওয়ায় গতকাল বাজার করতে এসে অনেক ভুক্তাই মাথা ঠুকেছেন। বলেছেন, দেশে এমন কী হলো যে দ্বিগুণ দামে পেঁয়াজ কিনতে হবে? কোরবানির ঈদ সামনে রেখে মজুদ বাড়িয়ে পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের।
এদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, সম্প্রতি নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ফলে অঘোষিত ধর্মঘটে আমদানি মূল্য বেড়েছে। অপর দিকে ভোক্তাদের অভিযোগ, এটা স্রেফ অজুহাত। প্রতি ঈদেই তারা এভাবে মূল্য বাড়িয়ে থাকেন। এদিকে তরিতরকারির উচ্চমূল্যেও নাকাল ক্রেতাসাধারণ। বিশেষ করে স্বল্প আয় ও নিম্ন মধ্যবিত্ত লোকজনের ত্রাহী অবস্থা। কোরবানির ঈদ সামনে রেখে বাড়ছে পেঁয়াজের মূল্য। পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, এখন আমদানিতেই মূল্য বেশি পড়ে যাচ্ছে।
ফলে একেবারে খচরা পর্যায়ে প্রতিকেজিতে যুক্ত হচ্ছে ১০ টাকা। তবে বাজারের এই উর্ধগতি থাকবে না জানিয়ে তারা বলেন, কোরবানির ঈদের পর বাজার স্থিতিশীল হয়ে যাবে। তবে এমন আশ্বাস মানতে আপত্তি খুচরা পর্যায়ের দোকানিদের। এরই মধ্যে পাইকাররা পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছেন। উখিয়ার বিশিষ্ট্য ব্যবসায়ী হাসান সওদাগর জানান, দেশে পেয়াঁজের চাহিদা বছরে ২৪ লাখ টন।
এর মধ্যে প্রায় ১৮ লাখ টন দেশেই হয়। বাইরে থেকে আমদানি করতে হয় ছয় লাখ টন পেঁয়াজ। গত বছরের চেয়ে এই বছর কক্সবাজার জেলায় পেঁয়াজের চাহিদা বেশি রয়েছে। কারণ উখিয়া-টেকনাফে অতিরিক্ত ১১ লাখের চেয়ে বেশি মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকের বসবাস রয়েছে ক্যাম্পে। এর মধ্যে বেশির ভাগই আসে ভারত থেকে। মিয়ানমার থেকেও কিছু পেঁয়াজ আমদানি হয়। দেশে বৃষ্টির কারণে এবং অনীয়মের ফলে সড়ক বিধ্বস্ত হওয়ায় অভ্যন্তরীণ বিপণন ব্যবস্থাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। তবে এ বৃদ্ধি সাময়িক। কারণ ভারত ছাড়াও বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, পেঁয়াজ এমনই একটি পণ্য যার কৃত্রিম সংকট ঘটিয়ে মুনাফা করা অত সহজ নয়। কারণ এ পণ্যটি দ্রুত পচে। তাই বেশিদিন মজুদ করে রাখা যায় না। পেঁয়াজ এলে বাজারে ছেড়ে দিতে হয় বেশ দ্রুত। ফলে কোন অবস্থার পেক্ষিতে পেঁয়াজের দাম যে গতিতে উর্ধগতি হয়, সে একই গতিতে আবার নিম্নমুখীও হয়। কোরবানির ঈদ সামনে রেখে আমদানিও যেহেতু বাড়ছে, সেহেতু দাম পড়ে যাবে বলে মনে করেন অনেকেই। এদিকে কোরবানির ঈদ আসায় মসলা ও আদার বাজারেও পরিলক্ষিত হচ্ছে উর্ধমুখীতার আলামত। এ দুটি পণ্যের মূল্য গত সপ্তাহের তুলনায় একটু বেশি। রসুনের দাম স্বাভাবিক রয়েছে। প্রতি বছর কোরবানির ঈদ সামনে রেখে পেঁয়াজ, রসুন, আদা, জিরা, এলাচসহ বিভিন্ন মসলার দামের উর্ধমুখিতা এ দেশে বরাবরই হয়ে আসছে। এবারও যে তেমনই হবে তা ভোক্তাদের জানাই ছিল। সরেজমিন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ১০ টাকা। উখিয়া দারোগা বাজারের ক্রেতা শাহ আলম জেকব জানালেন, পেঁয়াজের দাম বেড়েই যাচ্ছে। দেখার যেন কেউ নেই। এছাড়া বাজারে সবজিসহ সব পণ্যের দাম বাড়তি।
দারোগা বাজারের পেঁয়াজ, রসুন, আদা ও মসলা বিক্রেতা শফি সওদাগর জানালেন, পাইকারি বাজারে হু হু করে দাম বাড়ছে। আর এ কারণে খুচরা বাজারেও বেশি দামে বিক্র করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, দাম কমাতে হলে বাজারে আমদানিকৃত ভারতীয় পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়াতে হবে। তা না হলে কোরবানি সামনে রেখে পেঁয়াজের বাজার অস্থির হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement