তারল্য সঙ্কট মেটাতে পুনঃঅর্থায়নের জন্য চিঠি
- অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
- ০৬ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০
একদিন বিরতিতে আবারো পতন হয়েছে দেশের পুঁজিবাজারে। আগের দিন বুধবার সূচক ও লেনদেন বাড়লেও সপ্তাহের শেষ দিন গতকাল বৃহস্পতিবার আবারো কমেছে। এ দিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক কমেছে ৩১ পয়েন্ট এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক কমেছে ৯১ পয়েন্ট। এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ২৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকা আর সিএসইতে কমেছে ৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। গতকাল পুঁজিবাজারে কমেছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার দর। এ দিকে পুঁজিবাজারে তারল্য সঙ্কট নিরসনে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে পুনঃঅর্থায়নের তহবিলের ৮৯ কোটি টাকা চেয়ে চিঠি দিয়েছে বলে জানা গেছে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, দিনের শুরুতে লেনদেন ভালো অবস্থানেই ছিল। তবে লেনদেন শুরুর আধঘণ্টার মধ্যে পতনের মুখে পড়ে ডিএসই। এ দিন ডিএসইএক্স ৪ হাজার ৭০২ পয়েন্ট থেকে লেনদেন শুরু হয়। দিনভর মোট ৩৪৬টি কো¤পানির ১৭ কোটি ৭৪ লাখ ৩ হাজার ৮৮৭টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। লেনদেনকৃত কো¤পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১০৬টির, কমেছে ১৯২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৮টি কোম্পানির শেয়ার। ফলে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের কার্যদিবসের চেয়ে ৩১ দশমিক ৬৫ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৬৭১ দশমিক ৩৪ পয়েন্টে দাঁড়ায়। এ ছাড়া ডিএস-৩০ মূল্য সূচক ১১ দশমিক ৮১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৬০৫.৮২ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস শরিয়াহ সূচক ৫.৫৭ পয়েন্ট কমে ১০৫৫.৮৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। গতকাল ডিএসইতে মোট লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৪৩২ কোটি ৪১ লাখ ৯৪ হাজার ৬৮ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৪৬২ কোটি ছয় লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ২৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।
গতকাল লেনদেনের ভিত্তিতে (টাকায়) প্রধান ১০টি কো¤পানি হলোÑ এসকে ট্রিমস, সায়হাম কটন, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স, ইন্দো-ফার্মাসিউটিক্যালস, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স, লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ, ডেফোডিল কম্পিউটার, মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্স ও বীকন ফার্মাসিউটিক্যাল। দর বৃদ্ধির শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো- আরডি ফুড, লিগ্যাসি ফুটওয়্যার, আমরা নেটওয়ার্ক, বীকন ফার্মাসিউটিক্যাল, ইয়াকিন পলিমার, মিরাকেল ইন্ডাস্ট্রিজ, সিলভা ফার্মাসিউটিক্যাল, এভেন্স টেক্সটাইল, আইটি কনসালট্যান্ট ও স্যান্ডার্ড সিরামিক। অন্য দিকে দর কমার শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো- ফ্যামিলি টেক্স, তুংহাই নিটিং, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ, সোনার বাংলা ইন্সু্যুরেন্স, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল, এমবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, কুইন সাউথ টেক্সটাইল ও অ্যাপোলো ইস্পাত।
অপর দিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৯১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ২০৩ পয়েন্টে। এ দিন বাজারে লেনদেন হয়েছে ২৫ কোটি ছয় লাখ টাকা। আগের দিন সিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ২৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। সে হিসেবে গতকাল বাজারটিতে লেনদেন কমেছে ৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেয়া ২৪৯ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৮২টির, কমেছে ১৪১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৬টির।
ব্লক মার্কেট : ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বৃহস্পতিবার ব্লক মার্কেটে মোট ১০ কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মোট ২৮ লাখ ৩৩ হাজার ২৪টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার আর্থিক মূল্য ১৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। ব্লক মার্কেটে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ড্যাফোডিল কম্পিউটার্স লিমিটেডের শেয়ার। এই কোম্পানি ১০ কোটি ৮৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করেছে। ব্র্যাক ব্যাংক ২ কোটি ৩৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেড ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করে তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে। এ ছাড়া ব্লকে লেনদেন করা অন্য কোম্পানিগুলো হচ্ছে- কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ, ইভিন্স টেক্সটাইল, জেনারেশন নেক্সট, আরডি ফুড, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ, সিঙ্গারবিডি ও সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।
পুনঃঅর্থায়নের জন্য চিঠি: পুঁজিবাজারে তারল্য সঙ্কট নিরসনে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি থেকে বাংলাদেশ ব্যাংককে পুনঃঅর্থায়নের তহবিলের ৮৯ কোটি টাকা বিতরণের জন্য চিঠি দিয়েছে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। বিএসইসির মুখপাত্র মো: সাইফুর রহমান বলেন, এই টাকা সফট লোন হিসাবে ১২টি স্টক ডিলার ও মার্চেন্ট ব্যাংকের মধ্যে বিতরণ করা হবে। অর্থায়নের পুরো প্রক্রিয়া তদারকি করার জন্য একটি কমিটি কাজ করছে বলে জানান তিনি। বাজার মধ্যস্থতাকারীরা বছরে ৪ শতাংশ সুদে পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গ্রহণ করবে। তারা ২০২২ সাল পর্যন্ত বাজারে এই তহবিলের অর্থ ব্যবহার করতে পারবে। তদন্ত কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কোনো বাজার মধ্যস্থতাকারীর জন্য অনুমোদিত সুদহার ২০ শতাংশের বেশি হবে না। সাইফুর রহমান আরো বলেন, প্রায় ১৪ কোটি টাকা একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে দাঁড়িয়ে আছে। আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ৭৫ কোটি টাকা সরবরাহের জন্য চিঠি দিয়েছি, যাতে ১২টি বাজার সত্তাকে ৮৯ কোটি টাকা মঞ্জুর করা যায়।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে পুঁজিবাজারে বড় দরপতনের পর সরকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিলের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের সহায়তা শুরু করে। তিনটি ধাপে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ৯০০ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছিল। এর মেয়াদ ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সরকার এই ফান্ডের মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত করেছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা