২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বিধবাকে বিয়ে করে সম্পত্তি নিয়ে প্রতারণা!

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শুনাচ্ছেন নাজমা বেগম, পাশে আছেন প্রথম স্বামীর ছেলে ও তার স্ত্রী - ছবি : নয়া দিগন্ত

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় নাজমা বেগম নামে এক বিধবা গৃহবধূকে বিয়ে করে তার সমস্ত সম্পত্তি আত্মসাত করার অভিযোগ উঠেছে। এমনকি প্রতারক দ্বিতীয় স্বামী জাহাঙ্গীর ওই নারীর মৃত স্বামীর রেখে যাওয়া সম্পত্তিও নিজের নামে লিখে নিয়ে ওই বসতঘর থেকে তাকে উৎখাতের জন্য শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

প্রতারণা ও নির্যাতনের শিকার মঠবাড়িয়া পৌর শহরের সবুজ নগর মহল্লার কৃতি ফুটবলার মৃত মো: জামাল হোসেন বাদশার স্ত্রী নাজমা বেগম মঙ্গলবার বিকালে মঠবাড়িয়া প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তার ওপর দ্বিতীয় স্বামী জাহাঙ্গীর হোসেনের নির্যাতন ও প্রতারণার তুলে ধরেন। এসময় তার প্রথম স্বামীর সন্তান জাহিদুল ইসলাম ও ছেলে বৌ জান্নাতুল আক্তার উপস্থিত ছিলেন।

নির্যাতিতা নাজমা বেগম তার লিখিত অভিযোগে বলেন, স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে স্থানীয় মৃত চান মিয়া চৌকিদারের ছেলে গোশত বিক্রেতা জাহাঙ্গীর হোসেন দীর্ঘদিন ধরে ওই বিধবাকে বিয়ে করার জন্য পিছু নেন। এক পর্যায়ে জাহাঙ্গীর বিধাবা নাজমার পরিবারের ভরণপোষণসহ তার মৃত প্রথম স্বামীর রেখে যাওয়া তিন সন্তান মানুষ করে তাদের বিয়ে দেয়ার প্রলোভন দিতে থাকে। পরে বিধবা নাজমা তিন সন্তান ও নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবে জাহাঙ্গীরকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এরপর ভুল বুঝিয়ে কৌশলে মঠবাড়িয়া পৌর শহরের মৃত স্বামীর দুটি দোকান ঘর বিক্রি করে ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন জাহাঙ্গীর।

এছাড়া অপকৌশলে জাহাঙ্গীর ওই বিধবার মেয়েকে বিয়ে দেয়া ও পাকা বাড়ি করে দেয়ার নামে সবুজনগর মহল্লায় ৫০ লাখ টাকা মূল্যের ৯ শতাংশ নাল জমি লিখে নেন। সেই সাথে বিধবার প্রায় দুই লাখ টাকার স্বর্ণালংকারও হাতিয়ে নেয় প্রতারক দ্বিতীয় স্বামী জাহাঙ্গীর।

এছাড়া বিধবার ছেলে মানসিক অসুস্থ মো: জাহিদুল ইসলাম সবুজ মিয়ার চিকিৎসা করানোর নামে এক শতাংশ জমি কাবলা দলিল করতে গিয়ে প্রতারণা করে ছয় শতাংশ জমি লিখে নেন। বর্তমানে দ্বিতীয় স্বামী জাহাঙ্গীর আমাকে ও আমার সন্তানদের মৃত বাবার সম্পত্তিতে থাকা বসতঘর ছাড়া করার হুমকী দিয়ে আসছে।

এদিকে, দ্বিতীয় স্বামী তার স্ত্রীর সম্পত্তি আত্মসাত করে বসতঘর থেকে উৎখাত করার জন্য সহকারী পুলিশ সুপার বরাবরে লিখিত আবেদন জানান।

এ বিষয়ে মঠবাড়িয়ার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো: আশরাফুর রহমান বলেন, লিখিত আবেদন পেয়েছি। ব্যস্ত থাকার কারণে বিষয়টি সুরাহা করা সম্ভব হয়নি।

সহকারী পুলিশ সুপার মো: হাসান মোস্তফা স্বপন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, লিখিত আবেদন পেয়ে স্বামী ও স্ত্রী দুজনকে নোটিশ করে ডেকে আনা হয়েছিল। তারা দুজনই বিষয়টি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে ফয়সালার জন্য একমত হন। বিষয়টি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে মীমাংসার জন্য রয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement