২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নবীনগরে এসএসসির ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়

-

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা রতনপুর আবদুল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী দরিদ্র পরিবারের সন্তান আমেনা আক্তার। আমেনার বাবা গনি মিয়া মারা গেছেন ১০ বছর আগে। ছোট ভাই সুমন সেলুনে কাজ করে সংসার চালাচ্ছে। ফরম পূরণের অতিরিক্ত টাকা জোগাড় করতে গিয়ে চোখের পানিতে ভাসছেন তার মা। রাত-দিন সেলুনে কাজ করে বড় বোনের পরীক্ষার ফরম পূরণের টাকা জোগাড় করেছে ১২ বছরের সুমন।
সুমন বলে, ‘আমার লেখাপড়ার ইচ্ছা থাকলেও সংসারের অভাবের কারণে লেখাপড়া করতে পারছি না। সেলুনে কাজ করে বড় বোনের পরীক্ষার ফরম পূরণের টাকা জোগাড় করেছি।’ আমেনার মা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘অভাবের সংসার, একবেলা খেলে আরেক বেলা না খেয়ে থাকতে হয়। স্কুলের আপা পাঁচ হাজার টাকা চেয়েছিল, গ্রামের কিছু লোকজনের সাহায্য নিয়ে তিন হাজার টাকা দিয়ে আমার মেয়ের ফরম পূরণ করেছি।’
২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষার সরকারি নিবন্ধন ফি বিজ্ঞান বিভাগ ১৯৭০ টাকা, মানবিক বিভাগ ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখা- ১৮৫০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও তা মানছে না ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের বেশির ভাগ স্কুল। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে ফরম পূরণে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিভাবকরা স্কুল কর্তৃপক্ষের ধার্য করা টাকা দিতে বাধ্য হচ্ছেন।
বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফরম পূরণের নামে রীতিমতো বাণিজ্য হয়েছে। উপজেলার রতনপুর আবদুল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ে সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফরম পূরণ ফি বাবদ তিন হাজার চার শ’ টাকা ও কোচিং ফি বাবদ ছয় শ’ টাকা, আবার কোনো কোনো শিক্ষার্থীর কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা নেয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। যাদের কাছ থেকে টাকা নেয়া হয়েছে তাদেরকে কোনো রসিদও দেয়া হয়নি। ওই বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলে, আমাদের কোনো বকেয়া বেতন নেই। ফরম পূরণের জন্য তিন হাজার চার শ’ টাকা আর কোচিংয়ের জন্য ছয় শ’ টাকা নিয়েছে। জমার রিসিট চাইলে পরে দেবে বলে আমাদেরকে বিদায় করে দেন।
বিদ্যালয়ের ম্যানিজিং কমিটির সদস্য ডা: মো: শাহজান বলেন, ‘আমি নিজে একজনের ফরম পূরণের জন্য তিন হাজার টাকা দিয়েছি; কিন্তু আমাকে কোনো রিসিট দেয়া হয়নি।’ কমিটির অপর সদস্য ও সাবেক সভাপতি আবু উমর মিল্কী বলেন, প্রধান শিক্ষকের ইচ্ছামতো ফরম পূরণের টাকা নিচ্ছেন, আমার কাছে অনেকেই অতিরিক্ত টাকা নেয়ার বিষয়ে অভিযোগ করেছেন।
রতনপুর আবদুল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক নিলুফা আক্তার বলেন, এ বছর ৯২ জন শিক্ষার্থী টেস্ট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৭৬ জন কৃতকার্য হয়েছে, সাতজন অনিনিয়মিত, মোট ৮৩ জনের ফরম পূরণ হয়েছে। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তানজিনা আক্তার আলেয়া বলেন, ‘দুই হাজার টাকা করে নিয়েছি, যাদের বকেয়া বেতন আছে তাদের কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকাও নিয়েছি। রিসিট না থাকার কারণে রিসিট দিতে পারিনি। পরে রিসিট এনে সবাইকে দিয়ে দেবো।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোকাররম হোসেন জানান, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বিদ্যালয় বৃহস্পতিবার পরিদর্শন করেছি। ফরম পূরণে বোর্ডের নির্ধারিত ফি’র চেয়ে যাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেয়া হয়েছে তাদের টাকা আগামী সোমবারের মধ্যে ফেরত দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে

 


আরো সংবাদ



premium cement
দেবীগঞ্জে হিট স্ট্রোকে প্রাইভেটকার চালকের মৃত্যু চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ঈশ্বরদীতে মৌসুমের সর্বোচ্চ ৪২.৪ ডিগ্রি তাপমাত্রার রেকর্ড ‘মুক্ত সাংবাদিকতা চরম সঙ্কটে’ ‘রাফা হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরাইলি সেনারা’ ৪৬তম বিএসএস প্রিলি পরীক্ষা : শুরুতেই স্বপ্নভঙ্গ ৮১ শিক্ষার্থীর মরুর উষ্ণতায় ক্ষতির মুখে কৃষি ছেলেদের কারণে বিপাকে মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির দুই বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে ফ্রান্স, ব্রাজিল ও প্যারাগুয়ে সফরে যাচ্ছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ড সফরকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক বললেন প্রধানমন্ত্রী

সকল