২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


কাপ্তাই হ্রদে মাছ শিকার বন্ধ : ২০ হাজার জেলে পরিবারে দুর্দিন

মাছ শিকার বন্ধ থাকায় কাপ্তাই হ্রদের জেলেরা জাল তৈরি করে অলস সময় কাটাচ্ছেন : নয়া দিগন্ত -

রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদে মাছ শিকারে নিয়োজিত প্রায় ২০ হাজার জেলে পরিবার চরম কষ্টে দিনাতিপাত করছে। কাপ্তাই হ্রদে তিন মাস মাছ শিকার বন্ধ রাখার কারণে জেলেদের উপার্জন বন্ধ হয়ে গেছে। স্থানীয় জেলেরা এখন প্রায় সবাই বেকার। অসহায় জেলেরা কিছু একটা করে অলস সময় পার করছেন।
মাছের প্রজনন মৌসুম মে থেকে জুলাই পর্যন্ত বছরে তিন মাস জন্য কাপ্তাই হ্রদে মাছ শিকার বন্ধ রাখা হয়। এ বছরে এরই মধ্যে দুই মাস পেরিয়েছে। কিন্তু জেলেরা প্রতিশ্রুত সাহায্য ঠিক সময়ে পায়নি। গত দুই মাস কাপ্তাই হ্রদে মাছ শিকারে নিয়োজিত প্রায় ২০ হাজার জেলের পরিবারে কষ্ট নেমে আসে।
জেলেদের অভিযোগ, জেলেরা বছরের নয় মাস হ্রদে মাছ শিকার করে লাখ লাখ টাকা আয় করে দিলেও সে তুলনায় তারা কিছুই পাচ্ছে না। অন্যান্য বছর মাছ ধরা বন্ধকালীন জেলেদের ত্রিশ কেজি করে ভিজিএফ চাল বিতরণ করা হতো। অথচ এবার তা ঠিক সময়ে দেয়া হয়নি।
কাপ্তাই জেলে পাড়ার বাসিন্দা নগরবাসী জলদাশ বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারো তিন মাস হ্রদে মাছ ধরা বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে জেলেরা এখন সবাই বেকার। দিনে কোনো রকমে যে উপার্জন হয় তা দিয়ে একবেলা খাই অন্য বেলা না খেয়ে কাটাতে হয়।
জেলেদের অনেকে আবার এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছেন। তাদের প্রতি সপ্তাহে ঋণের কিস্তি টানতে হচ্ছে। এর মধ্যে মহাজন থেকে ধারদেনা করে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বহু কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন তারা।
জেলে প্রাণ জলদাশ বলেন, ত্রিশ কেজি করে সরকারের পক্ষ হতে ভিজিএফ চাল দেয়ার কথা হলেও দেড় মাসে কোনো কিছুই পাওয়া যায়নি।
প্রিয় লাল জলদাশ ও রিপন জলদাশ বলেন, আমাদের কান্না কেউ শোনে না। জেলেদের খোঁজ খবরও কেউ রাখে না। তারা বলেন, এই বছর তিন মাস মাছ শিকার বন্ধ রাখার কারণে গত দুই মাস জেলেদের সংসার কিভাবে চলছে কেউ সে খবরও রাখেনি।
কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশ্রাফ আহমেদ রাসেল বলেন, জেলেদের ভিজিএফ চাল এখনো আসেনি। কিছুটা সময় লাগছে। আসলে জেলেদের তা দিয়ে দেয়া হবে।
দেশের বৃহত্তম কৃত্রিম হ্রদটি কাপ্তাই হ্রদ নামে পরিচিত। ১৯৬০ সালের পর হতে এ হ্রদে মাছ শিকার, ব্যবসায় বাণিজ্য, বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন কিছুর ওপর নির্ভর করে বছরে কোটি কোটি টাকা আয় করা হয়।


আরো সংবাদ



premium cement