২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


লালমোহনের ঐতিহ্যবাহী বেতুয়া নদী এখন মরা খাল

বেতুয়া খালের ওপর নির্মিত সেতু :নয়া দিগন্ত -

দ্বীপজেলা ভোলার লালমোহনের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত এক সময়ের খরস্রোতা বেতুয়া নদী এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। বেতুয়ার পানিতে ভেসে গেছে কত ভিটেমাটি, বাড়িঘর ও ফসলি জমি। বেতুয়ার ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে কত মানুষ। কিন্তু কালের বিবর্তনে অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়েছে বেতুয়া নদী। ভোলা জেলার এক প্রান্তের সাথে অপর প্রান্তের যোগাযোগ স্থাপিত হতো লঞ্চ, গয়না ও ট্রলারের মাধ্যমে। বেতুয়ায় মাছ ধরে অনেকেই জীবিকা নির্বাহ করত। সেই বেতুয়া আজ শুধুই স্মৃতি, শুধুই মরা খাল। অনেক স্থানে এখনো মরা নদী বেতুয়ার স্মৃতি রয়ে গেছে।
লালমোহন উপজেলার লর্ডহার্ডিঞ্জ এলাকায় বেতুয়া বাঁধ, সøুইজ গেট ও খাল রয়েছে। চরফ্যাশন উপজেলার আসলামপুর ও লালমোহনের ধলীগৌরনগর, রমাগঞ্জ, লর্ডহার্ডিঞ্জ এলাকায় বেতুয়া খাল রয়েছে। এর দুই তীরে কৃষকেরা ইরি ও বোরো ধান চাষ করতেন। কিন্তু বেতুয়ার পানি দিয়ে এখন আর চাষাবাদ করা যাচ্ছে না। বর্ষার পর বেতুয়া শুকিয়ে যায়। পূর্বে মেঘনা আর পশ্চিমে তেঁতুলিয়া নদীর সংযোগ স্থাপনকারী এ নদীর বুকে এখন ফসল ফলে। গড়ে উঠেছে বসতি। বর্তমান প্রজন্মের কাছে বেতুয়া নদী এখন রূপকথার গল্পের মতো। ১৯৪০ সালে মেঘনার মোহনা বন্ধ করে দেয়ার কারণে স্রোতহীন হয়ে পড়ে বেতুয়া নদী এবং আস্তে আস্তে মরে যেতে থাকে নদীটি।
খরস্রোতা মেঘনা নদী থেকেই বেতুয়া নদীর সৃষ্টি হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। ১৬২৮ সালে প্রকাশিত রোহিনী কুমার সেনের লেখা বাকলা ইতিহাস গ্রন্থে বেতুয়া নদীর কথা উল্লেখ আছে।
লালমোহন উপজেলার দক্ষিণ ও চরফ্যাশন উপজেলার উত্তর সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে বেতুয়া নদী প্রবাহিত ছিল। এ স্থানে এখনো বেতুয়া নদীর অস্তিত্ব বিদ্যমান রয়েছে, যা বেতুয়া খাল নামে পরিচিত। সাগর মোহনার বক্ষ ছিঁড়ে দ্বীপরানী ভোলা জেগে ওঠার লগ্ন থেকেই বেতুয়া নদীর অস্তিত্বের সন্ধান পাওয়া যায়।
অধ্যাপক মোহাম্মদ হোসেন চৌধুরীর লেখা ভোলা জেলার ইতিহাস গ্রন্থে বর্তমান ভোলা শহরের মধ্য দিয়ে যুগীর ঘোল হয়ে বেতুয়া নদী প্রবহমান ছিল বলে উল্লেখ রয়েছে, যা এখন বেতুয়ার খাল নামে পরিচিত। লালমোহন উপজেলার রমাগঞ্জ, জিএম বাজার, অন্নদা প্রাসাদ গ্রামসহ কয়েকটি গ্রাম দিয়ে এখনো বেতুয়ার সরু খাল রয়েছে, বেতুয়া নদীর বুকে নৌকা ভাসিয়ে মাঝিমাল্লারা ভাটিয়ালী গাইতো। পটুয়াখালীর কালাইয়াসহ দূর-দূরান্তের হাটবাজারে মালামাল আনানেয়া করা হতো। ফসল উৎপাদনের জন্য কৃষি কাজে তখন বেতুয়ার পানি সেচ দেয়া হতো। ১৯৪০ সালের দিকে খরস্রোতা বেতুয়ায় বাঁধ দিতে গিয়ে অনেক শ্রমিক মারা যায়। কয়েক বছর লেগেছে এ বাঁধ নির্মাণকাজ শেষ করতে। লালমোহন ও চরফ্যাশন উপজেলার বেতুয়া সøুইজ গেটে গেলে দেখা যায় এ বাঁধের ওপর পাকা রাস্তা করা হয়েছে। বেতুয়াকে স্থানীয় লোকমুখের ভাষায় ‘বেউত্তার খাল’ বলা হয়।
মরে যাওয়ার পর বেতুয়া নদীর যেটুকু অস্তিত্ব আছে তা খনন করার দাবি জানিয়েছেন বেতুয়ার দুই তীরে বসবাসকারী জনগণ। এটাই উপজেলাবাসীর প্রাণের দাবি।

 


আরো সংবাদ



premium cement
স্বর্ণের দাম ভরিতে কমলো ১১৫৫ টাকা গাজায় গণহত্যা বন্ধের আহ্বান জানালো উত্তর আয়ারল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার হোসেনপুরে চাঞ্চল্যকর সবুজ মিয়ার হত্যায় ভাতিজা গ্রেফতার দেশের সর্বোচ্চ ৪৩ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড চুয়াডাঙ্গায় সীমান্তে গুলির শব্দ নেই, তবুও আতঙ্কে স্থানীয়রা রাঙ্গাবালীর খালে পাওয়া টর্পেডো উদ্ধার করেছে নৌ-বাহিনী লক্ষ্মীপুরে বিজয়ী ও পরাজিত উভয় চেয়ারম্যান প্রার্থী আটক ৩৪ বছরেও মুছেনি ভয়াল ২৯ এপ্রিলের দুঃসহ স্মৃতি যশোরে দেশের সর্বোচ্চ ৪২.৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড উত্তর ইসরাইলে হামাসের রকেট হামলা প্রচণ্ড গরমে বেতাগীতে ৪ শিক্ষার্থী শ্রেণিকক্ষে অসুস্থ

সকল