০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`


হিরো ‘ডিমবালকের’ জন্য টাকার বন্যা

- ছবি : সংগৃহীত

মুসলিমবিদ্বেষী মন্তব্যের প্রতিবাদে সিনেটরের মাথায় ডিম ফাটিয়ে রাতারাতি তারকা হয়ে ওঠেছিল অস্ট্রেলিয়ার এক কিশোর। এবার তার জন্য তহবিল জোগাড় করতে গিয়ে আরেক মধুর সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। লক্ষ্যের চেয়ে অনেক বেশি টাকা উঠে গেছে সেখানে। অথচ সেই টাকা নিতে রাজি নয় ওই কিশোর।

গত শুক্রবার নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে হামলা চালায় অস্ট্রেলিয়ার এক সন্ত্রাসী। তাতে মারা যায় ৫০ জন মুসলিম। পুরো বিশ্ব যখন এই ইসলামবিদ্বেষী হামলার নিন্দা করছিল, তখন এ ঘটনার জন্য মুসলিম অভিবাসী ও শরণার্থীদেরই দায়ী করেন অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের সিনেটর ফ্রেজার অ্যানিং।

সংবাদ মাধ্যমের সামনেই ওই মন্তব্য করেন তিনি। এ সময় তার মাথায় কাচা ডিম ভাঙে উইল কনোলি নামের এক কিশোর। ফ্রেজার ক্ষিপ্ত হয়ে থাপ্পর মারেন ওই কিশোরকে। মুহূর্তেই তা সামাজিক গণমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।

এর পর শুরু হয় ফ্রেজারের বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনা। অনেকে তাকে সিনেটর পথ থেকে অপসারণ চেয়ে পিটিশনেও সই করেন। পুলিশ সে সময় উইল কনোলিকে ছেড়ে দিলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে, এর জন্য তাকে হয়তো আইনি ঝামেলা পোহাতে হতে পারে। ইতোমধ্যে এ ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। আর সে কারণে তার জন্য ‘গো ফান্ড মি’ ওয়েবসাইটে ‘মানি ফর এগবয়’ নামের একটি তহবিল খোলা হয়। এর পরপরই শুরু হয় টাকার বন্যা।

যেখানে মোটামুটি দুই লক্ষ টাকার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল, তাতে একদিনেই উঠে আসে ২০ লক্ষ টাকা। প্রায় তিন হাজার মানুষ ওই তহবিলে টাকা দেন। কিন্তু এ নিয়ে আপত্তি উইলের। অত টাকা নিতে রাজি নয় সে। তাই আইনি লড়াইয়ের পর যে টাকা বেঁচে যাবে তা ক্রাইস্টচার্চ হামলায় হতাহতদের পরিবারের হাতে তুলে দেয়া হবে বলে জানিয়েছে সে।

 

আরো পড়ুন : মুসলমানদের ‘অপরাধী’ বলায় এমপির মাথায় ডিম
নয়া দিগন্ত অনলাইন, ৭ মার্চ ২০১৯, ০৬:৫১

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে বন্দুকধারী সন্ত্রাসীর হামলার ঘটনায় সাড়া বিশ্ব যখন ক্ষুব্ধ তখন মুসলমানদের বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন অস্ট্রেলিয়ার। তবে এই ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ হিসেবে তারা মাথায় ডিম ভেঙেছেন এক ক্ষুব্ধ তরুণ। এ ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে অনলাইনে।

শনিবার মেলবোর্নে একটি অনুষ্ঠানের পর এক সাংবাদিকের সাথে কথা বলার সময় এক তরুণ পেছন থেকে এসে সিনেটর ফ্রাসের অ্যানিংয়ের মাথায় সজোরে একটি কাঁচা ডিম ভাঙেন।

শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলার পর কুইন্সল্যান্ড থেকে নির্বাচিত সিনেটর অ্যানিং মুসলমানদের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, মুসলমানরাই প্রকৃত অপরাধী। এই বক্তব্যের পর তার সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠে সবাই। শুক্রবারের ওই হত্যাকাণ্ডের দিনই তিনি এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, ক্রাইস্টচার্চের হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী মুসলমান অভিবাসীরা। তিনি বলেন, ‘আমাদের বুঝতে হবে- আজ মুসলমানরা হত্যাকাণ্ডের শিকার হলেও আসলে তারাই অপরাধী। বিশ্বব্যাপী তারা মানুষ হত্যা করছে’।

পরদিন শনিবার মেলবোর্নে একটি সংবাদপত্রের সাথে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন অ্যানিং। সে সময় হঠাৎ করে পেছন থেকে এক তরুণ এসে একটি কাঁচা ডিম সজোরে ভাঙেন তার ন্যাড়া মাথায়। তরুণ পেছন দিকে কিছুটা দূরে ছিলেন। তার এক হাতে ছিলো ডিম ও আরেক হাতে মোবাইল ফোন। মোবাইল ফোনের ভিডিও অপশন চালু করেই তিনি হেঁটে গিয়ে ডিমটি ভাঙেন সিনেটরের মাথায়। ঘটনায় আকস্মিকতায় হতবম্ব হয়ে যান সিনেটর। তবে দ্রুত নিজেকে সামলে নিয়ে ওই তরুণকে পরপর দুটি চড় মারেন তিনি। এরপর সিনেটরের সঙ্গে থাকা একজন এসে তরুণটিকে জাপটে ধরে মাটিতে শুয়ে পড়ে। পরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয় তাকে। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে অবশ্য ছেড়ে দেয়া হয়েছে। সিনেটরের মাথায় ডিম ভাঙার সময় তরুণটির অন্য হাতে ছিলো মোবাইল ফোন, সে নিজেই এই দৃশ্য ভিডিও করছিলো। তরুণের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।

ক্ষুব্ধ তরুণকে সরিয়ে নেয়ার পর সিনেটরের এক সাপোর্টারকে বলতে শোনা যায়, তরুণ প্রজন্ম যুদ্ধ শুরু করেছে। জবাবে সিনেটর বলেন, ‘সে অল্প বয়সী ও ক্ষুব্ধ, তবে সত্যি’।

যে অনুষ্ঠানের পর এই ঘটনা ঘটেছে সেই অনুষ্ঠানেও অনেক দর্শক সিনেটর অ্যানিংয়ের আপত্তিকর মন্তব্যের জন্য বিক্ষোভ করেছিলেন। ডানপন্থী আন্দোলনের সাথে জড়িত নেইল এরিকসন নামের এক একজন ওই ঘটনার পর চিৎকার করে আয়োজকদের উদ্দেশ্যে বলেন সেখান থেকে বিক্ষোভকারীদের ও সাংবাদিকদের সরিয়ে দিতে। সে বলেন, সাংবাদিকদের বের করে দাও,... তোমরা যদি তাকে পছন্দ না করে তবে চলে যাও’।

সিনেটর অ্যানিং অনেক দিন ধরেই শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদী হিসেবে পরিচিত। এই আদর্শের জন্য তিনি তার পূর্বের রাজনৈতিক দল কাট্টার্স অস্ট্রেলিয়ান পার্টি থেকে বহিষ্কার হয়েছিলেন।


আরো সংবাদ



premium cement