২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

শতাধিক পুলিশকে হত্যার হুমকি প্রেসিডেন্টের

শতাধিক পুলিশকে হত্যার হুমকি প্রেসিডেন্টের - সংগৃহীত

মাদক সংশ্লিষ্টতাসহ অন্যান্য অপরাধে জড়িত দুর্নীতিবাজ শতাধিক পুলিশ কর্মকর্তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছেন ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতের্তে। মঙ্গলবার ওসব পুলিশ সদস্য তার সাথে দেখা করতে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে গেলে তিনি এ হুমকি দেন। দুতের্তের এ হুমকি প্রদান দেশটির টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়েছে। 

পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, ওই দিন শতাধিক পুলিশ সদস্যকে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে ডেকে পাঠান দুতের্তে। এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ, অপহরণ, ডাকাতিসহ বিভিন্ন ধরনের ফৌজদারি মামলা রয়েছে।

এ সময় তাদের উদ্দেশ্যে দুতের্তে বলেন, ‘তোমরা যদি এভাবেই চলতে থাকো, আমি তোমাদের সত্যি সত্যি খুন করে ফেলব। শুয়রের বাচ্চারা! আমার একটি বিশেষ ইউনিট আছে, যা আপনাদের ওপর জীবনভর নজর রাখবে এবং যদি আপনারা সামান্যতম কোনো ভুলও করেন, তবে আমি তাদেরকে আপনাদের হত্যার নির্দেশ দেব।’

 পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে দুতার্তেকে বলতে দেখা যায়, ‘তোমাদের আর দরকার নেই, তোমরা সমাজের শত্রু।  দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার বন্ধ না করলে আমি তোমাদের খুন করবো। তোমাদের ভাগ্য ভাল এখানে অনেক মানুষ উপস্থিত আছে। নইলে আমি এখনই তোমাদের মারা শুরু করতাম।’

 

স্বায়ত্তশাসন পেল ফিলিপাইনের মরো মুসলিমরা
ডেইলি সবাহ, ২৯ জুলাই ২০১৮

ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত মিন্দানাও দ্বীপ ও এর আশেপাশের অঞ্চলে মরো মুসলিমদের স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রস্তাবিত আইনে স্বাক্ষর করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রডরিগো দুতার্তে। এর মাধ্যমে অর্ধশতাব্দী ধরে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে চলা অস্থিরতার নিষ্পত্তি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রেসিডেন্ট দফতরের মুখপাত্র হ্যারি রোক এবং আরেকজন গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী বং গো গত বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেন, স্বায়ত্তশাসন পাওয়া মুসলিম অঞ্চলটির নাম হচ্ছে ‘বাংসামরো’। ফিলিপিনো বাংসোমরো শব্দের অর্থ ‘মরো জাতির দেশ’।

মুখপাত্র হ্যারি রোক ও বং গো আরো জানান, দুই দশক ধরে চার প্রেসিডেন্টের আমল থেকে আলোচিত হয়ে আসা অবশেষে এ সপ্তাহে দেশটির পার্লামেন্টের দুই কক্ষের অনুমোদন পায় আইনটি।

মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ মিন্দানাও অঞ্চলের বাংসোমরোর জন্য আলাদা সাংবিধানিক আইনব্যবস্থার জন্য এ আইনে স্বাক্ষর করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট দুতার্তে। মিন্দানাওয়ের দক্ষিণ অঞ্চল থেকে নির্বাচিত হওয়া দেশটির প্রথম প্রেসিডেন্ট দুতার্তে এ আইন পাসের ব্যাপারে কংগ্রেসকে জোর দিয়েছিলেন। যার কারণে মূলত কয়েক দশক ধরে অঞ্চলটিতে মুসলিম স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী মরো ইসলামিক লিবারেশন ফ্রন্টের (এমআইএলএফ) সাথে শান্তি স্থাপন সম্ভব হলো।

ফিলিপাইনের মিন্দানাওয়ে বাংসোমরো স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য ‘বাংসোমরো অর্গানিক ল’ নামক এই আইনে স্বাক্ষর করেন দুতার্তে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর জাতির উদ্দেশে দেয়া তৃতীয় ভাষণে তিনি মরো মুসলিমদের স্বায়ত্তশাসন দেয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন।

উল্লেখ্য, গত শতাব্দীর ষাটের দশক থেকে স্বাধীন ভূমির জন্য লড়াই করে আসছিল এমআইএলএফ। এর জন্য ফিলিপাইনি সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে ৩০ হাজার সশস্ত্র যোদ্ধার মাধ্যমে এক শক্তিশালী সামরিক বাহিনী গড়ে তুলেছিল তারা।
এখন মিন্দানাও মুসলিম প্রশাসকের মাধ্যমে এমআইএলএফের সাথে শান্তি চুক্তির পর আইন পাসের মধ্য দিয়ে অঞ্চলটিতে মুসলমানদের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার দিয়ে মূলত শান্তি ফিরিয়ে আনলেন প্রেসিডেন্ট দুতার্তে।

এর ফলে দীর্ঘ দিনের বিবদমান দুই পক্ষই বিশ্বাস করে এ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে। সেই সাথে সহিংসতা বন্ধ হয়ে বাংসোমরো বিনিয়োগে আকর্ষণীয় অঞ্চল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে এবং দীর্ঘ দিন ধরে অস্থিরতার ফলে দারিদ্র্যের কশাঘাত থেকে মুক্তি পাবে এখানকার মানুষ।

এ দিকে চলতি বছর শেষ হওয়ার আগেই আরো একটি শান্তিচুক্তি করতে এমআইএলএফের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান নুর মিসৌরির সাথে আলোচনা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট দুতার্তে। জাম্বোআঙ্গা সিবুগা প্রদেশের এক অনুষ্ঠানে তিনি তার এই আগ্রহের কথা কলেন। দুতার্তে বলেন, ‘নুর, যদি আপনি আমার ভাই হয়ে থাকেন এবং যদি আপনি আমার এই কথা শুনতে পান, তাহলে চলুন আমরা আলোচনা ও সংলাপ করি। কারণ আমরা দুজনেই বৃদ্ধ। আমার এবং আপনার মধ্যে যুদ্ধ কোনো অপশন হিসেবে থাকতে পারে না।’

উল্লেখ্য, এমএনএলএফ গ্রুপ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এমআইএলএফ প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬০-এর দশকের শেষের দিকে এই দুইটি গ্রুপের সাথে সমাজতান্ত্রিক ভাবধারার নিউ পিপলস আর্মি (এনপিএ) স্বাধীনতার দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ফিলিপাইনের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু করে।


আরো সংবাদ



premium cement