উদ্ধারের তিন সপ্তাহ পর বাড়িতে ঘুমালো থাই কিশোররা
- রয়টার্স
- ১৯ জুলাই ২০১৮, ২১:৪৪
তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় পর নিজেদের বাড়িতে পরিবারের সাথে ঘুমিয়েছেন থাইল্যান্ডের গুহা থেকে উদ্ধার হওয়া কিশোর ফুটবলাররা। তাদের মধ্যে অনেকে আবার গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে ঘুম থেকে জেগে উঠে ধর্মীয় কর্মকান্ডে অংশও নিয়েছেন।
দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ চিয়াং রাইয়ের একটি হাসপাতাল থেকে গত বুধবার ১২ জন কিশোর ফুটবলার এবং তাদের ২৫ বছর বয়সী কোচকে ছাড়পত্র দেয়া হয় এবং এরপরই তারা প্রথমবারের মত জনসম্মুখে আসেন। উল্লেখ্য, কিশোর ফুটবলারদের বয়স ১১ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে।
থাইল্যান্ডের জাতীয় টিভিতে সম্প্রচারিত এক ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, কিশোর ফুটবলাররা হাসছেন, মজা করছেন এবং একে অপরের মধ্যে ঐক্য প্রকাশ করছেন। পাশাপাশি থাম লুয়াং গুহায় আটক থাকার সময়কার ভীতিকর অভিজ্ঞতা তারা বিস্তারিত বর্ণনা করেন।
মিয়ানমার সীমান্তবর্তী মাঈ সাই জেলা থেকেই অধিকাংশ কিশোরদের অভ্যর্থনা জানানো হয়। হাসি, কান্না এবং বুকে জড়িয়ে ধরে পরিবারের সদস্য, আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুরা কিশোরদের বরণ করে নেয়। অন্যদেরকে বাড়িতে প্রবেশের সময় পানি পান করিয়ে বরণ করে নেয়া হয়।
বৃহস্পতিবার কয়েকজন কিশোর ও তাদের আত্মীয়স্বজনরা মাঈ সাই জেলার প্রাচীন ওয়াত ফা থাত দোই ওয়াও মন্দিরে ধর্মীয় কর্মকান্ডে অংশ নেন। অবশ্য এসময় কিশোর ও তাদের পরিবারের কাছে সাংবাদিকদের যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়নি।
থাম লুয়াং গুহায় ১৮ দিন আটক থাকার পর গত সপ্তাহের মঙ্গলবার কিশোরদের সর্বশেষ গ্রুপকে উদ্ধার করে বাইরে আনা হয়। আটকে পড়া কিশোর ফুটবলার ও তাদের কোচকে নিরাপদে বাইরে বের করে আনা সম্ভব হলেও উদ্ধার কাজ চালানোর সময় থাই নেভি সিলের সাবেক ডুবুরি নিহত হন। স্বেচ্ছাসেবক কর্মী হিসেবে উদ্ধার কাজে অংশ নেয়া নিহত এই ডুবুরির নাম সামার্ন কুনান। থাম লুয়াং গুহার গভীরে গত ৬ জুলাই অক্সিজেন ট্যাংক বসানোর সময় সামার্ন জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন এবং পরে মারা যান। ঠিক এর দুইদিন পরেই কিশোর ফুটবলারদের প্রথম গ্রুপকে নিরাপদে বের করে আনা হয়।
হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর এক টিভি অনুষ্ঠানে কিশোর ফুটবলাররা বলেন, গত ২৩ জুন ফুটবল অনুশীলন শেষে মাত্র এক ঘন্টার জন্য থাম লুয়াং গুহা ঘুরে দেখার পরিকল্পনা করেন তারা। কিন্তু বৃষ্টির পানিতে গুহার মুখ প্লাবিত হয়ে গেলে তারা ভিতরে আটকা পড়েন। তাদের কাছে কোন খাবার ছিল না, বৃষ্টির পানি খেয়ে নিজেদের জীবন রক্ষা করতে হয়েছে বলে জানান কিশোররা। পাশাপাশি বাইরে বের হওয়ার পথ খুজে পাওয়ার আশায় তারা গুহার দেয়ালও খুড়তে শুরু করেছিলেন।
পর্নচাই কামলুয়াং নামে উদ্ধারকৃত ১৬ বছর বয়সী এক কিশোর ফুটবলার বলেন,‘বাইরে বৃষ্টির ফলে গুহার ছাদ দিয়ে চুইয়ে পড়া পানি আমরা পান করেছিলাম। প্রথম দিন আমাদের কোন সমস্যা হয়নি। কিন্তু দুইদিন পর থেকে আমরা দুর্বল হয়ে পড়তে থাকি।’
ফুটবল দলের সর্বকনিষ্ঠ সদস্যের নাম তিতান। তিনি বলেন,‘এই অভিজ্ঞতা আমাকে আরো শক্তিশালী করেছে এবং কখনো হাল ছেড়ে না দিতে শিক্ষা দিয়েছে।’
ফুটবল দলের কোচ গত বুধবার জানিয়েছিলেন, নিহত ডুবুরির প্রতি সম্মান জানাতে কিশোর ফুটবলাররা শিক্ষার্থী হিসেবে বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের সাথে সময় কাটাবেন। সেই অনুযায়ী তারা গতকাল বৃহস্পতিবার মন্দিরে যান।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা