২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

৫ম বার প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হচ্ছেন না আবদেল আজিজ

আলজেরিয়া
৫ম বার প্রেসিডেন্ট প্রার্থী না হওয়ার ঘোষণা আবদেল আজিজের - ছবি : আল জাজিরা

অবশেষে পরবর্তী নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলেন আলজেরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট আবদেল আজিজ বুতেফলিকা।

এক ঘোষণায় তিনি জানিয়েছেন, নিজের পঞ্চম মেয়াদের জন্য নির্বাচনে লড়ছেন না তিনি। খবর আলজাজিরার।

সোমবার বিক্ষোভের মধ্যেই সুইজারল্যান্ডের রাজধানী জেনেভা থেকে দেশে ফিরেছেন বুতেফলিকা। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন।

এর আগে বুতেফলিকার নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করার ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই দেশজুড়ে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে লাখ লাখ মানুষ বিশেষ করে তরুণরা রাস্তায় নেমে আসে। বুতেফলিকার ২০ বছরের শাসনামলে তার বিরুদ্ধে এটাই সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ বলে মনে করা হচ্ছে। রাজধানী আলজিয়ার্সে বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশকে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করতে হয়েছে।

প্রেসিডেন্টের নতুন ঘোষণার সাথে সাথে নির্বাচনের সময়ও পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন হচ্ছে না।

তবে তার এ ঘোষণায়ও সন্তুষ্ট হতে পারেননি বিক্ষোভকারীরা। তারা প্রেসিডেন্ট বুতেফলিকার দ্রুত পদত্যাগ দাবি করেছেন।

আগামী মাসের ১৮ তারিখে নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। তবে চলতি বছরের শেষের দিকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানানো হয়েছে। প্রেসিডেন্ট বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেয়া বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ দাবি করেছেন।

এদিকে, দেশটির এক হাজারের বেশি বিচারক সোমবার ঘোষণা দিয়েছিল যে, তারা এপ্রিলের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন তত্ত্বাবধান করবেন না।

আরো পড়ুন :
অবস্থা ‘জীবন্মৃত’, তারপরও ৫ম বার প্রেসিডেন্ট প্রার্থী!
নয়া দিগন্ত অনলাইন, ০৬ মার্চ ২০১৯
এখন বয়স ৮২ বছর কিন্তু তারপরও তিনি রাজনীতি থেকে অবসর গ্রহণে ইচ্ছুক নন। সমালোচকরা বলেন ‘জীবন্মৃত’।

আলজেরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট আব্দেল আজিজ বুতেফলিকার কথা বলা হচ্ছে। তিনি নিজের পঞ্চম মেয়াদের জন্য নির্বাচন করছেন।

যদিও ২০১৩ সালে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে তিনি কার্যত পক্ষাঘাতগ্রস্ত।

এরপর থেকেই তাকে প্রকাশ্যে কোনো কথা বলতে শোনা যায়নি।

আঞ্চলিক পর্যবেক্ষকদের মতে ১৮ এপ্রিলের ভোটে তিনি জিতেও যেতে পারেন। যদিও ২০ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকার পর শাসনক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার চেষ্টার বিরুদ্ধে ক্ষোভও দেখা যাচ্ছে অনেক।

সারাদেশে লাখ লাখ মানুষ বিশেষ করে তরুণরা শুক্রবারও রাস্তায় নেমে এসেছিলো অসুস্থ প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে অংশ নিতে।

আরব বসন্ত শুরু হওয়ার পর এটাকেই সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ বলে মনে করা হচ্ছে এবং রাজধানী আলজিয়ার্সে পুলিশকে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করতে হয়েছে।

যদিও তাদের এসব প্রতিবাদ প্রেসিডেন্ট বুতেফলিকার কানে যায়নি।

তিনি প্রতিবাদকারীদের উদ্দেশ্যে কিছু বলেননি। কারণ তিন সুইজারল্যান্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

দ্য লিভিং ডেড বা জীবন্মৃত
আব্দেল আজিজ বুতেফলিকার চরম সমালোচকরা তাকে ‘দ্য লিভিং ডেড’ বা জীবন্ত লাশ হিসেবে আখ্যায়িত করে থাকেন।

উত্তর আফ্রিকা বিশেষজ্ঞ ক্রিস্টিনা মাস বলেন, বিরোধীরা তাকে ‘দা ফ্রেম’ও বলে থাকেন। কারণ অসুস্থতা ও কোনো অনুষ্ঠানে যোগ দিতে না পারা। এমনকি প্রার্থিতা ঘোষণার দিনসহ অনেক অনুষ্ঠানেই তার বাধাই করা ছবি রাখা হয়েছিলো তার নিজের উপস্থিতির পরিবর্তে।

‘এমনকি তার অবস্থা নিয়ে এতোই অনিশ্চয়তা যে, গত সোমবার প্যারিসে আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূতকে একটি বিবৃতি দিতে হয়েছিলো যে প্রেসিডেন্ট এখনো জীবিত আছেন।’

কিন্তু প্রেসিডেন্ট যদি তার প্রাত্যহিক কাজ করতে না পারেন তার তার দায়িত্বে কে?

রক্ত ও মৃত্যুর দশক : বুতেফলিকা কিভাবে ক্ষমতায় আসেন
আলজেরিয়াকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলা হলেও দেশটি পরিচালিত হয় আসলে ক্ষমতাসীনদের ইচ্ছা অনুযায়ী।

একদল সামরিক কর্মকর্তা আর অনির্বাচিত ব্যবসায়ীরা দেশ চালানোর ক্ষেত্রে বড় বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন এবং তারাই রাজত্বকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন যখন অসুস্থ প্রেসিডেন্ট অবস্থান নিয়ে আছেন এক কোনায় - বলছিলেন বিবিসির মোহামেদ ইয়াহিয়া।

সাংবাদিক মার্ক মারজাইনদাস আলজেরিয়ায় বসবাস ও কাজ করতেন ৯০-এর দশকে।

তার মতে, ‘৯০ এর দশকে গৃহযুদ্ধের মধ্য দিয়ে উত্থান হয়েছিলো প্রেসিডেন্ট বুতেফলিকার। এরপর থেকেই ক্ষমতা আসলে রাজনীতিক ও সামরিক একটি যৌথ মাফিয়া চক্রের কাছে।’

তারাই এরপর মুক্তবাজার অর্থনীতির দিকে অগ্রসর হয়।

আজকের আলজেরিয়াকে বুঝতে হলে ফিরে যেতে হবে ৯০-এর দশকে কি ঘটেছিলো সেদিকে।

দেশটি দীর্ঘ যুদ্ধের পর ১৯৬০ সালে ফ্রান্সের কাছ থেকে স্বাধীনতা পেয়েছিলো।

এরপর ভঙ্গুর গণতন্ত্রের পথ ধরে ইসলামপন্থীরা ১৯৯০ সালের নির্বাচনে জয়ী হলে সামরিক বাহিনী হস্তক্ষেপ করে।

এরপর গৃহযুদ্ধে এক দশকে প্রায় দু লাখ মানুষ নিহত হয়।

সাংবাদিক মার্ক মারজাইনদাসের মতে, সেটি ছিলো আলজেরিয়ার সবচেয়ে অন্ধকার সময়।

পরে ১৯৯৯ সালে আব্দেল আজিজ বুতেফলিকা ক্ষমতায় আসেন।

কিন্তু এখন তিনি দুর্বল, আর এ সুযোগে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে নানা দল ও উপদল।

অন্যদিকে তার পুনঃনির্বাচনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে এসেছে তরুণরা।

তারা শ্লোগান দিচ্ছে ‘বাই বাই বুতেফলিকা’।

স্থানীয় মিডিয়ার মতে, গত ত্রিশ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ হয়েছে যার নেতৃত্বে আসলে ছাত্র ও বিভিন্ন খাতের তরুণরা।

বয়সে তরুণ এ দেশটির জনসংখ্যা চার কোটির সামান্য বেশি।

এর মধ্যেই রোববার রাতে প্রেসিডেন্টের একটি চিঠি পড়ে শোনানো হয়েছে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে।

যেখানে তিনি বলেন, ‘প্রতিবাদকারীদের গভীর কান্না আমি শুনেছি।’

তিনি তাই অঙ্গীকার করেন যে, পুননির্বাচিত হলে রাজনৈতিক সংস্কার ও আরেকটি নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণের জন্য তিনি একটি কনফারেন্সের আয়োজন করবেন।

যদিও নতুন প্রজন্মের কাছে এ ধরনের ভারী কথাবার্তার কতটা মূল্য আছে সেটি সময়ই বলে দেবে।

সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement
বাংলাদেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসায় বিনিয়োগ সম্ভাবনা অন্বেষণে থাইল্যান্ডের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান ট্রাম্পের বিচার নিয়ে বিভক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট চুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত, ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত আমদানি ব্যয় কমাতে দক্ষিণাঞ্চলের সূর্যমুখী তেলের আবাদ পাকুন্দিয়ায় গানের আসরে মারামারি, কলেজছাত্র নিহত আবারো হার পাকিস্তানের, শেষ সিরিজ জয়ের স্বপ্ন পাটকেলঘাটায় অগ্নিকাণ্ডে ৩ দোকান পুড়ে ছাই ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা শুরু দোয়ারাবাজারে পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীকে হত্যা : স্বামীর আমৃত্যু কারাদণ্ড গাজীপুরে ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রীর লাশ উদ্ধার ভারতে দ্বিতীয় পর্বে ৮৮ আসনে ভোট

সকল