৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


বিপর্যয়কর সঙ্কটের মুখোমুখি সুদান, উপেক্ষা বিশ্বের

বিপর্যয়কর সঙ্কটের মুখোমুখি সুদান, উপেক্ষা বিশ্বের - ছবি : সংগৃহীত

জাতিসঙ্ঘ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে, সুদানের লাখ লাখ মানুষের জীবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশটির যে বিপুল মানবিক সহায়তা দরকার তা উপেক্ষা করছে সারাবিশ্ব।

সুদান এক বছর ধরে যুদ্ধের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। মানবিক সংস্থাগুলো সম্মত যে বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ মানবসৃষ্ট বিপর্যয়গুলোর মধ্যে একটি সৃষ্টি করার জন্যে দায়ী এই যুদ্ধটি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলে, ‘এ যুদ্ধে একটি অবিশ্বাস্যরকম জীবনের মূল্য দিতে হয়েছে।’

এতে ১৫ হাজার জনেরও বেশি মারা গেছে এবং আনুমানিক ৩৩ হাজার জন আহত হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মুখপাত্র ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডমেয়ার শুক্রবার জেনেভায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘নিহতদের সংখ্যা সম্ভবত কম বলে মনে হচ্ছে।’

লিন্ডমেয়ার বলেন, ‘আমরা আশঙ্কা করছি বাস্তুচ্যুতি, রোগের প্রাদুর্ভাব এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা, মা ও নবজাতকের স্বাস্থ্যের চাহিদা এবং খাদ্য ও পানির অভাবের কারণে সমগ্র জনসংখ্যা জুড়ে আরো বেশি লোকের মৃত্যু ঘটতে পারে।’

ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনের (আইওএম) একটি নতুন প্রতিবেদন অনুসারে, সুদানে প্রতিদিন ২০ হাজার মানুষ, যাদের অর্ধেক শিশু, তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে।

আইওএম বলে, এক বছর আগে ১৫ এপ্রিল যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ৮৬ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সুদানের অভ্যন্তরে ৬৬ লাখ মানুষ এবং ১৮ লাখ মানুষ প্রতিবেশী দেশগুলোতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আরো সতর্ক করেছে, সুদান শিগগিরই বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর খাদ্য সঙ্কটাপন্ন দেশে পরিণত হতে পারে। কারণ প্রায় এক কোটি ৮০ লাখ মানুষ তীব্র ক্ষুধায় ভুগছে এবং আরো ৫০ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।

তারপরেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মুখপাত্র লিন্ডমেয়ার বলেন, ‘এটি ক্রমবর্ধমান মারাত্মক পরিস্থিতি সৃষ্টির কেবল শুরু মাত্র।’

তিনি আরো বলেন, ‘মানবাধিকার গোষ্ঠীদের প্রবেশাধিকার বিশেষভাবে সীমাবদ্ধ। সুদানের অভ্যন্তর থেকে এর অর্ধেক রাজ্যেই প্রবেশ করা সম্ভব নয়। দারফুর এবং কর্ডোফান দুর্গম এবং মানবিক সাহায্যের নাগাল থেকে বিচ্ছিন্ন।’

সুদানের জাতীয় সেনাবাহিনী এবং প্রতিদ্বন্দ্বী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস মিলিশিয়া ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল যুদ্ধ শুরু করে। দু’পক্ষই দেশটির সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। দু’পক্ষই মানবিক সহায়তা গোষ্ঠী এবং ত্রাণসামগ্রী বেসামরিক মানুষের কাছে পৌঁছানো কঠিন করে তুলেছে।

এমএসএফ, যা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস নামেও পরিচিত, সারাবিশ্বকে অভিযুক্ত করেছে যে তারা যুদ্ধরত পক্ষগুলোর ইচ্ছাকৃতভাবে মানবিক প্রবেশাধিকার এবং সহায়তা বিতরণকে অবরুদ্ধ করার ব্যাপারটি উপেক্ষা করছে। এর ফলে লাখ লাখ লোক ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে।

সুদানে সঙ্ঘাতের প্রথম বার্ষিকীর প্রাক্কালে, ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ রেড ক্রস এবং রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি যুদ্ধরত পক্ষগুলোকে যুদ্ধবিরতিকে সমর্থন করার জন্য এবং মানবতার স্বার্থে, দুর্ভোগের শিকার জনগণ এবং শিশুদের জন্য সংলাপে সংযুক্ত হওয়ার জন্য আহ্বান জানায়।

শুক্রবার জাতিসঙ্ঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) একটি প্রতিবেদন গ্রামীণ সমাজের ওপর সশস্ত্র সঙ্ঘাতের সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রভাবগুলো মূল্যায়ন করেছে।

ইউএনডিপি সমীক্ষাটি সুদান জুড়ে সাড়ে চার হাজার ৫০০ টিরও বেশি গ্রামীণ পরিবারের ওপর জরিপ করে প্রস্তুত করা হয়েছে। তারা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে দেশটি একটি ক্রমবর্ধমান খাদ্য নিরাপত্তা সঙ্কটের মুখোমুখি।

এই সমীক্ষা মতে, খাদ্য উৎপাদন এবং সরবরাহ চেইন চলমান যুদ্ধের কারণে ব্যাহত হয়েছে এবং সতর্ক করে যে সুদানে ২০২৪ সালে একটি দুর্ভিক্ষ আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষ করে খার্তুম এবং আল-জাজিরা রাজ্যে এবং দারফুর এবং কর্ডোফান অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে।
সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা


আরো সংবাদ



premium cement
বরিশালে আইএইচটির ২ ছাত্রকে তুলে নিয়ে ছাত্রলীগের মারধর খালে পাওয়া ‘টর্পেডো’টি বাংলাদেশের নয় : ওসি হেলাল উদ্দিন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী ট্রাস্টের মহিলা মাহফিল অনুষ্ঠিত বগুড়ায় বসতবাড়িতে পটকা তৈরির কারখানা বিস্ফোরণে আহত ৪ কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের অভিযানে আটক ৩ জামালপুরে সেচ পাম্পে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট কৃষকের মৃত্যু রাজশাহীর পদ্মায় ডুবে তাবলিগ জামাতের সদস্যের মৃত্যু খিলগাঁও তালতলা মার্কেটে ক্যাশলেস লেনদেন চালু জবি শিক্ষককে হেনস্তা সতর্ক করেই দায় সেরেছে প্রশাসন আল্লামা জুলকারনাইনের ইন্তেকাল

সকল