২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

স্মরণ করছি তোমায় বিগত বছর

জীবনের বাঁকে বাঁকে
-

নতুন বছরের আগমন নিয়ে না চাইলেও মনে কিছু প্রশ্ন এসে যায়।
কতরকম ভাবনা। এ বছরটা কেমন যাবে? সব না পাওয়া আশাগুলো পূরণ হবে তো? গত বছরের চেয়ে এ বছর সফলতায় ভরপুর হবে তো? এটা যখনই মনে হচ্ছিল, হঠাৎ মনে পড়ে গেল এ বছরটা আমার জন্য একটা ভয়ঙ্কর বিয়োগব্যথা দিয়ে গেছে যা চিরদিন মনে থাকবে। ভারাক্রান্ত হৃদয় নীড়ে গাঁথা থাকবে ২০১৯ সাল। আমার অনেক আপনজন যাকে সেই ছেলেবেলা থেকে পরম প্রিয় মানুষ হিসেবে পেয়েছি, তাকে হারিয়েছি এ বছর।
জানি অনেকে বলবেন, নানী-দাদী কারো চিরকাল থাকে না। হ্যাঁ থাকে না, কিন্তু হারানোর বেদনা তাই বলে একটুও কম নয়, বরং বেশিই।
আমার স্নেহময়ী নানীজান গত হয়েছেন এ বছরের রমজানের ঈদের একদিন আগে। অনেক কষ্ট আর জমাট অশ্রু নিয়ে আজ স্মরণ করছি তাকে। ভীষণ অন্যরকম ছিলেন আমার নানীজান। নামাজ পড়তেন, পর্দা করতেন আর তসবিহ টিপতেন। সারাক্ষণ আল্লাহ এবং তার রাসূলের গল্প ছিল তার মুখে। জন্ম থেকে দেখেছি তাহাজ্জুত নামাজ পড়তেন নিয়মিত আর সব নফল নামাজ আদায় করতেন। ধর্মীয় শিক্ষা আমরা অনেকটা নানীজানের কাছে পেয়েছি। ছেলেবেলায় তার চমৎকার কণ্ঠে গজল শুনে ঘুমাতাম।
ধৈর্যের এক পাহাড় ছিলেন আমাদের নানীজান। কখনো রাগ করতে দেখিনি। আটজন ছেলেমেয়ের মা তিনি। নাতি-নাতনীও অনেক। তাই বলে কেউ কখনো তার স্নেহের কমবেশি অনুভব করতে পারিনি। অল্প একটু খাবারেরও সুষম বণ্টন হতে দেখেছি জাদুর মতো।
কেউ দূরে থাকলে তার কথা ভুলতেন না। আমরা যারা ছোট, সবাই যেকোনো বিষয়ে রাগ করলে সেটা ভাঙানোর দায়িত্বটা তিনি নিতেন। যতটুকু রাগ করতাম, তার চেয়ে দ্বিগুণ ভাব দেখাতাম নানীজান সাধতে এলে। জানতাম, তিনি আমাদের সবাইকে ছাড়া খাবেন না।
আমাদের বৃহৎ পরিবারের সবার দোয়ার ভাণ্ডার ছিলেন আমাদের নানীজান। যেকোনো কিছু চাওয়ার হলে রোজা রাখতেন, রাতভর ইবাদত করতেন, পেয়েও যেতাম আল্লাহর রহমতে। গত বছরও আমার মেয়ের সমাপনী পরীক্ষার জন্য দোয়া করলেন, কোন শিক্ষকের কাছে পড়ালে ভালো হবে পরামর্শ দিলেন। মেয়ে ভালো রেজাল্ট করল। বুঝতেও পারিনি, এটাই ছিল তার দেয়া শেষ পরামর্শ।
নানাজান বিগত হয়েছেন ২০০০ সালে। তার পর এই ১৯ বছর একাকী জীবনে তিনি আমাদের সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করেছেন। সবার খোঁজ রাখতেন। সব ছেলেমেয়ের কাছে ছুটে যেতেন। মৃত্যুর দুই মাস আগে আমার কাছ থেকে চলে গেলেন ঢাকায় ছোট মামার বাসায়। ওখানে যাওয়ার কিছু দিন পর স্ট্রোক করল। চিকিৎসকরা বললেন, সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এখন আমরা নানীজানকে বাসায় রাখতে পারি।
বেশ কিছু দিন পর জ্ঞান ফিরলে শেষবার আমাকে বুকে জড়ালেন। কপালে চুমু খেলেন। বুঝতে পারিনি ওটাই শেষ আদর ছিল। এর এক সপ্তাহ পর নানীজান আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। আপনজন হারানোর কষ্ট কোনো পরিমাপক দিয়ে মাপা যায় না।
দোয়া করি, নানীজান যেখানে থাকুন; ভালো থাকুন।
বছর পেরিয়ে এসে হারানোর এই কঠোর বেদনা বুকে নিয়ে বেঁচে থাকার নিয়মতান্ত্রিকতায় নতুন বছরকে স্বাগতম জানানোই মানবজীবন।
গোপালগঞ্জ


আরো সংবাদ



premium cement
ছেলেদের কারণে বিপাকে মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির দুই বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে ফ্রান্স, ব্রাজিল ও প্যারাগুয়ে সফরে যাচ্ছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ড সফরকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক বললেন প্রধানমন্ত্রী লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশী যুবক নিহত এখনো শেষ হয়নি বিতর্কিত আউটের রেশ, ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ মুশফিকের ‘ফ্রি ভিসার গল্প’ আর শূন্য হাতে ফেরা লাখো শ্রমিক নোয়াখালীতে প্রবাসীর স্ত্রীর ব্যক্তিগত ছবি দেখিয়ে চাঁদা আদায় দেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে, অথচ বিরোধী দল দেখে না : কাদের আশুলিয়ায় বাঁশবাগান থেকে নারী পোশাক শ্রমিকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার মিয়ানমারের কর্মকর্তারা ফেরত গেলেন, কিন্তু রোহিঙ্গা সঙ্কট কি আরো জটিল হচ্ছে

সকল