২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কয়েকজন মনিপুরী মুক্তিযোদ্ধা

-

সিলেট অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় বসবাসকারী মনিপুরী বিষ্ণুপ্রিয়া সম্প্রদায় দেশমাতৃকাকে শত্রুমুক্ত করতে এ দেশের সাধারণ মুক্তিকামী জনতার সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধের ময়দানে সরব থেকেছেন। এই প্রতিবেদনে কয়েকজন মনিপুরী যোদ্ধার বীরত্বগাথা উপস্থাপন করা হলোÑ

নিমাই সিংহ : কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর গ্রামের মনিপুরী মুক্তিযোদ্ধা নিমাই সিংহ। ছাত্রাবস্থায় ছাত্রলীগের কর্মী নিমাই সিংহ একাত্তরের মার্চ মাসের শেষ দিকে ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করেন। হাফলং লেয়ার বনে ভারতের সামরিক অফিসার হনুমান সিংহের অধীনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে ৪ নম্বর সেক্টরে ক্যাপ্টেন সাজ্জাদুর রহমানের অধীনে কমলপুর সীমান্তে যুদ্ধে নিয়োজিত হন। নিমাই সিংহ ধলাই সীমান্ত ঘাঁটি, কুমারঘাট, শ্রীমঙ্গল, আখাউড়া, খোয়াই প্রভৃতি অপারেশনে অংশগ্রহণ করেন।

কৃষ্ণকুমার সিংহ : কমলগঞ্জ উপজেলার উত্তর ভানুবিল গ্রামের রতন সিংহের পুত্র কৃষ্ণকুমার সিংহ। তার পূর্বপুরুষ ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিকামী পরিবারের সন্তান কৃষ্ণকুমার সিংহকে যুদ্ধের শুরুতে পাক হানাদার বাহিনী কামারছড়া চা বাগান এলাকার ক্যাম্পে ধরে নিয়ে গিয়ে ক্যাম্পসংলগ্ন ঘন জঙ্গল পরিষ্কারের কাজে বাধ্য করে। পরপর চার দিন অন্যান্য মনিপুরী যুবকের সাথে তাকে বিনা পারিশ্রমিকে ঘন জঙ্গল পরিষ্কার ও বাংকার খননের কাজ করতে হয়েছে। ১৪ আগস্ট পাক সৈন্যরা কৃষ্ণকুমার সিংহের বাড়িতে ব্যাপক লুটপাট করে। ১৫ আগস্টও পাক বাহিনী কৃষ্ণকুমার সিংহকে জঙ্গল পরিষ্কারের কাজে নিয়োজিত করে। ওইদিন দুপুরের দিকে কাজ করার একপর্যায়ে কৃষ্ণকুমার সিংহ পাহাড়ি পথ ধরে পালিয়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কৈলাশহর মহকুমার ডলুগাঁও গ্রামে চলে যান। সেখান থেকে তিনি ভারতের জলাইগ্রামের পলটি বাজারে গিয়ে পৌঁছেন এবং মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক রাজা সাহেবের সাহচর্যে হাফলংয়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। হাফলংয়ে এক মাস প্রশিক্ষণ গ্রহণ শেষে ক্যাপ্টেন সাজ্জাদুর রহমানের অধীনে কমলপুর সীমান্তে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধে সিলেট অঞ্চলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি ছিল ধলাই ক্যাম্প। ধলাই ক্যাম্প অঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধে শাহাদত বরণ করেন বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান। ধলাই সীমান্তের এপাড়ে ছিল কমলপুর। কমলপুর থেকে ধলাই সীমান্তের পাক হানাদারদের ক্যাম্পে কৃষ্ণকুমার সিংহের দল অসংখ্য মাইন নিক্ষেপ করে। এতে অনেক পাকিস্তানি সৈন্য হতাহত হয়। এর পরপরই কৃষ্ণকুমার মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে চলে আসেন তিলকপুর গ্রামে। ওই দলটি কামারছড়া পাক বাহিনীর ক্যাম্পে বেশ কয়েকটি চোরাগোপ্তা আক্রমণ করে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এই বীর সেনানি বাংলাদেশ সরকারের রেভিনিউ বিভাগে চাকরি পান।

বাবু সেনা সিংহ : কমলগঞ্জ উপজেলার উত্তর ভানুবিল গ্রামের বাবু সিংহ একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। একাত্তরের এপ্রিল মাসে শমসেরনগরের নিকটস্থ কামারছড়ায় পাক বাহিনী ক্যাম্প স্থাপনের পর ভানুবিল গ্রামের অন্যান্য যুবকের সাথে পাক সৈন্যরা বাবু সেনা সিংহকেও জোর করে ক্যাম্পে নিয়ে যায়। তাদের প্রতিদিন বাংকার খননের কাজে লাগানো হয়। একদিন সুযোগ বুঝে বাবু সেনা সিংহ আরো দু’জনকে সাথে নিয়ে পালিয়ে যান ভারতে। তিনি শিলচর লেয়ার বনে তদানীন্তন মেজর সি আর দত্তের অধীনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ শেষ করে ক্যাপ্টেন সাজ্জাদুর রহমানের অধীনে কমলপুর ধলাই সীমান্তে পাক বাহিনীর ক্যাম্পে আক্রমণ করেন। এখানে যুদ্ধে মাইন বিস্ফোরণে বেশ ক’জন পাকিস্তানি সৈন্য হতাহত হয়। বাবু সেনা সিংহ এ অপারেশনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। তিনি শ্রীমঙ্গল উপজেলার সাতগাঁও অপারেশনেও অংশগ্রহণ করেন।


আরো সংবাদ



premium cement
ভারতে দ্বিতীয় পর্বে ৮৮ আসনে ভোট খালেদা জিয়ার সাথে মির্জা ফখরুলের ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ অব্যাহত পাবনায় ১০ কোটি টাকার অনিয়মে ৩ ব্যাংক কর্মকর্তা আটক জীবন্ত মানুষকে গণকবর আগ্রাসন ও যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান মার্কিন মানবাধিকার প্রতিবেদনে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৃষ্টির জন্য সারা দেশে ইসতিস্কার নামাজ আদায় আরো ৩ দিনের হিট অ্যালার্ট তাপপ্রবাহ মে পর্যন্ত গড়াবে আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে ঢাকার ভূমিকা চায় যুক্তরাষ্ট্র বিদ্যুৎ গ্যাসের ছাড়পত্র ছাড়া নতুন শিল্পে ঋণ বিতরণ করা যাবে না

সকল