২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

প্রার্থনা

-

মায়ের সাথে সন্তানের রয়েছে নাড়ির বন্ধন। মা যেমন তার সন্তানকে ছেড়ে এক মুহূর্ত থাকতে পারেন না, তেমনি সন্তানের পক্ষেও মাকে ছেড়ে খুব বেশি দিন থাকা সম্ভব হয় না। আমরা যারা বাড়ির বাইরে থাকি, তারা খুব ভালোভাবেই বুঝি মাকে ছেড়ে থাকার কষ্ট। এই কষ্টের কোনো সীমা-পরিসীমা নেই। কষ্টে বুক ভেঙে যেতে চায়। যাকে ছেড়ে একটা মুহূর্ত থাকা সম্ভব নয়, প্রয়োজনের তাগিদে তাকে ছেড়ে দিনের পর দিন পার করে দেয়া কম কষ্টের নয়। আমি মাঝে মধ্যে কষ্টের তীব্রতায় মুষড়ে পড়ি। যখন এই অবস্থার সৃষ্টি হয় তখন মায়ের কথা ভাবতে থাকি। স্রষ্টার দরবারে মায়ের মঙ্গল কামনায় হাত তুলি। তিনি যেন সবসময় ভালো রাখেন মাকে; জগতের সব মাকে।
আজ থেকে অনেক বছর আগের ঘটনা। আমি তখন বেশ ছোট। সারাদিন মায়ের আশপাশে ঘুরঘুর করি। আমার যত আবদার, তার পর্যন্ত গিয়েই সমাপ্ত হতো। একবার মায়ের পায়ে ভয়ানক এক রোগ হলো। সারা পায়ে ফোস্কা পড়ে সেটা মারাত্মক আকার ধারণ করল। মা হাঁটতে পারেন না, কোনো কাজ করতে পারেন না। ডাক্তার দেখানো হলো। চিকিৎসা চলল বহুদিন ধরে। কিন্তু কোনো ফল পাওয়া গেল না। সমস্যা আগের চেয়ে আরো বেড়ে চলল। মায়ের পায়ের অবস্থা আরো ভয়ানক রূপ ধারণ করল। তার কষ্ট দেখে আমার বুক ফেটে যেতে চায়। আমি চিন্তিত হয়ে পড়লাম। কোনো চিকিৎসাতেই যখন কাজ হচ্ছে না, তখন চিন্তিত না হয়ে উপায় কী?
প্রথম মোগল সম্রাট বাবর ও তার ছেলে হুমায়ুনের ঘটনা তখন আমার জানা ছিল। আমি এটাও জানতাম, সন্তানও যদি মা-বাবার জন্য মন থেকে দোয়া করে, তবে সেই দোয়াও স্রষ্টা কবুল করেন। আমার মনে হলো, সম্রাট বাবরের ঘটনা তো আমার জীবনেও ঘটতে পারে! এক দিন রাতে নামাজ শেষ করে মহান আল্লাহর দরবারে হাত তুললাম। চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে বললাম, ‘হে আল্লাহ, আমার মায়ের পা তুমি ভালো করে দাও। তার পায়ের ক্ষত আমার পায়ে দিয়ে তাকে এ অবস্থা থেকে মুক্তি দাও। আমার এই প্রার্থনা কবুল করো হে প্রভু।’
চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে আল্লাহর দরবারে দোয়া করলে সেই দোয়া যে কবুল হয়, ক’দিন পরই তা টের পেলাম।
তিন-চার দিন পর মায়ের পায়ের ক্ষত শুকানো শুরু হলো। সেই সাথে আমার পায়েও ফোস্কা দেখা দিলো। মা প্রায় দেড় মাস এই কঠিন রোগে ভুগেছিলেন। কিন্তু আমার পায়ের ফোস্কা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ক’দিন বাদেই আমার পা ঠিক হয়ে গেল। মায়ের পা-ও ঠিক হয়ে গিয়েছিল আগেই। তার হাসিমাখা মুখ আবার দেখা গেল। এই ঘটনাটি এত বছর ধরে আমি প্রকাশ করিনি। নিজের বুকেই চেপে রেখে এক অদ্ভুত সুখ অনুভব করি। মাকে নিয়ে যখন অনুভূতি প্রকাশ বা স্মৃতিচারণ করতে বলা হলো তখন আর এই ঘটনা চেপে রাখতে পারলাম না। কোনো সন্তান যদি অন্তর থেকে তার মায়ের জন্য দোয়া করে, তাহলে স্রষ্টা অবশ্যই তা কবুল করেন। মায়ের জন্য এমন দোয়া চলতে থাকুক। জগতের সব সন্তান তার মাকে অনুভব করতে শিখুক। সন্তান ও মায়ের মধ্যকার সব দূরত্ব ঘুচে যাক।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়


আরো সংবাদ



premium cement
দেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে, অথচ বিরোধী দল দেখে না : কাদের আশুলিয়ায় বাঁশবাগান থেকে নারী পোশাক শ্রমিকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার মিয়ানমারের কর্মকর্তারা ফেরত গেলেন, কিন্তু রোহিঙ্গা সঙ্কট কি আরো জটিল হচ্ছে দিনাজপুরে দুই ট্রাকের সংঘর্ষ, চালক-হেলপার নিহত মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২ সখীপুরে বৃষ্টির জন্য অঝোরে কাঁদলেন মুসল্লিরা দক্ষিণ ভারতে কেন কাজ করেনি বিজেপির হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের নতুন আংশিক কমিটি বাংলাদেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসায় বিনিয়োগ সম্ভাবনা অন্বেষণে থাইল্যান্ডের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান ট্রাম্পের বিচার নিয়ে বিভক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট চুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত, ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত

সকল