০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`


এফআর ভবন থেকে খসে পড়ছে এসি, বিলবোর্ড

এফআর ভবন থেকে খসে পড়ছে এসি, বিলবোর্ড - ছবি : সংগ্রহ

গত ২৮ মার্চ বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের পর থেকেই ভবনের ওপর থেকে খসে পড়ছে পুড়ে যাওয়া এসি, বিলবোর্ড, কাচের অংশ। ভবনের আশপাশে চলাচল করাও এখন বিপজ্জনক। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ভবনের চারপাশ ঘিরে রেখেছেন। বন্ধ রয়েছে যানচলাচল। অবশ্য আগুন লাগার পর থেকেই বন্ধ রয়েছে সামনের রাস্তার এক পাশের অংশ। নগরীর ব্যস্ততম রাস্তা যানচলাচল চালু করতে ও জনসাধারনের চলাচল নিরাপদ করতে পুড়ে যাওয়া ভবনের সামনে নির্মাণ করা হচ্ছে লোহার গ্রিল ও উঁচু ছাউনি। দিনরাত কাজ করছেন শ্রমিকরা। দীর্ঘ ৫ দিন পর কাল মঙ্গলবার থেকে খুলে দেয়া হতে পারে বন্ধ এই রাস্তা।

এফ আর টাওয়ার পাঁচ মাস ব্যবহার করা যাবে না 
নিজস্ব প্রতিবেদক

অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত বনানীর এফ আর টাওয়ার আগামী পাঁচ মাস ব্যবহার করা যাবে না। ভবনের ভেতর বিভিন্ন তলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এফ আর টাওয়ার ব্যবহারের উপযোগিতা খতিয়ে দেখতে গতকাল রোববার বেলা ১১টায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি তদন্ত কমিটি ভবনটি পরিদর্শন করে। প্রাথমিক পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক ড. মেহেদী আহমদ আনসারী।

তিনি বলেন, ভবনটি টিকিয়ে রাখা যাবে কি না তা দেখা আমাদের দায়িত্ব। সাততলা থেকে ১০ তলা পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সাত থেকে ১০ তলার কলামে ও স্ল্যাবে হালকা কিছু ক্র্যাক হয়েছে। কতটুকু ক্র্যাক হয়েছে তা দেখতে আমাদের আরেকটি টিম পরীক্ষা করবে। ‘কালকের (সোমবার) মধ্যে আমরা একটা রিপোর্ট দেয়ার চেষ্টা করব। আমাদের মোটামুটি একটা আইডিয়া হয়েছে। বিল্ডিং কোড, ফায়ার কোড না মেনে বিল্ডিংটা করা হয়েছে।’ মেহেদী আহমদ আনসারী বলেন, বিল্ডিং কোড ফলো করে যা করণীয় তা করার জন্য ১৫০ দিনের একটা সময় বেঁধে দেবো। 

কিভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের তদন্তের মূল ইস্যু নয়। তবু বলতে পারি আমাদের মনে হচ্ছে শর্টসার্কিট থেকে আগুন ছড়াতে পারে। বিল্ডিং কোড মেনে এটা করা হয়েছে কি না, ইলেকট্রিক সেফটি ঠিক ছিল কি না তা দেখার জন্য ডিটেইল অ্যাসেসমেন্ট করা হবে। ডিটেইল অ্যাসেসমেন্টে বিল্ডিংয়ের তারে যদি কোনো সমস্যা থাকে, ফায়ারের প্রিভেনটিভ মেজার্সে যদি কোনো সমস্যা থাকে, স্ট্রাকচারাল কোনো সমস্যা আছে কি না তা চিহ্নিত করে ১৫০ দিনের মধ্যে একটা রিপোর্ট দেয়া হবে। এরপর সংস্কারমূলক কাজ করে হয়তো ভবনটি চালিয়ে নেয়া যাবে।’ 
তিনি সাংবাদিকদের জানান, ভবনে জরুরি নির্গমন পথ ছিল খুবই সরু। কেবল একটি ফ্লোরে ফায়ার ডোর ছিল। বেশ কিছু জায়গায় ত্রুটি রয়েছে। এগুলো সংশোধন ছাড়া ভবনটি ব্যবহার করা যাবে না। 

১৫০ দিন পর্যন্ত এই ভবন কি ব্যবহার করা যাবে না এ সম্বন্ধে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই না। ইনিশিয়াল ১৫০ দিন, এই সময় বেশিও লাগতে পারে।’ ড. মেহেদী আহমদ আরো বলেন, ‘১৫০ দিন পর আমরা সিদ্ধান্ত নেবো এ ভবনটি থাকবে কি থাকবে না।’ তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে ভবনটি ১৪ তলা পর্যন্ত অনুমোদন ছিল। পরে দুইবার চারতলা ও দোতলা করে ছয় তলা উপরের দিকে বাড়ানো হয়।

তবে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাসহ (বাসস) বিভিন্ন মিডিয়ার রিপোর্টে বলা হয়েছে আগুন লাগার কারণে এফআর টাওয়ারটি একটু হেলে পড়েছে। এ ব্যাপারে ড. মেহেদী আহমদ আনসারীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হেলে পড়েছে এমন কথা আমি বলিনি। আমি বলেছি, ‘হেলে পড়েছে কি না তা বলা যাবে পূর্ণাঙ্গ অ্যাসেসমেন্টের পর। আমাকে মিস কোট করা হয়েছে।’ 

বিশেষজ্ঞ কমিটিতে বুয়েটের তিনজন অধ্যাপক, রাজউকের প্রধান প্রকৌশলী ও পরিচালক (উন্নয়ন) এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী রয়েছেন। কমিটি তিন দিনের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিবেদন জমা দেবে।


আরো সংবাদ



premium cement