২৭ মে ২০২৪, ১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৮ জিলকদ ১৪৪৫
`

টাকা ধার নেয়ার কলাকৌশল

-


টিউশন থেকে মাত্র বাসায় ফিরলাম। ঘড়িতে রাত ১০টা ছুঁই ছুঁই। এরি মধ্যে মাহফুজ ফোন দিয়েছে তিন-তিনবার। ওর ফোন মানেই আমার জন্য আকস্মিক খবর! সব অঘটনের খবর শোনানোর জন্য সে ফোন করে! নিজ থেকে নিজের বিপদ ডেকে আনার কোনো মানে হয় না! ফোন বাজতে থাকুক, সমস্যা নাই! কিন্তু সে বারবার ফোন দিয়েই যাচ্ছে, দিয়েই যাচ্ছে! একদম আসহ্য।
অনিচ্ছা সত্ত্বেও ফোন কানে নিয়ে বললাম, শোন মাহফুজ! আগেই বলি, কোনো দুর্ঘটনার খবর হলে ফোন এুনি রাখ! আর...
মাহফুজ আমার মুখের কথা কেড়ে নিয়ে বলল, আরে না রে, আজ সুখের খবরই তোকে দেব। সে জন্যই তোকে বারবার ফোন করছি!
কী বলিস তুই? বল বল তাড়াতাড়ি বল! সুখের খবর শুনতে দেরি করা একদম ঠিক না!
দোস্ত আমার না রিয়ার সাথে বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে!
কী? কেমনে ভাই? মানে রিয়ার বাবা রাজি হলো তো?
হ্যাঁ দোস্ত, একদম গায়ে পড়ে রাজি হওয়ার জোগাড়!
তাই নাকি! কী ক্যালমা দেখালি ভাই? যা শুনলাম মাথা পাগল হয়ে যাওয়ার অবস্থা!
তার নাকি এক খালাতো ভাই আছে, নাম টুকু। বাংলাদেশে সাতটা ইন্ডাস্ট্রি আর নেপালে তিনটা। এসবের দেখাশোনা নাকি সে একাই করছে! আমার নাম নিয়ে এমন মিথ্যাচার? নিজের থাকারই ঠিক জায়গা নাই তার আবার ইন্ডাস্ট্রি!
মাহফুজ স্বরটা আরও নরম করল। দোস্ত তোর নামেতো তাদের কাছে অনেক কথাই বলেছি, আচ্ছা আমাকে কিছু টাকা ধার দেতো! এই কাল বাদে পড়শু দিনই দিয়ে দিচ্ছি! তোকে কিন্তু টাকাটা নিতেই হবে! না করতে পারবি না!
তাজ্জব বনে গেলাম! টাকা দেয়ারই নাম নেই তার ওপর ফেরত দেয়ার প্রসঙ্গ! বিরক্তি নিয়ে ফোন কেটে দিয়েছি।
পরদিন সকালে গলির মুখটা থেকে বের হচ্ছি। টিউশন আছে। মাত্র কালকে মাসের টাকাটা দিয়েছে। আজ ফাঁকি দেয়া যাবে না! সামনেই দেখি মাহফুজ হাজির! অনুনয়ের সুরে বলল, ভাই... টাকা দিতে যাচ্ছিস? আরে আমিই চলে এলাম! তোর কষ্ট করতে হবে না! এই বলে মানিব্যাগটা ছোঁ মেরে নিয়ে নিলো! কালকে টিউশন থেকে পাওয়া কচকচে নোটগুলো নিতে নিতে বলল, তোকে আবার বলে দিচ্ছি, টাকাটা কিন্তু তোকে ফেরত নিতেই হবে! না করতে পারবি না! টাকা ধার নেয়ার এ ইন্টেলিজেন্ট কলাকৌশল কে তাকে শেখাল? আমার মাথাটা তখনও বোঁ বোঁ করে ঘুরছে...


আরো সংবাদ



premium cement