২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ওসমানীনগরে কবর জিয়ারত নিয়ে নিহত ১, আহত ১৩

ওসমানীনগরে কবর জিয়ারত নিয়ে নিহত ১, আহত ১৩ - ছবি : নয়া দিগন্ত

সিলেটের ওসমানীনগরে কবর জিয়ারত নিয়ে কথা কাটাকাটির জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় ঘটনাস্থলে আনোয়ার হোসেন (৫০) নামের একজন নিহতসহ একই পরিবারের আরো অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছে।

শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টায় ঘুমন্ত অবস্থায় প্রতিপক্ষ কাদির মিয়া, আব্দুল গণি, শাহিন, তোফায়েল, ফরিদ, বাদশা মিয়া দেশিয় অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় আনোয়ার হোসেন ও জিলু মিয়ার বসতঘরে। এর আগে শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে প্রতিবেশী বাড়ির শাহিন গংদের বাড়ির ভেতর দিয়ে জিলু মিয়া তার সদ্য মৃত শিশুর কবর জিয়ারত করতে যাওয়ার সময় এ ঘটনার সূত্রপাত হয়।

নিহত আনোয়ার উপজেলার উছমানপুর ইউনিয়নের থানাগাঁও বেতখাই গ্রামের শফিক মিয়ার ছেলে।

আহতরা হলেন আনোয়ারের মা জয়ধন বিবি (৬৫), ভাই জাকির হোসেন (৪০), নূরুল হোসেন (৪২), কবির হোসেন (৩৮), ভাতিজা পলক আহমদ মাহিদ (১৩), বোন হাসনা বেগম (২৮), নাসিমা বেগম (৩২), চাচি মমতা বেগম (৬০), হেনা বেগম (৫৫), চাচাত বোন তামান্না বেগম (১৮), চাচা জিলু মিয়া (৫০) ও চাচাত ভাই রাসেল আহমদ (২৫)।

এদের মধ্যে গুরুতর আহত তিন-চারজনকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনজনকে আটক করেছে।

নিহতের পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার নামাজ শেষে প্রতিবেশী বাড়ির শাহিন গংদের বাড়ির ভেতর দিয়ে জিলু মিয়া তার শিশুর কবর জিয়ারত করতে যান। এ সময় শাহিন গং তার নতুন ঘরের মাঝ দিয়ে কবর জিয়ারত করতে যেতে বাধা প্রদান করেন। বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। রাতে বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যানকে জানানো হয়। রোববারে বিষয়টি নিস্পত্তি করার কথা ছিল।

শনিবার আনোয়ার হোসেন, জিলু মিয়া, কবির হোসেন, নূরুল হোসেন হামলা প্রতিহত করতে গেলে প্রতিপক্ষের ধারালো ছুলপির ঘা লাগে আনোয়ার হোসেনের পেটে। ছুলপির আঘাতে ঘটনাস্থলেই আনোয়ার হোসেন মারা যান। আহতদের আর্ত চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে এগিয়ে এসে নিহত ও আহতদের নিয়ে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ওয়ালী উল্লাহ বদরুল, ওসমানীনগর থানার ওসি রাশেদুল হক ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে আটক করেছে।

নিহতের ভাতিজা পলক আহমদ মাহিদ (১৩) বলেন, আমার চাচাকে জমিতে ফেলে শাহিনরা ছুলপি দিয়ে পেটে ঘা দিয়ে মেরেছে। আমরা ঘুমে থাকতেই তারা আমাদের ঘরে হামলা করে।

নিহতের বাকরুদ্ধ বাবা শফিক মিয়া (৭০) বলেন, আমার ছেলেকে তারা মেরে ফেলেছে। তারা আমার কেউ নয়। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ওয়ালী উল্লাহ বদরুল বলেন, তাদের দুই পরিবারের মধ্যে যুগ যুগ ধরে মারামারি চলে আসছে। আমি চেয়ারম্যান হওয়ার পর অন্তত পাঁচবার শালিস করেছি। শুক্রবার তাদের মধ্যে হাতাহাতি হলে আমি তাদেরকে পুলিশের কাছে যেতে বলি। এরমধ্যে আজ দুর্ঘটনা ঘটেগেছে।

ওসমানীনগর থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) রামেদুল হক বলেন, দু’পক্ষের মারামারিতে একজন নিহত হয়েছেন। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে আটক করেছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ মামলার প্রস্তুতি চলছে।


আরো সংবাদ



premium cement