০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`


কাশ্মিরে নতুন করে উত্তেজনা : ৫ দিনে ৭ জন খুন

কাশ্মিরে ভারতীয় বাহিনীর টহল। - ছবি : সংগৃহীত

নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে। গত কয়েকদিনে দুই শিক্ষকসহ সাতজন খুন হয়েছেন দুর্বৃত্তদের হাতে।

শ্রীনগরের একটি স্কুলের প্রিন্সিপাল ছিলেন সুপুন্দর কাউর। ওই একই স্কুলের শিক্ষক ছিলেন দীপক চন্দ। বৃহস্পতিবার তারা দুইজনেই স্কুলে ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, পিস্তল নিয়ে স্কুল চত্বরে ঢুকে পড়ে দুর্বৃত্তরা। খুব কাছ থেকে প্রিন্সিপাল এবং এক শিক্ষককে গুলি করা হয়। দুই শিক্ষকের হত্যার ঘটনায় রীতিমতো উত্তেজনা ছড়িয়েছে শ্রীনগরে। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, অনলাইন ক্লাস চলছে বলে ওইদিন ক্লাসে ছাত্ররা ছিল না। নইলে আরো বড় অঘটন ঘটতে পারত।

এর আগে এক ওষুধের দোকানের মালিককে খুন করেছিল দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার তিনজন সাধারণ মানুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। সব মিলিয়ে গত পাঁচ দিনে সাতজন সাধারণ মানুষকে খুন করল দুর্বৃত্তরা। যাদের সাথে সরকার বা প্রশাসনের কোনো সম্পর্ক নেই। সম্পূর্ণ নিরস্ত্র অবস্থায় তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে। এবং প্রতিটি ক্ষেত্রেই পিস্তল ব্যবহার করা হয়েছে হত্যার জন্য।

কাশ্মির পুলিশের দাবি, দ্য রেসিসট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) এই ঘটনার সাথে জড়িত। তবে কোনো গোষ্ঠী এখনো পর্যন্ত দায় স্বীকার করেনি।

বৃহস্পতিবারের ঘটনার পরে সব মহল থেকেই নিন্দা করা হয়েছে। কাশ্মিরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ঘটনার নিন্দা করে বলেছেন, ‘এই হলো ডবল ইঞ্জিন সরকারের প্রশাসন।’

বস্তুত, কাশ্মিরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল বানানোর পরে কেন্দ্রীয় সরকার দাবি করেছিল, এবার সরাসরি কেন্দ্র কাশ্মিরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করবে। পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

আরেক সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহ বলেছেন, কাশ্মির নব্বই দশকের ভয়াবহতায় ফিরে যাচ্ছে। এর দায় কেন্দ্রকে নিতে হবে।

বৃহস্পতিবারের ঘটনার পরে দিল্লির নর্থ ব্লকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ডাকেন। সেখানে উপস্থিতি ছিলেন র ও গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান এন এস এ অজিত ডোভাল। কাশ্মিরের পরিস্থিতি নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হয়। কাশ্মিরের সীমান্তে নজরদারি আরো বাড়ানোর কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

কেন এই হত্যা
ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর এক সাবেক কর্মকর্তা ডয়চে ভেলেকে নাম প্রকাশ করা যাবে না এই শর্তে জানিয়েছেন, গত কয়েক মাসে কাশ্মিরের বিভিন্ন প্রান্তে একাধিক সেনা-উগ্রবাদী সংঘর্ষ হয়েছে। বহু উগ্রবাদীর মৃত্যু হয়েছে পুলিশ এবং সেনার তল্লাশি অভিযানে। ফলে কয়েকটি উগ্রবাদী গোষ্ঠীর মধ্যে হতাশা ছড়িয়েছে। বড়সড় ধামাকার মাধ্যমে সেই হতাশা কাটাতে চাইছে তাদের নেতারা। সে কারণেই সাধারণ মানুষের উপর আক্রমণ চালিয়ে উত্তেজনা বাড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। তার মতে, ‘নিরস্ত্র মানুষের উপর আক্রমণ চালানো সহজ। কিন্তু তাদের হত্যা করতে পারলে সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে হইচই হয় অনেক বেশি।’ এই তত্ত্বেই সাধারণ মানুষকে টার্গেট করছে উগ্রবাদীরা।

বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, সাধারণ মানুষের উপর যে হামলা হবে, গোয়েন্দাদের কাছে সে রিপোর্ট আগেই এসে পৌঁছেছিল। তা সত্ত্বেও কেন হত্যা আটকানো গেল না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তাদের আরো বক্তব্য, গত দুই বছরে কাশ্মির নিয়ে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে সেখানকার তরুণ সমাজের একাংশ হতাশ হয়ে পড়েছে। তাদের সেই হতাশা ব্যবহার করছে উগ্রবাদী সংগঠনগুলো। ফলে উগ্রবাদী সংগঠনে যোগদানের পরিমাণ বেড়েছে। তারই জেরে এই আক্রমণ শুরু হয়েছে বলে তারা মনে করছেন।

সরকারি রিপোর্ট অনুযায়ী গত এক বছরে কাশ্মিরে ২৮ জন সাধারণ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। তার মধ্যে সাতজনের হত্যা হয়েছে গত পাঁচ দিনে।

সূত্র : ডয়চে ভেলে


আরো সংবাদ



premium cement
রেকর্ড গড়ে সাদিক খান আবারো লন্ডনের মেয়র আগামী ২ মাসের মধ্যে ভাঙ্গা-খুলনা-যশোর পর্যন্ত ট্রেন চালু হবে : জিল্লুল হাকিম ফতুল্লায় ব্যবসায়ী অপহরণ, গ্রেফতার ৭ তাপদাহের কারণে গোসল করতে গিয়ে কলেজছাত্রের মৃত্যু সুন্দরবনে আগুন নেভেনি, রাতে আরো ছড়িয়ে পড়তে পারে রামুতে ৬০ লাখ টাকার ইয়াবাসহ ২ কারবারী আটক ৪০ ডিগ্রির নিচে নামল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা তিন দিন ৩ ঘণ্টা করে শাহজালালে বন্ধ থাকবে ফ্লাইট ওঠানামা ‘২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলার রফতানি আয় করবে পোশাক শিল্প’ প্যারিসে গুলিতে একজন নিহত, বেশ ক’জন আহত ভৌগোলিক কারণে সিঙ্গাপুরের জন্য চট্টগ্রাম খুবই গুরুত্বপূর্ণ : হাই কমিশনার

সকল