২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মিডিয়া ট্রায়াল এবং মজলুমের আর্তনাদ

মিডিয়া ট্রায়াল এবং মজলুমের আর্তনাদ। - ছবি : নয়া দিগন্ত

দুটো প্রবাদবাক্য একটি সাম্প্রককালের আর অন্যটি পুরোনো। নতুনটি হলো বাংলাদেশের সব মানুষ জান্নাতি। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, হাল আমলে মানুষের দুঃখ-কষ্ট-বেদনা এতটা নির্মম-নিষ্ঠুর ও অসহনীয় হয়ে পড়েছে যে, ভুক্তভোগীরা তাদের ধৈর্য-সহ্য ও আল্লাহর প্রতি অগাধ বিশ্বাসের কারণে জান্নাতি হওয়ার সম্ভাবনার মধ্যে রয়েছেন। নতুন এই প্রবাদবাক্যটির সূত্রপাত্র হয়েছে সাম্প্রতিককালে কিডনি রোগীদের ডায়ালাইসিসের খরচ বৃদ্ধির প্রতিবাদ করায় জনৈক ভুক্তভোগী তরুণকে গ্রেফতার ও কারাবরণকে কেন্দ্র করে। দ্বিতীয় প্রবাদটি হলো বাঙালিরা জাহান্নামের যে এলাকায় থাকবে সেখানে কোনো রক্ষী বা দোজখের প্রহরী দরকার পড়বে না। কারণ কেউ যদি জাহান্নাম থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করে তবে অন্য সব বাঙালি তার হাত-পা টেনে ধরে তাকে জাহান্নামের গভীর থেকে গভীরতর স্থানে নিয়ে যাবে।

বাংলাদেশের সার্বিক হালহকিকত নিয়ে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে উল্লিখিত প্রবাদগুলো রীতিমতো ভাইরাল হয়ে পড়েছে এবং লোকজন যার যার মতো করে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে। একজন সংবেদনশীল মানুষ হিসেবে জনগণের নিত্যদিনের হাহাকার ও ব্যক্তিবিশেষের দুর্ভোগ-দুর্দশা আমাকে নিদারুণভাবে পীড়িত করে। বিশেষ করে মূলধারার গণমাধ্যম-সামাজিক মাধ্যম-আইন প্রয়োগকারী সংস্থা থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল প্রতিষ্ঠানগুলো যখন কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ওপর চড়াও হয় তখন ভুক্তভোগীদের জীবনে যে দুর্বিষহ বেদনা এবং সর্বাত্মক বিপর্যয় শুরু হয় তার কিছু নমুনা যখন দেখতে পাই তখন বেদনায় নীল হয়ে অবাক বিস্ময়ে ভাবতে থাকি বাংলাদেশে কেন বিল গেটস, স্টিভ জবস, রকফেলার, ফোর্ড, টাটা, বিড়লা কিংবা নিউটন, এডিসন, আইনস্টাইনের জন্ম হয় না।

আমাদের দেশের দায়িত্বহীন মিডিয়া কিংবা সামাজিকমাধ্যমের কারণে দেশের কত সম্ভাবনাময় মেধা ও মননশীলতার পতন হয়েছে, কত শিল্প-কারখানা ধ্বংস হয়েছে এবং কত বড় রাজনৈতিক, সামাজিক ও জাতীয় অর্থনৈতিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে তা নিয়ে চিন্তা করলে মন-মস্তিষ্ক রীতিমতো অস্থির হয়ে পড়ে। সত্য হোক কিংবা মিথ্যা একটি খবর প্রচারিত হওয়ার সাথে সাথে অস্থির বাঙালির বিরাট অংশ হইহই রইরই নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশ করতে থাকে। পরে দুর্নীতি দমন কমিশন, থানা-পুলিশ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে শুরু করে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর চেতনা প্রবলভাবে বিদ্যুতায়িত হয়ে পড়ে এবং সবাই যার যার অবস্থান থেকে হালুম করে ব্যাঘ্র গর্জনে শিকারের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। ফলে গুজবের কবলে পড়া ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কপালে শেষ পর্যন্ত কী ঘটতে পারে তার নমুনা দেখলে চাইলে দেশের বর্তমান ভঙ্গুর অর্থনীতি, আস্থা হারানো ব্যাংকিং ব্যবস্থা ও কর্মহীন মানুষের জ্যামিতিক বৃদ্ধির হার বিশ্লেষণ করা জরুরি।

হাল আমলে মিডিয়া ট্রায়ালে সর্বস্ব হারিয়ে যে কয়জন সফল মানুষ আর্তনাদ করছেন তাদের মধ্যে একজনের নিয়তির নির্মম পরিহাস নিয়ে কিছু বলার আগে অতীতের তিনটি কাহিনী স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। প্রথমটি হলমার্ক গ্রæপের ঘটনা। ঋণ গ্রহণে প্রতিষ্ঠানটি অনিয়ম করেছিল কিন্তু কোনো জাল-জালিয়াতি করেনি। প্রায় ৪০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান করা প্রতিষ্ঠানটির ঋণ পরিশোধের সক্ষমতাও ছিল এবং ব্যাংক পর্যাপ্ত বন্ধকের বিপরীতে ঋণ দিয়েছিল। মিডিয়া ট্রায়াল এবং দুদকের বাড়াবাড়ি হলমার্কের কবর রচনা করে বাংলাদেশের অন্যতম লাভজনক ও সফল শিল্প গ্রুপের সব সফলতাকে কেলেঙ্কারি বানিয়ে ছেড়েছে। আমি বহুবার বিষয়টি নিয়ে লিখেছি ও বলেছি কিন্তু কারো বোধোদয় ঘটাতে পারিনি।

দ্বিতীয় ও তৃতীয় ঘটনা হলো পদ্মা সেতু কেলেঙ্কারির কথিত অভিযোগ এবং রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া। দুটো ঘটনাই ঘটানো হয়েছে মিডিয়া ট্রায়ালের মাধ্যমে এবং আমি আমার সর্বশক্তি নিয়ে চিৎকার করেও কোনো সুরাহা করতে পারিনি। বিশ্বব্যাংকের অভিযোগ নিয়ে যখন দেশের মিডিয়াগুলো ঝাঁপিয়ে পড়ল এবং দুর্নীতি দমন কমিশন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. মশিউর, মন্ত্রী আবুল হোসেন ও সচিব মোশাররফের ওপর সিংহ বিক্রমে ঝাঁপিয়ে পড়ল ঠিক তখন থেকেই আজকের ডলার সঙ্কটের বীজ রোপিত হলো। দেশীয় অর্থে পদ্মা সেতু নির্মাণের জিদ ও ব্যাপক দুর্নীতি এখন রাহুর মতো পুরো অর্থনীতিকে দেউলিয়া বানাতে বসেছে। একইভাবে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার বিষয়ে দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষকে উসকে দেয়া এবং দেশী-বিদেশী পুরস্কার-বাহবা পাওয়ার লোভের কারণে দেশীয় মিডিয়া ও শাসক দল যুগপৎভাবে যা করেছে তা কেবল অর্থনীতির বারোটা বাজায়নি; বরং আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা, সামাজিক সংহতি ও সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে।

উল্লিখিত মিডিয়া ট্রায়াল ছাড়াও আরো একটি মিডিয়া ট্রায়ালের বিস্তারিত কাহিনী আপনাদের না বলে পারছি না। আমি যার কথা বলব তার সাথে জীবনে আমার দেখা সাক্ষাৎ হয়নি। মিডিয়া মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নাম ও বদনাম প্রচারিত হওয়ার আগে আমি তার নামও শুনিনি। কিন্তু কয়েক দিন আগে একটি ঘরোয়া আড্ডায় ভদ্রলোক সম্পর্কে কিছু তথ্য জানার পর আমার মনে হয়েছে বিষয়টি নিয়ে কিছু লেখা অবশ্যক। আমি যার কথা বলছি তিনি আশির দশকে দেশ ছেড়েছিলেন সম্ভবত উনিশ-কুড়ি বছর বয়সে।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে আমাদের ভাইবোনেরা যে অমানবিক পরিশ্রম করেন এবং দিনের বেলায় প্রখর সূর্যতাপ ও রাতের হাড়কাঁপানো মরু শীতের মরণ কামড় উপেক্ষা করে দেশের অভাবী প্রিয়জনের মুখে দু’মুঠো অন্ন তুলে দেয়ার স্বপ্ন নিয়ে প্রবাসীদের নিরন্তর সংগ্রামীদের দলে নাম লেখানোর জন্য তিনিও বিদেশ পাড়ি দিয়েছিলেন।
স্বাধীনতার পর থেকে আজ অবধি কত বাংলাদেশী প্রবাসে গেছেন, ক’জন প্রবাসে মারা গেছেন, ক’জন দেশে ফিরেছেন ইত্যাদি পরিসংখ্যান আমরা জানি না। বিদেশী মুদ্রা পাঠিয়ে ফুটবাবুদের ফুটানি ও চোরবাবাদের বেগমপাড়ার শ্রীবৃদ্ধি ঘটাচ্ছেন। আমি যার কথা বলছি তিনি কেবল এই দেড় কোটি প্রবাসী বাংলাদেশী নন; বরং স্বাধীনতা-পরবর্তী সব প্রবাসী বাংলাদেশীর মধ্যে সফলতম ব্যক্তিত্ব। প্রবাসে তিনি যে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, শিল্প-কলকারখানা গড়ে তুলেছেন সেখানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের অন্তত কুড়ি হাজার লোক কাজ করেন এবং তার প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিটি মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম ধনী রাষ্ট্রের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রতিষ্ঠান।

কর্মজীবনে আমিও একজন ছোটখাটো ব্যবসায়ী। টাকা উপার্জন যে কত কষ্টের কঠিনতম সাধনা তা আমি খুব ভালো করে জানি। অন্য দিকে, শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা ও সেগুলো টিকিয়ে রাখা যে কত কঠিন তা কেবল ভুক্তভোগীরা বলতে পারবেন। ঘুষখোর আমলা, গৃহপালিত মিডিয়াকর্মী, বিবেকহীন বিচারক, রাজনীতিবিদ ও জনগণের পক্ষে সংগ্রামী মানুষের ইতিহাস অধ্যয়ন এবং মূল্যায়ন সম্ভব নয় বলেই আমি যার কথা বলছি সেই মানুষটি মজলুম হয়ে পড়েছেন। আমি সামাজিক মাধ্যম ঘেঁটে ভদ্রলোকের বদনামগুলো দেখার চেষ্টা করলাম। একটি ভিডিও ফুটেজে দেখলাম তাকে বলা হচ্ছে কুখ্যাত আদম বেপারি। আরেকটি ফুটেজে তার স্ত্রীর ছবি ও বক্তব্য প্রচারের সময় বলা হচ্ছে মহিলা হলেন আদম বেপারির স্ত্রী।

বিদেশের মাটিতে যিনি ২০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান করেছেন এবং হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন তিনি যদি বেগমপাড়ার দুর্নীতিবাজ চোর-ডাকাতদের মতো মন-মানসিকতাসম্পন্ন হতেন তবে বাংলাদেশে টাকা না পাঠিয়ে লন্ডন, আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াতে সহায়-সম্পত্তি ক্রয় এবং ব্যক্তিগত বিমান-ইয়ট ইত্যাদি কিনে বিলাসব্যসনে গা ভাসিয়ে দিতে পারতেন। কিন্তু তিনি দেশে এসেছেন, দেশে টাকা পাঠিয়েছেন এবং সম্পদ ক্রয়ের পাশাপাশি সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছেন। বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা বৈধ চ্যানেলে বাংলাদেশে পাঠানোর কারণে রাষ্ট্র তাকে সপরিবারে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক ব্যক্তিত্ব (CIP) স্বীকৃতি দেয়ার পর একই ব্যক্তির বিরুদ্ধে কিভাবে অর্থপাচারের অভিযোগ ওঠে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ের একজন শীর্ষ শিল্পপতি কিভাবে কুখ্যাত আদম বেপারিতে পরিণত হলেন তার নেপথ্য কাহিনী বলে আজকের নিবন্ধ শেষ করব।

আমি এতক্ষণ যার কথা বললাম তার নাম মো: শহিদ ইসলাম। ডাক নাম পাপুল। ২০১৮ সালের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লক্ষ্মীপুর-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। পরে সংরক্ষিত আসনে নিজের স্ত্রীকে এমপি বানিয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রচুর অর্থ ব্যয় করে তিনি এমপি নির্বাচনের ফলাফল নিজের পক্ষে এনেছিলেন। বর্তমানে তিনি কুয়েতের কারাগারে সাত বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন এবং সেখানে তার বিরুদ্ধে কুয়েত থেকে নিয়মবহির্ভূতভাবে বাংলাদেশে অর্থপাচার ও নিয়ম ভঙ্গ করে বাংলাদেশ থেকে কুয়েতে শ্রমিক আমদানি করেছেন। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন অভিযোগ এনেছে তিনি অবৈধভাবে উপার্জন করেছেন এবং দেশের অর্থপাচার করেছেন।

কুয়েতে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ এবং বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের অভিযোগ পরস্পরবিরোধী। কুয়েত সরকার তার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে, তিনি সেই দেশ থেকে বেআইনিভাবে মুদ্রা পাচার করেছেন। অন্য দিকে, দুদক বলছে, তিনি বাংলাদেশ থেকে অর্থপাচার করেছেন। অন্য দিকে, রাষ্ট্র বলছে, তিনি বৈধ চ্যানেলে কুয়েত থেকে সর্বাধিক রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। কাজেই ত্রিমুখী উল্টো তথ্যের নেপথ্য কারণ খুঁজতে গিয়ে জানতে পারলাম, তিনি ব্যবসায় করতে গিয়ে কুয়েতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির বিরোধের বলি হয়েছেন। সেখানকার রাজপরিবারের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য কুয়েত সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আরো কয়েকজন প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ পাপুলের ব্যবসায়িক অংশীদার। অন্য দিকে, কুয়েতের সংসদের স্পিকার যিনি কিনা রাজপরিবারের সদস্য এবং পাপুলের ব্যবসায়িক অংশীদার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেজর জেনারেল মাজেন আল জারাহর প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী ও শত্রু।

যে ঘটনা কেন্দ্র করে পাপুল জেলে, এর মূল কারণ কুয়েতের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সঙ্ঘাত, যেখানে পাপুলের কোম্পানির লেনদেন ও একটি ঘটনা নিয়ামক বা উদাহরণ কিংবা এভিডেন্স হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। পাপুলের কোম্পানি কুয়েতের বৃহত্তম নির্মাণ প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া তার আরেক কোম্পানি কুয়েত সেনাবাহিনীর বুট, টুপিসহ অন্যান্য পোশাকাদি দীর্ঘমেয়াদে প্রস্তুত ও সরবরাহ করে। তার কোম্পানি হঠাৎ করে বড় কয়েকটি কার্যাদেশ পায় যা সম্পন্ন করার জন্য অতিরিক্ত পাঁচ হাজার শ্রমিক জরুরি ভিত্তিতে নিয়োগের দরকার পড়ে যা কেবল বাংলাদেশ থেকেই সরবরাহ সম্ভব। অন্য দেশ থেকে শ্রমিক আমদানি সময়সাপেক্ষ ও ইচ্ছে করলেই রাতারাতি পাঁচ হাজার শ্রমিক আমদানি সম্ভব নয়।

জনাব পাপুল বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেয়ার ব্যাপারে কুয়েত সরকারের সাথে দেনদরবার শুরু করেন। কারণ বহুদিন ধরে কুয়েতে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক রফতানি নিষিদ্ধ ছিল। এই আদেশ তুলে নেয়ার জন্য পাপুলের কোম্পানি কুয়েতের বিভিন্ন সরকারি দফতরে মোটা অঙ্কের ঘুষ দেয়। ফলে বাংলাদেশ থেকে কুয়েতে শ্রমিক রফতানির দরজা খুলে যায়। পাপুল নিজের কোম্পানির জন্য পাঁচ হাজার শ্রমিক নেন কিন্তু তার কর্মতৎপরতার সুযোগে বিভিন্ন বাংলাদেশী কোম্পানি প্রায় দেড় লাখ শ্রমিক কুয়েতে পাঠাতে সক্ষম হয়। উল্লিখিত ঘটনার বহু বছর পর কুয়েতে বাংলাদেশের ওয়ান-ইলেভেনের মতো পরিস্থিতি দেখা দেয় আওয়ামী লীগ-বিএনপির মতো রাজনৈতিক বিরোধের জালে পাপুলের ব্যবসায়িক অংশীদার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেনারেল মাজেন গ্রেফতার হন। তাকে ফাঁসানোর জন্য তথ্য খুঁজতে গিয়ে যে অভিযোগ আনা হয় সেখানে পাপুল সাক্ষী ছিলেন। কিন্তু কুয়েতের রাজনৈতিক কূটচালে তিনি বিচার চলাকালীন সময়ে রায় ঘোষণার আগ মুহূর্তে আসামি হয়ে যান। জেনারেল মাজেনের সাথে তাকে চার বছরের জেল দেয়া হয় যা রাজনৈতিক মঞ্চের নেতাদের পছন্দ হয়নি। তাই আপিলে সাজা বাড়িয়ে সাত বছর করা হয়। আমাদের মিডিয়া এ ঘটনা অনেকটা কসাই কাদেরের আদলে প্রচার করতে থাকে।

লেখক : সাবেক সংসদ সদস্য


আরো সংবাদ



premium cement

সকল