২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

চীনা কমিউনিস্ট পার্টির নীতি ও মুসলিম বিশ্ব

চীনা কমিউনিস্ট পার্টির নীতি ও মুসলিম বিশ্ব - ছবি- সংগৃহীত

গত ১ জুলাই ঘটা করে শতবর্ষ উদযাপন করল চীনের কমিউনিস্ট পার্টি সিপিসি। ১৯২১ সালের ১ জুলাই সাংহাইতে কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়না প্রতিষ্ঠা লাভ করে। বিশ্বের অন্যতম পুরনো রাজনৈতিক দল এটি। বর্তমান সদস্য সংখ্যা ৮২ মিলিয়ন। রাজতন্ত্রের পাষণ্ডতা ও বর্বরতা, ধনতন্ত্র, পুঁজিবাদ, কলোনিতন্ত্রের উৎপাত, সে সময়ের ক্ষমতাসীন দল গুয়ামিন দং বা জাতীয়তাবাদী দলের অসহায় অবস্থার কারণে সিপিসি প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল। চীন বহু পুরনো সভ্যতা, অনেক রাজা চীনে বংশানুক্রমে রাজত্ব করেছেন। শেষ দুই শ’ বছরে বিদেশী আক্রমণকারীদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয় চীন।

আধুনিক সময়ে দেং জিয়াও পিং ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট শি জিং পিংয়ের আমলে কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়না আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধি করেছে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়িয়ে ‘ইকোনমিক শক্তি’তে পরিণত হয়েছে। শত বছরে সিপিসি অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ধাপে ধাপে অগ্রগতি করেছে। সোভিয়েত ইউনিয়নের ভেঙে পড়া, গর্ভাচেভের প্রশ্নবোধক নোবেল শান্তিপদক প্রাপ্তি, কমিউনিজম বা সোসিয়ালিজম বা মার্কসবাদের শুয়ে পড়া অবস্থাও চীনের উত্থানে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। পূর্ব ইউরোপেও অনেক কমিউনিস্ট পার্টি বা সোসিয়ালিস্ট পার্টি ভেঙে পড়েছে। মার্কসবাদের করুণ পরিণতি, খোদ রাশিয়ায় লেনিনের মূর্তি ও ভাস্কর্য ভেঙে ফেলায় মানুষের প্রতিবাদকে গণতান্ত্রিক পশ্চিমারা প্রচার করেছে এসব ‘ফালতু’ মতবাদ টিকে থাকে না। তবুও চীনের কমিউনিস্ট পার্টি খুব ভালো করতে লাগল, চীনকে বিশ্বের দ্বিতীয় ইকোনমিক ক্ষমতাধর শক্তিতে নিয়ে এলো। চীনের মহীরুহ হয়ে গড়ে ওঠায় সিপিসির ভূমিকা এখন আর কেউ অবমূল্যায়ন করতে পারছে না। চীনকে বিখণ্ডিত করার চেষ্টা করা হলেও রাশিয়া ও গর্ভাচেভের মতো কোনো অবস্থার সৃষ্টি হয়নি। অনেকে প্রশ্ন রাখবেন, চীনে মার্কসবাদের কী অবস্থা হলো! চীনের কমিউনিস্ট পার্টি ও রাশিয়ার কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে পার্থক্য কী? পার্থক্য তো অনেক, নেতৃত্ব, ব্যবস্থাপনা ও ইন্টিগ্রিটি ও ভিন্ন পটভূমি। রাশিয়া শিল্পপ্রধান সমাজব্যবস্থা, শ্রমিকরা শিল্প-কারখানায় পারদর্শী; লেনিন মাকর্সবাদকে রাশিয়ান শিল্পবিপ্লবের সাথে সহমর্মী করে তুলেছিলেন। অপর দিকে চীন কৃষিপ্রধান দেশ ও চীনা বিপ্লবের সাথে চাষি ও কৃষিসম্পদের সাথে যারা জড়িত তারা বেশি সংযুক্ত। মাও দে জুং নিজেই এক কৃষক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তিনি তার চিন্তাভাবনা ও মাকর্সবাদকে চীনা সমাজের সাথে সম্পৃক্ত করে তৈরি করেছিলেন। দেং জিয়াও পিং অর্থনৈতিক মতবাদ প্রতিষ্ঠা করে চীনকে বিশ্বে উন্মুক্ত করার প্রয়াস পান। প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং সিপিসিকে বর্তমান উদ্ভূত ভূরাজনৈতিক সমস্যার আলোকে ‘রিফর্ম’ করার প্রয়াস পান। প্রেসিডেন্ট শির চিন্তাভাবনাকে ‘সোসিয়ালিজমের চীনা চরিত্র’ বা চাইনিজ ভ্যারিয়েন্ট হিসেবেও অভিহিত করা হয়।

গত সাত দশক ধরে চীনে যারা নেতৃত্বে ছিলেন তাদের কাজে দেশ-বিদেশের কেউ প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করতে পারেনি। নেতৃত্বের কর্ণধাররা ছিলেন বিজ্ঞ-দেশপ্রেমী ও জনগণ ছিল পরিশ্রমী। বৈশ্বিক কোনো মতবাদ চীনে চাপিয়ে দেয়া সম্ভব হয়নি। চীনের মূল ভূখণ্ডে কোনো চাপ না পড়লেও অধুনা হংকং ও তাইওয়ান নিয়ে বিশ্বশক্তিরা অনেকে খেলছে। শতবর্ষ উদযাপনের উৎসব পালনকালে প্রেসিডেন্ট শি সাবধানবাণী উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘তাদের হাত গুড়িয়ে দেয়া হবে’। চীনকে চাপ দিয়ে নত করে রাখার দিন শেষ। চীনের উত্থানে বাধা দেয়ার দিনও ফুরিয়ে গেছে। চীন শুধু অর্থনীতির টাইফুনই নয়, সামরিক পরাশক্তিও।
সিপিসির ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, সিপিসি নিজের সুবিধা আদায়ের জন্য আত্মম্ভরি হয়নি বরং মানবসম্পদ উন্নয়ন ও শান্তির কাজও করেছে। প্রসঙ্গত, উইঘুরদের ব্যাপারে বিভিন্ন অভিযোগ এলেও হুইদের উন্নয়নের কথা কেউ বলে না। চীনে দু’টি বড় মুসলিম গোষ্ঠী রয়েছে। একটি হলো জিনজিয়াংয়ের উইঘুর এবং অপরটি হুই। চীনা জনসংখ্যার বিশাল সাগরে তারা স্রেফ কয়েক ফোঁটা পানির মতো। এক কোটি করে লোকসংখ্যা উভয় গোষ্ঠীর, আকারে তাইওয়ানের সমান। কিন্তু উইঘুরদের যখন পুলিশি চাপ সইতে হয় তখন হুইরা সমৃদ্ধ হচ্ছে, বিষয়টি ভেবে দেখার মতো।

সিপিসির আন্তর্জাতিক বিভাগের বড় কাজ কোনো আক্রমণ বা যুদ্ধ প্রতিহত করা, বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করা, আন্তঃরাষ্ট্র সম্পর্ক গভীরতর করা, দেশে ও বন্ধু দেশে আধুনিক অবকাঠামো নির্মাণ করা। ১৯৭০ সালে চীন রিফর্ম শুরু করে এবং চীনকে আন্তর্জাতিক অবস্থানে নিয়ে শক্তভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে শুরু করে। বলা যায়, মার্কসবাদে চীনা চরিত্র ঢুকতে থাকে। দেং জিয়াও পিংয়ের মতবাদগুলো কাজ করতে শুরু করে ও এসব মতবাদ প্রতিষ্ঠা করতে নীতিমালা তৈরি শুরু হয়। উল্লেøখ্য, মাও দে জুংয়ের সময়ের মতো লাল বই ছাপিয়ে তা বিলি বণ্টন করা হয়নি বরং পার্টি সভাগুলোকে কার্যকরী রূপ দেয়া হয় এবং কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করা হয়। শুধু বিদেশী কমিউনিস্টদের সাথে সংযোগ রক্ষা করা, শুধু কমিউনিস্ট শ্রমিক ও বামপন্থীদের সাথে বৈঠক-বন্ধনের নীতি সম্পূর্ণ পরিত্যাজ্য হয়। অন্য ঘরনার ও মতবাদের দল ও রাজনৈতিক নেতাদের সাথে আলাপ-আলোচনার দ্বার উন্ম্ক্তু করায় পারস্পরিক সম্পর্ক আরো উচ্চতায় অবস্থান করছে। সিপিসির সদস্যদের সবাইকে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একই কাতারে রাখার চেষ্টা করা হয়। দেশ পরিচালনায় যোগ্যতা সৃষ্টির পাশাপাশি অভিজ্ঞান অর্জনের সুবিধা দেয়া হয়। ‘গ্লোবাল ভিশন’ কেমন তার স্বচ্ছ ধারণা দেন সিপিসির পণ্ডিত নেতারা। সিপিসির রয়েছে নিজস্ব প্রশিক্ষণ ও গবেষণাকেন্দ্র। গ্লোবাল ভিশন সম্পর্কে সঠিক ধারণা নিতে পার্টি-পার্টি বৈঠকের ব্যবস্থা করা হয় যেখানে সামাজিক উন্নয়ন, সোসিয়ালিস্ট ভাবধারার পরিচর্যা ও কমিউনিস্ট পার্টি পরিচালনার কৌশলাদি শেখানো হয় ও সমসাময়িক অন্যান্য দেশের পার্টি পলিসিগুলো নিজেদের নীতিমালার সাথে তুলনামূলক মূল্যায়ন করা হয়; এই স্তর থেকে নিজেদের ভাবধারার আরো উন্নয়নের শিক্ষা উপকরণ সংগ্রহ করে সিপিসি। বর্তমান বিশ্ব রাজনীতি ছাড়াও, চারটি বিষয়- অর্থনীতি, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান ও টেকনোলজিও চর্চিত হয়। এতসব বিষয়ের চর্চায় সদস্যরা সমৃদ্ধ হয়, যা সরকার পরিচালনায় নীতিনির্ধারণে, কৌশল প্রণয়নে কাজে লাগে। বিদেশী রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পর্কোন্নয়নের জন্য সিপিসি স্টাডি ট্যুর করে, যদিও এটি সনাতন পদ্ধতি। প্রাদেশিক ও মিউনিসিপাল পার্টি নেতারা বিদেশ সফরের সময় গ্রামপর্যায়ের নেতাদের সাথে নিয়ে যান। দুই দেশের সহযোগিতামূলক প্রকল্প কিভাবে বাস্তবায়িত হয় তা হাতে-কলমে শেখা বা দেখার সুযোগ এসব সফরে থাকে। চীনা সরকারি প্রকল্পগুলোতেও বিদেশীদের সমানভাবে সফরের ও স্টাডির সুযোগ থাকে। পদ্ধতির সঠিক বাস্তবায়নের ফলে এসব প্রকল্প সন্তোষজনক পর্যায়ে রয়েছে।

বিশ্বে উন্মুক্ত হওয়ার পর চীন অনেক ঘাত-প্রতিঘাত সয়ে একটি স্থিতিশীল সমাজ গঠন করতে পেরেছে। এখন চীনের এই স্থিতিশীলতা আগের চেয়ে অনেক মজবুত। সিপিসির অভিজ্ঞতা অনেক শক্ত ভিতের ওপর প্রতিষ্ঠিত। অনেক বেশি বিদেশী রাজনৈতিক দল দ্রুত উন্নয়নের কৌশল জানার জন্য এখন চীনমুখী হয়েছে। পশ্চিমা উন্নত দেশের কিছু থিঙ্ক ট্যাঙ্কের সাথে চীনের সংযোগ রয়েছে যারা বিশ্বশান্তি ও উন্নয়নের জন্য ‘কমন গ্রাউন্ডস’ নিয়ে কাজ করতে চায়। বিশ্বায়ন মতবাদেও তাদের চিন্তাভাবনাকে চীন নিজের করে কাজে লাগাতে চায়। ফলে বিশ্বব্যাপী চীনের সাপোর্ট বেড়ে যেতে শুরু করেছে।

এ বছর চীনের নাগরিকরা বার্ষিক পরিকল্পনায় মন্তব্য করার সুবিধা পাচ্ছেন। স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে জনগণ সরকারি ওয়েবসাইটে এই সুযোগ গ্রহণ করতে পারছে। মন্তব্য, প্রস্তাবনা ও সমালোচনা করতে পারছে যা কমিউনিস্ট পার্টিতে এক ধরনের নিষিদ্ধ বস্তু। চীন গত কয়েক বছর ধরে জনগণের সরাসরি অংশগ্রহণমূলক প্রক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আসছে। সর্ব ক্ষেত্রে দেশ পরিচালনায় জনগণকে সম্পৃক্ত করতে চাচ্ছে। দেশের পলিসি তৈরিতে জনগণের কণ্ঠস্বরকে কতটুকু সংযুক্ত করা গেল সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। এই পদ্ধতি জনগণের বিচিত্র অভিজ্ঞতা ও প্রস্তাবনাকে সহজে ও দ্রুত বুঝতে সহায়তা করেছে। সরকারও নানা বিষয়ে স্টেকহোল্ডারদের সাথে সহজে সংলাপ করতে পারছে, এভাবে পরিকল্পনা প্রণয়নে ‘টু ওয়ে কমিউনিকেশন’ প্রতিষ্ঠা সিপিসির আরেক মাইলফলক সাফল্য বলে মনে করছেন বৈশ্বিক উন্নয়নবিদরা। অনেকে বলছেন, এতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াই প্রখরভাবে কাজ করছে।

একটি কথা আছে, জ্ঞানার্জনের জন্য প্রয়োজনে চীন যাও। কথাটি প্রমাণ করে যে, চীন বহু শত বছর আগ থেকেই মুসলিম বিশ্বে সভ্যতা, সমৃদ্ধি, জ্ঞান ও উন্নয়নের জন্য পরিচিত ছিল। পণ্ডিতরা বলছেন, মুসলিমবিদ্বেষী নীতির কারণে এবং উদ্দেশ্যপূর্ণ যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়ার কারণে মুসলিম বিশ্ব, পশ্চিমের পরিবর্তে পূর্বের কোনো শক্তিকে খুঁজে বেড়াচ্ছে। চীনও তেলসমৃদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যে, মধ্য এশিয়া ও আফ্রিকার সাথে সেতুবন্ধন করতে চলছে। চীনের এখন দরকার তেল ও বাণিজ্য সম্প্রসারণ। সৌদি আরব, ইরান, কুয়েত, ওমান ও কাতারের সাথে ‘কানেকটিভিটি’ বাড়ানো চীনের অগ্রাধিকার। সৌদি আরব চীনে বড় তেল রফতানিকারক। উভয় দেশের ট্রেড ভলিউম দুই বিলিয়ন থেকে বেড়ে ৪০ বিলিয়নে দাঁড়িয়েছে। চীনেরও সৌদি আরবে বিনিয়োগ রয়েছে। কুয়েত এ পর্যন্ত চীনকে ৮১০ মিলিয়ন লোন দিয়েছে বিভিন্ন প্রকল্পে। চীনে বন্যার সময় কুয়েত তিন মিলিয়ন ক্যাশ দিয়েছে। ‘ইনভেস্ট ইন চায়না’ প্রকল্পে কুয়েত চীনে পাঁচ বিলিয়ন ডলারের রিফাইনারি ও পেট্রোকেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি করেছে। আরব দেশগুলো ছাড়াও ইরান ও পাকিস্তানের সাথে চীনের বিশেষ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও বিভিন্ন চুক্তি রয়েছে। মধ্য এশিয়ার দেশগুলোকে চীন বেল্ট ও রোড প্রকল্পের আওতায় নিয়ে এসেছে। কাজাকিস্তানে চীন বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছে। উজবেকিস্তানে ৬০০ মিলিয়ন বিনিয়োগ হয়েছে। মালয়েশিয়া কনসোর্টিয়ামে চীন যোগদান করেছে এবং আরব সাগরে অনুসন্ধানে বিভিন্ন দেশের সাথে কাজ করছে। চীনে ইন্দোনেশিয়ার বিনিয়োগ, ইন্দোনেশিয়ায় চীনের বিনিয়োগের চাইতে ২০ গুণ বেশি। ৯৭০টি প্রকল্পে এই বিনিয়োগ বিদ্যমান। তুরস্ক চীন সম্পর্ক বিশেষ উচ্চতায় এখন। অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছাড়াও সামরিক সম্পর্কও মুসলিম দেশের সাথে বৃদ্ধি পেয়েছে। অস্ত্র কেনার জন্য মুসলিম দেশগুলো প্রথমে চীনের অস্ত্র বাজারে ঢোকে। পাকিস্তান, বাংলাদেশ, ইরান, কুয়েত ও সুদান এগিয়ে রয়েছে অস্ত্র কেনার তালিকায়। ১৯৬০ সাল থেকে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ চীন থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করে থাকে। সৌদি আরব, নাইজেরিয়া, নাইজার, গ্যাবন, মিসর, ইন্দোনেশিয়া, আমিরাত ও ইরাকও চীন থেকে অস্ত্র কেনে। পাকিস্তান ও চীন গত জানুয়ারিতে আরেক মহাপ্রকল্প শুরু করেছে। এটি কৃষি-শিল্প খাতের সহযোগিতা ও তথ্য আদান-প্রদান মহাপ্রকল্প। দুই দেশের ব্যবসায়-বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও সহযোগিতাও এর অন্তর্ভুক্ত। কোনো কোনো দেশ বলছে, আসলে এটি সামরিক তথ্য বিনিময় কেন্দ্র যেটি পার্শ্ববর্তী দেশের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হবে। চীন-পাকিস্তান কৃষি ও শিল্পসহায়তা এবং তথ্যভাণ্ডার গড়ে তোলার এই প্লাটফর্ম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ২০২১ সাল চীন-পাকিস্তান বন্ধুত্বের ৭০ বছর পূর্ণ হলো। তথ্যভাণ্ডার পরিপূর্ণ করা গেলে দুই দেশের ‘আরো’ উপকারে আসবে। দেখা যাচ্ছে, মুসলিম দেশগুলো পশ্চিমাদের পরিবর্তে চীনের দিকে ঝুঁকে পড়েছে বেশি।

শান্তি ও উন্নয়ন বর্তমান রাজনীতির ট্রেন্ড। বিভিন্ন দুর্যোগে আন্তর্জাতিক অবস্থা নাজুক হয়ে যেতে পারে। তবুও বিভিন্ন স্থানে চীনের উপস্থিতি ও কার্যক্রম খুব সফলতার সাথে এগিয়ে যাচ্ছে। এসব অশান্ত এলাকা থেকে বড় বড় রাজনৈতিক দলকে চীন সফরের ব্যবস্থা করা হয়, নেতাদের সাথে সংযোগ রাখা হয় অথবা চীনের সিপিসির ডেলিগেশন ওসব স্থানে পাঠানো হয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সিপিসির শততম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে চীনের জনগণ, প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংকে শুভেচ্ছা জানিয়ে পারস্পরিক স্বার্থে সহযোগিতা কামনা করেছেন।

লেখক : যুগ্ম সচিব ও গ্রন্থকার


আরো সংবাদ



premium cement
৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা শুরু দোয়ারাবাজারে পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীকে হত্যা : স্বামীর আমৃত্যু কারাদণ্ড গাজীপুরে ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রীর লাশ উদ্ধার ভারতে দ্বিতীয় পর্বে ৮৮ আসনে ভোট খালেদা জিয়ার সাথে মির্জা ফখরুলের ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ অব্যাহত পাবনায় ১০ কোটি টাকার অনিয়মে ৩ ব্যাংক কর্মকর্তা আটক জীবন্ত মানুষকে গণকবর আগ্রাসন ও যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান মার্কিন মানবাধিকার প্রতিবেদনে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৃষ্টির জন্য সারা দেশে ইসতিস্কার নামাজ আদায়

সকল