০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`


এবার প্রিমিয়ারে খেলবেই ইয়ংমেন্স

-

একে একে ক্লাবের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা ফুল নিয়ে আসছিলেন ক্লাবে। সেই ফুলের তোড়া উপহার দেয়া হচ্ছিল ক্লাব সভাপতি আনোয়ার হোসেন মাখনের হাতে। এই ফুলেল অভিনন্দনের নেপথ্য পরশু পিডব্লিউডি ক্লাবকে ২-১ গোলে হারিয়ে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে (বিসিএল) শিরোপা জিতেছে ইয়ংমেন্স ক্লাব ফকিরেরপুল; যা তাদের আগামী বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে খেলার ছাড়পত্র পাইয়ে দিয়েছে। এই বিসিএলে চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা নতুন কিছু নয় মতিঝিল ক্লাব পাড়ার এই দলটির। ২০১৫-১৬ সিজনেরও বাফুফের পেশাদার লিগের সেকেন্ড টায়ারের ট্রফি ঘরে তুলেছিল। কিন্তু সেবার তারা আর্থিক সঙ্কটে খেলা হয়নি বিপিএলে। তবে আগামী বিপিএলে খেলবে ক্লাবটি। তা জোর দিয়েই বললেন ক্লাবের বর্তমান সভাপতি মাখন। অবশ্যই দৃঢ়তার সাথে শঙ্কাও আছে ১৯৮৪ সাল থেকে ক্লাবের এই সঙ্গীর। জানান, বিপিএলে কোনো মতে টিকে থাকার দল গড়তে তিন-চার কোটি টাকা তো লাগবেই। কিভাবে সেই টাকা জোগাড় করব সেই টেনশনও কাজ করছে।
২০২২ সালে ইয়ংমেন্সের সভাপতি হন মাখন। এরপর গত বিসিএলে দল সেভাবে ভালো করতে পারেনি। এবারো দলটির শুরুটা ছিল হতাশাজনক। প্রথম দুই ম্যাচে হার। পরের তিন ম্যাচের একটি করে হার, ড্র ও জয় অর্থাৎ প্রথম পর্বের ৫ রাউন্ড শেষে রেলিগেশন শঙ্কায় ক্লাবটি। সেই ক্লাবই কোচ ইমতিয়াজ খান লাবুর অধীনে ষষ্ঠ ম্যাচ থেকে আর কোনো ম্যাচে হারেনি। ফিরতি পর্বে ৭ ম্যাচের মাত্র দু’টিতে ড্র। ফলে এক সময়ের নতুন খেলোয়াড় তৈরির কারখানা এই ক্লাবটিতে এখন উৎসবের আমেজ। উল্লেখ্য, ২০১৫-১৬ সিজনেও দলকে চ্যাম্পিয়ন করান কোচ ইমতিয়াজ লাবু।
সভাপতি মাখন জানান, আমাদের এবারের দল গড়তে ৭০ লাখ টাকার মতো বাজেট লেগেছে। এই দলের সাফল্য পাওয়ার নেপথ্য, ‘আমার আমাদের টেকনিক্যাল লোকদের দিয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগের সব খেলা দেখে ফুটবলার বাছাই করেছি। বিভিন্ন জেলা থেকে আনকোরা ফুটবলার এনেছি। যেমন স্ট্রাইকার রাফায়েল। আগে সে ছিল গোলরক্ষক। আমরা তাকে স্ট্রাইকার পজিশনে খেলিয়েছি। সে ১৩ গোল করেছে। ক্লাবের অনুশীলনে প্রতিদিন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন; যা ফুটবলারদের উৎসাহিত করেছে মাঠে ভালো পারফর্ম করতে।’ যোগ করেন, বিসিএলের ক্লাবগুলোর মধ্যে আমরাই সবার আগে অনুশীলন শুরু করি। এ জন্য আমাদের বাড়তি ১২ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে।
যে ক্লাব গত কয়েক বছরে কোনোভাবেই প্রিমিয়ারে ওঠার জন্য খেলত না তারা কিভাবে এবার মত পাল্টালো। মাখনের বক্তব্য, ‘সবাই খালি বলাবলি করে ইয়ংমেন্স প্রিমিয়ারে ওঠার বা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য খেলে না। নিয়মরক্ষার জন্যই বিসিএল খেলে। এই সমালোচনা দূর করতেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি টিম ভালো করলে চ্যাম্পিয়ন ফাইটই দেবো। আল্লাহর রহমতে শেষ পর্যন্ত শিরোপা ঘরে নিয়ে এসেছি। এখন আমরা এক বছরের জন্য হলেও প্রিমিয়ারে খেলব। যদিও জানি না টাকাটা কোথা থেকে আসবে।’ প্রিমিয়ারে দল গড়তে এখন সবার সহযোগিতা চান তিনি।
অবশ্য অনেক জেরই টানতে হচ্ছে ক্লাবের বর্তমান কমিটিকে। ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিতে মতিঝিলের বিভিন্ন ক্লাবে সাথে এই ক্লাবও বন্ধ ছিল কয়েক বছর। এই বন্ধ থাকার সময় ক্লাব ভবনের বহু কিছুই চুরি হয়ে গেছে। ক্লাবটি বেশ কয়েকবারই প্রথম বিভাগ থেকে চ্যাম্পিয়ন বা রানার্সআপ হয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে উঠেছিল। সেই ট্রফি গুলোর সাথে ছিল আরো অন্যান্য ট্রফি। সব খোয়া গেছে। এমনকি ক্লাব ভবনের জানালার গ্রিল পর্যন্ত চোরদের দখলে। ঘুরে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়ায় পুরো ভবনকেই আধুনিক করতে হবে। সভাপতির মতে, ‘আমরা বিপিএলে খেললে ক্লাবেই ফুটবলারদের আবাসনের ব্যবস্থা করব। এ জন্য আরো টাকা দরকার। ভাড়া বাড়িতে আর খেলোয়াড়দের রাখব না।’ এবারের চ্যাম্পিয়ন দলকে বোনাস দেয়ার কথা বললেও তা উল্লেখ না করে জানান, আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী বোনাস দেবো।


আরো সংবাদ



premium cement