০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ভারত মহাসাগরের নিচে গর্ত, মাধ্যাকর্ষণের টানে কি বসে যাচ্ছে সমুদ্র

ভারত মহাসাগরের নিচে গর্ত, মাধ্যাকর্ষণের টানে কি বসে যাচ্ছে সমুদ্র। - ছবি : সংগৃহীত

ভারত মহাসাগরের নিচে বিশাল গর্ত। সমুদ্রের মেঝেতে অনেকটা এলাকা জুড়ে তার বিস্তৃতি। দীর্ঘ দিন ধরেই এই গর্তটি বিজ্ঞানীদের কৌতূহলের কেন্দ্রে।

শ্রীলঙ্কার ঠিক দক্ষিণে ভারত মহাসাগরের নিচে ওই গর্তটিকে ‘গ্র্যাভিটি হোল’ বা মাধ্যাকর্ষণজাত গর্ত বলা হয়ে থাকে। পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ টানের কারণে গর্তটি তৈরি হয়েছে বলে দাবি বিজ্ঞানীদের।

ভারত মহাসাগরের গ্র্যাভিটি হোলের বিস্তৃতি বিশাল। প্রায় ৩০ লাখ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ওই গর্তটি তৈরি হয়েছে। সমুদ্রের সবচেয়ে নিচের স্তরটির চেয়েও এই অঞ্চলটি গভীর।

গর্তটিকে ঘিরে রহস্যের গন্ধ পাচ্ছে অনেকেই। সমুদ্রের নিচে বিশাল অংশ জুড়ে ওই গর্তের কারণে অনেকের ধারণা, সমুদ্রের তলদেশ হয়ত নিচের দিকে বসে যাচ্ছে।

ওই গর্ত থেকে আগামী দিনে পৃথিবীর উপরিভাগের কোনো ক্ষতি হতে পারে কি-না, বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে ওই গর্তের কোনো সম্পর্ক আছে কি-না, তা নিয়েও জল্পনা তৈরি হয়েছিল।

পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্বল মহাকর্ষ বলের টানে সমুদ্রতলের কোনো অংশ নিচের দিকে বসে গেলে গ্র্যাভিটি হোলের সৃষ্টি হয়। ভারত মহাসাগরের নিচেও তা হয়েছে।

কেন ভারত মহাসাগরের নিচে এই বিশাল গর্ত তৈরি হল, তার সম্ভাব্য কারণ আবিষ্কার করেছেন দুই ভারতীয় বিজ্ঞানী। তারা বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সের গবেষক দেবাঞ্জন পাল এবং আত্রেয়ী ঘোষ।

‘জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটারস‌’ নামক জার্নালে দেবাঞ্জন ও আত্রেয়ীর গবেষণামূলক তত্ত্ব প্রকাশিত হয়েছে। কেন ভারত মহাসাগরের মাঝে ‘গ্র্যাভিটি হোল’ তৈরি হলো, তা ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন তারা।

গবেষকদের দাবি, পৃথিবীর আকার একটি নিখুঁত গোলকের মতো বলে মনে করা হলেও আসলে পৃথিবী তেমন নয়। পৃথিবীপৃষ্ঠ কোথাও উঁচু, কোথাও নিচু, কোনো অংশ একটু বেশি সমতল।

ভারত মহাসাগরে তৈরি ‘গ্র্যাভিটি হোল’ আক্ষরিক অর্থে তেমন ‘গর্ত’ নয়, যা সমুদ্রের পানি কমিয়ে দেয় বা শুষে নেয়। বরং এটি ভূত্বকের একটি অসঙ্গতিপূর্ণ স্থান, যেখানে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ টান অপেক্ষাকৃত দুর্বল।

গবেষকেরা কম্পিউটার মডেলের মাধ্যমে পৃথিবীপৃষ্ঠটিকে বিশ্লেষণ করেছেন। মাধ্যাকর্ষণজাত এই গর্তকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন তারা।

১৪ কোটি বছর ধরে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভূপ্রকৃতিগত পরিবর্তন বিবেচনা করে দেখেছেন বিজ্ঞানীরা। তাদের দাবি, এই গ্র্যাভিটি হোলের কারণে পৃথিবীর মহাদেশীয় এবং মহাসাগরীয় পাতগুলো বেশ কিছুটা সরে গেছে।

ভারত মহাসাগরের কেন্দ্রস্থলে দুর্বল মাধ্যাকর্ষ টানের কারণ হিসেবে ভূত্বকের নিচে পৃথিবীর ম্যান্টেল স্তরের গলিত ম্যাগমাকে দায়ী করা হচ্ছে। ওই ম্যাগমাই দু’কোটি বছর আগে পৃথিবীর আকৃতি গড়ে দিয়েছিল।

ভূত্বকের নিচ দিয়ে দু’কোটি বছর ধরে বয়ে চলেছে ওই তরল তপ্ত ম্যাগমা। বিজ্ঞানীদের ধারণা, ম্যাগমার স্রোত যদি কখনো থমকে যায়, ভারত মহাসাগরের তলদেশে তৈরি হওয়া গর্তটিও মিলিয়ে যাবে।

বাইরে থেকে দেখে ভারত মহাসাগরের তলদেশে গর্তের উপস্থিতি বুঝা সম্ভব নয়। তবে ওই গ্র্যাভিটি হোল নিয়ে আরো বিস্তারিত গবেষণা চলছে। আগামী দিনে এ বিষয়ে আরো নতুন তথ্য, নতুন ভাবনা উঠে আসতে পারে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা


আরো সংবাদ



premium cement
কালিয়াকৈরে ট্রাকের পেছনে পিকআপভ্যানের ধাক্কায় নিহত ২ স্বপ্ন জয়ের লক্ষ্যে জবিতে পরীক্ষা দিলেন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ৯ শিক্ষার্থী ইউরোপ ‘ত্রিমুখী ঝুঁকির’ সম্মুখীন : ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সরকারকে চাপে ফেলতে বিএনপি নিজেরাই চাপে আছে : ওবায়দুল কাদের রাজবাড়ীতে বাস-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে আহত ১০ ডুয়েট শিক্ষার্থী-পরিবহন শ্রমিক সংঘর্ষ, ঢাকা-গাজীপুর বাস চলাচল বন্ধ রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে পাহাড় ধসে বন্ধ সড়ক যোগাযোগ বিকেএসপিতে সাকিব ঝড়, অবসান ৫ বছরের অপেক্ষা গলাচিপায় একই পরিবারের ৪ জনের দাফন সম্পন্ন গলাচিপায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে শিশুর মৃত্যু ৪ বিভাগের বিভিন্ন জায়গায় হতে পারে বৃষ্টি

সকল